ট্রেনের ছবি তোলা ফটোগ্রাফার লিয়াং উই চিয়ে
যারা লিয়াং উই চিয়ে’র বাড়িতে গেছেন- তারা মুগ্ধ হয়েছেন যে এটি বাড়ি নয়, বরং একটি জাদুঘরের মতো। ছয় সেট লোহার ক্যাবিনেটে ফটোগ্রাফিক সরঞ্জাম আছে। ফিল্ম এবং সিডি ইত্যাদিতে ভরা, যা তিনি একবার ব্যবহার করেছিলেন।
বসন্ত উৎসব কাটাতে নিজের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কারণে লিয়াং উইচিয়ে ট্রেনের শুটিং শুরু করেছিলেন। তার জন্মস্থান লিও নিং প্রদেশের ছাও ইয়াং শহরের নিউহেলিয়াং ধ্বংসাবশেষের কাছে। খাড়া ঢাল এবং বক্রতার কারণে এখানে যেতে বুস্টার ট্রেনের প্রয়োজন হয়। তাই একটি ট্রেনের সাহায্যে আরেকটি ট্রেনের আরোহণের অদ্ভুত দৃশ্য দেখা যায়। অনেক বিদেশী আকৃষ্ট হয়ে ট্রেনের ছবি তুলতে এখানে এসেছেন।
‘আমাদের ট্রেনের ছবি তোলার জন্য বিদেশীরা হাজার হাজার মাইল পারি দিয়ে চীনে এসেছেন, আমরা কেন এই ভালো বিষয় নিজেরা রেকর্ড করি না? এরপর থেকে লিয়াং উইচিয়ে ট্রেনের ছবি তোলা শুরু করেন।
লিয়াং উইচিয়ে’র মনে আছে যে তিনি যখন প্রথমবার একটি বাষ্পীয় লোকোমোটিভের শুটিং করছিলেন, তখন প্রস্তুতির অভাবে তিনি একটি বন্য পাহাড়ে আটকা পড়েছিলেন। অসহায় লিয়াং উইচিয়ে বুঝতে পারছিলেন না কোথায় যাবেন। তিনি কেবল পাহাড়ের পাদদেশের আলোগুলোকে অনুসরণ করেন এবং সামনের দিকে এগিয়ে চলেন। একজন দয়ালু লোকের সাহায্যে তিনি প্রথম শুটিং শেষ করেছিলেন।
সেরা শুটিং দৃষ্টিকোণ খুঁজে পেতে লিয়াং উইচিয়ের কাছে গাছে বা দেয়ালে আরোহণ করা সাধারণ ব্যাপার। কখনও কখনও লিয়াং উইচিয়ে একটি ভাল শট নেওয়ার জন্য প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। শুটিংয়ের আরও সুবিধার জন্য লিয়াং উইচিয়ে পরে একটি স্কুটার গাড়ি কিনেছেন এবং তার সরঞ্জামগুলো আরও সম্পূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সময়ের বিকাশের সাথে সাথে রেলওয়ে, খনির এলাকায় এবং কারখানায় বাষ্পীয় ইঞ্জিনযুক্ত ট্রেন ধীরে ধীরে ইতিহাসের মঞ্চ থেকে সরে গেছে। লিয়াং উইচিয়ে’র লেন্সে বাষ্পীয় লোকোমোটিভগুলো সেই সময়ের সমস্ত প্রতিনিধিত্বকারী মডেল। তিনি লেন্স দিয়ে ইতিহাস রেকর্ড করেছেন; তাদের অনেক দৃশ্য এখন দেখা কঠিন।
সময়ের চাকা এগিয়ে যাচ্ছে এবং রেলওয়ের উন্নয়নও দিন দিন বদলে যাচ্ছে। ট্রেনের মডেল এবং রুটগুলো ক্রমাগত অপ্টিমাইজ এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দ্রুত বিকাশের সাথে বাষ্প ইঞ্জিনের যুগের পরে লিয়াং উইচিয়ের ক্যামেরা রেলওয়ে’র ডিজেল লোকোমোটিভ এবং বৈদ্যুতিক লোকোমোটিভগুলোতে ফোকাস করতে থাকে।
লিয়াং উইচিয়ে বলেন, তাকে যা সবচেয়ে বেশি সুখী করে তোলে- তা হলো তিনি নিজেই এই উন্নয়ন প্রক্রিয়ার একজন সুবিধাভোগী, অংশগ্রহণকারী এবং সাক্ষী।