এসব প্রাচীন জিনিস আমাদের চীনা জনগণকে দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত করে: খো সিন ফেং
“দূরের বন্ধুদের সাথে দেখা করা আনন্দের।” এটি কনফুসিয়াসের ‘দি অ্যানালেক্টস’ গ্রন্থ থেকে নেওয়া একটি লাইন। এটি আড়াই হাজার বছরের পুরানো একটি চিরায়ত সাহিত্যকর্ম, যাতে চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াস ও তার শিষ্যদের কথা ও কাজকে গ্রন্থিত করা হয়েছে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, কেউ চীনা সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচিত হলে, অবশ্যই তিনি ‘দি অ্যানালেক্টস’ সম্পর্কে কিছু না কিছু জানেন।
চীনের শান তোং প্রদেশের কুফু কনফুসিয়াস ও কনফুসিয়ান সংস্কৃতির জন্মস্থান। এখানকার সকল দর্শনার্থী কনফুসিয়াসের দর্শনের চিহ্ন খুঁজে পেতে পছন্দ করে। অধ্যাপক খোং সিন ফেং কনফুসিয়াসের ৭৬তম বংশধর, যিনি চীনের মিনজু বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কসবাদী স্কুলের পরিচালক।
কনফুসিয়াস কেমন মানুষ ছিলেন এবং চীনা সভ্যতাকে এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে তার ভূমিকা কী? কনফুসিয়াসের ৭৬তম বংশধর হিসেবে এসব প্রশ্নের উত্তরে নিজের মতামতা প্রকাশ করেছেন খোং সিন ফেং।
আমার জন্য কনফুসিয়াস কেবল চীনা সভ্যতার অগ্রদূত ছিলেন না, রক্তের আত্মীয়তার পূর্বপুরুষও ছিলেন। আমি মনে করি, কনফুসিয়াস ছিলেন আমাদের চীনা জনগণের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ শিক্ষক। আমরা তাঁকে দশ হাজারের অধিক শিক্ষকের দৃষ্টান্ত বলে ডাকতাম। চীনারা আজ মনে করে, আমাদের আচরণ কনফুসিয়াসের শিক্ষা দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত। যেমন, গুণ দ্বারা রাষ্ট্র পরিচালনা, অবিরাম আত্ম-উন্নয়নের চেষ্টা করা ইত্যাদি। এসব প্রাচীন জিনিস আমাদের চীনা জনগণকে দৃঢ়ভাবে প্রভাবিত করে বলে আমি মনে করি।
চীনা সভ্যতার ইতিহাস ৫ হাজার বছরের। এটি বিশ্ব সভ্যতার বনে একটি উজ্জ্বল ফল। চীনা সভ্যতার ধারাবাহিকতা সম্পর্কে অধ্যপক খো তার মতামত জানান।
আমরা যখন চপস্টিক ব্যবহার করি, তখন আমাদের অনেক শিষ্টাচার মেনে চলতে হয়, যা অতীত থেকে এ পর্যন্ত জীবনের ক্রমবর্ধমান করণীয় ও করণীয় সম্পর্কিত। প্রবীণদের সামনে তাদের থেকে আগে চপস্টিক ব্যবহার করে খাওয়া যাবে না। চপস্টিকটি খাবার প্লেটে বাড়ি মারা যাবে না। চীনা ভাষায় এ সামাজিক রীতিকে আমরা ‘ফেং সু’ বলি। আমি মনে করি, এটি একটি খুব সাধারণ চীনা শিষ্টাচার। এটি নৈতিকতা গঠনে ভুমিকা পালন করে। দেশ পরিচালনার সময় এটিকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসাবে নিতে হবে। কারণ প্রথা ও রাজনীতির মধ্যে খুব শক্ত যোগসূত্র রয়েছে। প্রথা যথেষ্ট ভালো না হলে, ভালো সামাজিক ব্যবস্থা ও আইন থাকলেও কোনও কাজে আসবে না বলে আমি মনে করি।