মেড ইন চায়না বিষয়: কাগজ
তুঁতের বাকল থেকে তৈরি কাগজ টিকে থাকতে পারে হাজার বছর। আর তাই সেই হান আমলে তৈরি তুঁতগাছের কাগজ কিন্তু এখনও টিকে আছে।
চীনে আছে চায়না হান পেপার রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট সেন্টার। সেন্টারটির পরিচালক কং বিন জানালেন, আগের যুগের কাগজ তৈরির প্রক্রিয়াটি মোটেও সহজ ছিল না। কঠোর পরিশ্রম বললেও কম হয়ে যাবে। প্রায় ৭০টি ধাপ পেরিয়ে তৈরি করতে হতো এক একটি হান পেপার।
অনুষ্ঠানের এই ফাঁকে আমরা জানবো কাগজ নিয়ে মজার কিছু তথ্য
কাগজ যে শুধু গাছ দিয়েই তৈরি হবে তা নয়। চীনের ছাই লুন প্রথম যে কাগজ তৈরি করেছিলেন সেটা তৈরিতে তি নি পুরনো কাপড়ও ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি এখনও কিছু কাগজ তৈরি হয় কাপড় থেকে। বিশেষ করে কাগজের ব্যাংকনোট কিন্তু ছাপা হয় তুলার ফাইবার থেকে। যা সাধারণ কাগজের চেয়ে বেশি টেকসই।
অষ্টম শতকের দিকে চীনের কাগজ তৈরির প্রক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে বাদবাকি বিশ্বে। আগে এ পদ্ধতি শিখে নেয় ইসলামিক দেশগুলো। ১১ শতকের দিকে চীনের কাছ থেকে কাগজ বানানো শেখে ইউরোপ।
১৩ শতকের দিকে চীনের দেখানো ফর্মুলায় পেপার মিল তৈরি হয় স্পেনে। ১৯ শতকের দিকে কাঠের মণ্ড দিয়ে কাগজ বানানো শুরু করে ইউরোপের কিছু দেশ।
এবার আসা যাক চীনের বিখ্যাত রাইস পেপারের প্রসঙ্গে।
দেড় হাজার বছর আগে এক নতুন ধরনের কাগজ নিয়ে আসেন চীনের বিজ্ঞানীরা। ওই কাগজের নাম সুয়ান কাগজ। এর আরেক নাম রাইস পেপার। চীনের প্রাচীন অনেক নথি ও শিল্পকর্মে এ কাগজের ব্যবহার দেখা গেছে। পূর্ব চীনের আনহুই প্রদেশের সুয়ানছেং শহরে প্রথম তৈরি হয় এ কাগজ। এখনও এ কাগজের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে অঞ্জলটি। ২০১২ সাল জুনে এই সুয়ান পেপারকে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয় ইউনেস্কো।
সুয়ান কাগজকে রাইস পেপার ডাকা হলেও এ কাগজে মূলত ধানের সরাসরি ব্যবহার হয় না। অন্যান্য গাছের বাকলের পাশাপাশি এ কাগজের মণ্ড তৈরিতে কিছুটা ধানগাছের খড় ব্যবহার করা হয়। সুয়ান কাগজ তৈরিতে দুই বছরের পুরনো গাছের কাণ্ড থেকে বাকল সংগ্রহ করা হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বিশুদ্ধ পানির ব্যবহার ও ঐতিহ্যবাহী প্রক্রিয়ার অনুসরণ।