চীনের ইউন নান প্রদেশের আধুনিক ও সচ্ছল সীমান্ত গ্রামগুলো
ইউন নান হচ্ছে চীনের একটি বহু জাতির সীমান্ত প্রদেশ। তা ভিয়েতনাম, লাওস ও মিয়ানমার সীমান্তে অবস্থিত। তার ৪০০০ কিলোমিটারের বেশি সীমান্ত রেখার পাশে রয়েছে ৩৭৪টি গ্রাম।
২০২১ সালের নভেম্বর মাসে ইউন নান প্রদেশে চালু হয় সচ্ছল সীমান্ত গ্রাম নির্মাণ প্রকল্প। আর পরিকল্পনা অনুযায়ী, ৩ বছরের মধ্যে অবকাঠামো, শিল্প, পরিবেশ, জীবনযাপন, নিরাপত্তাসহ নানা ক্ষেত্রে আধুনিক, সুন্দর ও সমৃদ্ধ গ্রাম গড়ে তোলা হবে।
শুরুতে আমরা মান ইয়া গ্রামে যাই। গ্রামে প্রবেশ করে শোনা যাচ্ছে সুন্দর গান। মান ইয়া গ্রামে বাস করে পুলাং নামে একটি সংখ্যালঘু জাতির মানুষ। সারা গ্রামে মোট ১৩১টি পরিবারের ৫৭৬ জন রয়েছে। মান ইয়া গ্রাম তার গান ও নাচের কারণে মানুষের কাছে সুপরিচিত। পুলাং জাতির ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও গান গাওয়া চীনের অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।
গ্রামের বাসিন্দা ইয়ান ওয়া লুও পুলাং জাতির ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র ও গানের একজন শিল্পী এবং তিনি নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে তার জাতির ঐতিহ্যিক সুর সারা চীনে প্রচার করে আসছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুলাং জাতির মানুষ ঐতিহ্যিক বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও গান গাওয়ার মাধ্যমে নিজেদের জাতীয় সংস্কৃতি রেকর্ড করে। গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, বিষয়ের অনুষ্ঠান ও শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে এ বাদ্যযন্ত্র বাজায় ও গান গায়।
ইয়ান ওয়ান লুওর মনে পড়ে যে ছোটবেলায় তার পোশাক ও খাবারের অভাব ছিল। তিনি বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন এবং গান পরিবেশন করতেন। তার মাধ্যমে কিছু চাল উপার্জন করতেন।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মান ইয়া গ্রামের অবকাঠামো অনেক উন্নত হয়েছে এবং গ্রামে পুলাং বাদ্যযন্ত্র বাজানো ও গান গাওয়ার জন্য বিশেষ একটি প্রদর্শন হল নির্মিত হয়েছে। ইয়ান ওয়া লুও এখন সেখানে ঐতিহ্যিক শিল্পের নতুন সংস্কার করছেন এবং শিক্ষার্থীদেরকে তা শেখাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত তিনি মোট ৯০০ জনকে শিখিয়েছেন। পাশাপাশি, গ্রামের উন্নয়ন, জাতীয় ঐক্য, মাদক ও এইডস প্রতিরোধসহ নানা বিষয়ে সুর তৈরি করছেন। আসলে তিনি ঐতিহ্যিক শিল্পের মাধ্যমে গ্রামে এসব প্রচার করেন।