৪১ বছর ধরে চলমান ফ্রি ক্লাস
চীনের ছিং তাও শহরের ওয়ার্কার্স কালচারাল প্যালেসে রয়েছে এমন একটি ক্লাস, যা প্রতি সপ্তাহে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়। ঝড়বৃষ্টি যাই হোক না কেন, এ ক্লাস টানা ৪১ বছর ধরে স্থায়ী হয়েছে। এ ক্লাসের নাম ‘সপ্তাহে একটি বক্তব্য’।
চীনজুড়ে সবচেয়ে দীর্ঘসময় ধরে চালু থাকা জনকল্যাণমূলক ক্লাস হিসেবে ‘সপ্তাহে একটি বক্তব্য’ ক্লাসটি কোনো সীমাবদ্ধতা নেই। বক্তব্য রাখার বিষয়ও সীমিত নয়। এতে পরীক্ষা নেই, সার্টিফিকেটও পাওয়া যায় না। কোন জটিল শিক্ষার সূচক নেই, কেবল আছে বিশুদ্ধতম জ্ঞান ভাগাভাগি। এ ক্লাস একটি বাতিঘরের মতো মানুষের আধ্যাত্মিক জগতকে আলোকিত করে এবং সাংস্কৃতিক জ্ঞান ও পুষ্টি নিয়ে আসে। যারা ৪১ বছর ধরে এই চিরন্তন বাতিঘর জ্বালিয়েছেন তারা হলেন স্থায়ী লেকচারার, যারা অর্ধেক জীবন ধরে শিক্ষকতা করেছেন এবং অনুগত শ্রোতারা, যারা আরো বহু বছর ধরে ক্লাস নেওয়ার জন্য অবিচল রয়েছেন। তা ছাড়া আরও রয়েছেন কর্মচারীরা, যারা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে সেবা দিয়ে আসছেন। তারা বলেন, জ্ঞানের হস্তান্তর বন্ধ করা যাবে না এবং এই ক্লাস চালাতেই হবে। আজকের জীবন কথা অনুষ্ঠানে আমরা শুনবো এ ক্লাসের গল্প।
প্রতি সোমবার সন্ধ্যা নয়টায় চীনের ছিং তাও শহরের ওয়ার্কার্স কালচারাল প্যালেসে ‘সপ্তাহে একটি বক্তব্য’ সময়ের মতো অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৮৩ সালে অল-চায়না ফেডারেশন অফ ট্রেড ইউনিয়ন ‘পুনরুজ্জীবিত চাইনিজ রিডিং ক্যাম্পেইন’ শুরু করেছিল। এই আহ্বানে ছিং তাও ওয়ার্কার্স কালচারাল প্যালেস ‘জ্ঞান হলো শক্তি’ শীর্ষক ‘সপ্তাহে একটি বক্তব্য’ ক্লাস চালু করেছিল।
সেই সময়ে দর্শকদের কাছে অনন্য জ্ঞান ভাগ করে নেওয়ার জন্য ওয়ার্কার্স কালচারাল প্যালেসের কর্মীরা মনোযোগ দিয়ে ভেবেছিলেন।
সেই যুগে মানুষের তথ্যে সীমিত প্রবেশাধিকার ছিল। তাই রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা, ইতিহাস, দর্শন ইত্যাদির অন্তর্ভুক্তি সর্বব্যাপী ‘সপ্তাহে একটি বক্তব্য’ ক্লাসটি তাত্ক্ষণিকভাবে ভাইরাল ছিল। সেই বছরের দিকে ফিরে তাকালে ৬৩ বছর বয়সী চৌ সুয়ে উ’র এখনও তরতাজা সেই স্মৃতি মনে পড়ে।