বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথে ছোট্ট পাহাড়ী গ্রাম
ঊনআশি বছর বয়সী গ্রামবাসী মাও তোং ফু বলেন, ‘সব ডিম একটি বাক্সে রাখা যায় না। চায়ের পাতার দাম উঠানামা করে। তাই বিভিন্ন প্রজাতির চা চাষ করতে হয়।” বর্তমানে মাও চিয়া পিং গ্রামে চাষাবাদ দুটি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে: একটি হলো আবাদি জমির অপ্রতুলতা এবং আরেকটি হলো তরুণ কর্মীর অভাব।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে গ্রামের অনেক তরুণ অন্য স্থানে শ্রম দিতে যান। মাও চিয়া পিং গ্রামে ৫০০জন অধিবাসী ছিলেন। এখন মাত্র ২০০জন অধিবাসী স্থায়ীভাবে বাস করছেন। যারা চত্ত্বরে সমবেত হয়েছেন, তাদের অধিকাংশই প্রবীণ।
মাও চিয়া পিং গ্রামের জমি উর্বর নয়। তাই গাছে সহজে ফল ধরে না। তবে ক্যামেলিয়া অলিফেরা গাছ খরা-সহনীয়। তাই বেশি যত্ন নেওয়ার দরকার হয় না।
২০১৯ সালে মাও চিয়া পিং গ্রামে ১৫ দশমিক ৩ হেক্টর জমিতে ক্যামেলিয়া অলিফেরা চাষের মধ্য দিয়ে এ ফসল চাষের গোড়াপত্তন হয়। বর্তমানে সে সব চারা মানুষের উচ্চতার অর্ধেক হয়ে উঠেছে। পতিত জমিতে সবুজ ছড়িয়ে পড়ছে। পাহাড়ের পাদদেশে একটি নতুন ক্যামেলিয়া অলিফেরা কারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ভবিষ্যতে এখানে ক্যামেলিয়া অলিফেরা তেল তৈরি করে পাহাড়ের বাইরে পাঠানো হবে।
চীনের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিসির মাও চিয়া পিং গ্রাম কমিটির সম্পাদক ছেন ইয়ু পিং একটি হিসাব দেন। চারা লালনে মু প্রতি (০.০৬ হেক্টরে) খরচ দাঁড়ায় ১ হাজার ইউয়ানে। ক্যামেলিয়া অলিফেরা তেল উত্পাদিত হলে ৪ হাজার ইউয়ান উপার্জন করা সম্ভব হবে। প্রথম কিস্তির চারা আগামী বছর ফল ধরা শুরু করার পর প্রতি বছর গ্রামে ৮ লাখ ইউয়ান উপার্জন করা সম্ভব হবে। ভবিষ্যতে উত্পাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাস্ক ও শাওয়ার জেলসহ নানা পণ্য তৈরি করা যাবে, যার ফলে উপার্জন আরও কয়েক গুণ বাড়বে।
ছেন ইয়ু পিং বলেন, ‘গ্রাম কর্তৃপক্ষের অর্থে গ্রামবাসীদের অনেক কাজ সম্পন্ন করতে হবে। ভবিষ্যতে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামের সামষ্টিক অর্থনীতি অনেক উন্নত হবে। ফলে আমরা গ্রামবাসীদের জন্য আরও বেশি কিছু করতে পারছি।”
পাহাড় তো আগের পাহাড়, জমিও আগের জমি। তবে পাহাড়কে নির্ভর করে জীবনে উন্নতির পদ্ধতি বের করতে হবে। গ্রামকে পুনরুজ্জীবিত করতে চাইলে শিল্পের ওপর নির্ভর করতে হয়। শিল্প উন্নয়নে প্রকল্পকে প্রাধান্য দিতে হয়। গ্রাম কমিটির উচিত নেতৃস্থানীয় ভূমিকা পালন করে পতিত জমি ও বনসম্পদকে এক করে আকারভিত্তিক পরিচালনার ব্যবস্থা করা, যাতে গ্রামে শ্রমশক্তির অভাব দূর করার পাশাপাশি বাজারে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষমতা বৃদ্ধি করা যায়।
নতুন বছরে মাও চিয়া পিং গ্রামবাসীরা অপার আশার আলো দেখছেন।