আকাশ ছুঁতে চাই ৬৫
তাতার মুসলিম জাতির নারীরা ঈদের দিনে নানা রকম অলংকার পরতে ভালোবাসেন। সাদা, হলুদ, লাল বা গোলাপি রঙের কুচি দেয়া লম্বা কুর্তি তাদের পছন্দ। চীনের সব মুসলিম নারীরাই ঈদের দিনে ঘরে নানা রকম সুখাদ্য রান্না করেন এবং মেহমানদের আপ্যায়ন করতে ভালোবাসেন।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
সম্পাদনা: রহমান
প্রসূতি বিশেষজ্ঞ লু ওয়েইইং
নারীর স্বাস্থ্যের উন্নয়ন এবং প্রজনন চিকিৎসা সমাজের সামগ্রিক উন্নয়নের একটি অপরিহার্য অংশ। নারীদের সুস্থ এবং সুন্দর জীবনযাপনের জন্য তাদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি, যা পরিবার, সমাজ এবং দেশের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্য প্রয়োজন সঠিক এবং সময়োপযোগী প্রজনন চিকিৎসা। এ ধরনের চিকিৎসায় একজন নিবেদিতপ্রাণ চিকিৎসক হলেন চীনের লু ওয়েইইং। দীর্ঘদিন ধরে তিনি নারীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদান, গবেষণা পরিচালনা, এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। বিস্তারিত থাকছে প্রতিবেদনে
দক্ষিণ চীনের হাইনান প্রদেশের জনপ্রিয় প্রসূতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক লু ওয়েইইং। প্রদেশে প্রসূতি চিকিৎসার দ্রুত বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন তিনি। পাশাপাশি নারীদের স্বাস্থ্যের উন্নয়নেও কাজ করছেন। লু ‘ট্রিপল বেবি’ ধারণারও প্রবক্তা। তিনি বিশ্বাস করেন যে, চীনের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা সংকট সমাধানে এই ধারণা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
৫৯ বছর বয়সী এই চিকিৎসক শাংহাই সিয়াও তোং বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ফুতান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রজনন বিজ্ঞানে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেছেন। কর্মজীবনের একেবারে শুরুতে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘চীনের জনসংখ্যা ও উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্রের’ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি জনসংখ্যা বিজ্ঞান সমিতি’র প্রেসিডেন্ট এবং ‘আন্তর্জাতিক জনসংখ্যা বিজ্ঞান ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবেও কাজ করেছেন।
প্রসূতি চিকিৎসায় ২৭ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা লু ওয়েইইংয়ের। ২০১৯ সাল থেকে তিনি হাইনানের বিভিন্ন অঞ্চলের ক্লিকগুলোতে বিনামূল্যে নারীদের চিকিৎসা কার্যক্রমের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন। পাশাপাশি প্রদেশজুড়ে চিকিৎসা কর্মীদের নিয়ে ১৮টি দলের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন। এর ফলে তৃণমূল পর্যায়ের চিকিৎসকদের দক্ষতা বৃদ্ধির পথ তৈরি হয়েছে।
লু ওয়েইইং জানান, হাইনানে প্রজনন সংক্রান্ত টেকনোলজিগুলো আরও অত্যাধুনিক করা হয়েছে। চিকিৎসা শিল্পের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রযুক্তিগুলো অন্যান্য প্রদেশগুলোতেও ছড়িয়ে দেওয়ার সময় এসেছে।
লু ওয়েইইং বলেন,‘আমরা বিনামূল্যে রোগ নির্ণয়ের ব্যবস্থা করেছি, যাতে স্থানীয় জনগণ উচ্চমানের চিকিৎসা সুবিধা পেতে পারে। এর ফলে গ্রামীণ পর্যায়ের চিকিৎসকরাও উৎসাহিত হচ্ছেন।’
লু ওয়েইইং এবং হাইনান নারী ও শিশু মেডিকেল সেন্টারের প্রজনন চিকিৎসা কেন্দ্রের তার সহকর্মীরা প্রতি সপ্তাহের কার্যদিবসে রাত ৮টায় প্রজনন-সম্পর্কিত তথ্য সম্পর্কে উইচ্যাটে লাইভস্ট্রিম করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বর থেকে তিনি ও তার সহকর্মীরা এমন কাজ করে আসছেন। এই উদ্যোগটি রোগীদের বন্ধ্যাত্বসহ নারী স্বাস্থ্য বিষয়ে বিস্তৃত ধারণা পেতে এবং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে কাজ করেছে।
এছাড়া চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের জাতীয় কমিটির সদস্য হিসেবে তিনি চলতি বছর সিঙ্গেল নারীদের জন্য একটি সুশৃঙ্খল পদ্ধতিতে ডিম্বাণু হিমায়নের অনুমতি দেওয়া এবং ভবিষ্যতে প্রজননক্ষমতার বিকল্প ধরে রাখার জন্য ডিম্বাণু ব্যাংক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছেন।
প্রতিবেদন: শুভ আনোয়ার
সম্পাদনা: শান্তা মারিয়া
প্রতিবন্ধী শিশুদের বিনোদনে মিনি চিড়িয়াখানা
শিশুরা জীবজন্তু দেখতে ভালোবাসে। তারা চিড়িয়াখানায় বেড়াতে পছন্দ করে। কিন্তু মারাত্মকভাবে প্রতিবন্ধী এবং জন্মগত রোগে আক্রান্ত শিশুদের পক্ষে অধিকাংশ ক্ষেত্রে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যাওয়া সম্ভব হয় না। শানতোং প্রদেশের একটি ওয়েলফেয়ার হাউজ প্রতিবন্ধী ও জন্মগত রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য স্থাপন করেছে মিনি চিড়িয়াখানা। এই মানবিক গল্প শুনবো প্রতিবেদনে
শানতোং প্রদেশের ছিংতাও সিটির একটি ওয়েলফেয়ার হাউজে শিশুদের জন্য স্থাপন করা হয়েছে ছোট চিড়িয়াখানা।
এই ওয়েলফেয়ার হাউজে আছে ১২৭টি শিশু। তাদের ৯২ শতাংশ মারাত্মক প্রতিবন্ধিতায় আক্রান্ত। অনেকে এমনকি বিছানা থেকেও উঠতে পারে না। ওদের বিনোদনের জন্য চিড়িয়াখানাটি একদম কাছে স্থাপন করা হয়েছে। ঘরের জানালা দিয়েও এই মিনি চিড়িয়াখানার পশুপাখি দেখা সম্ভব।
ওয়েলফেয়ার হাউজের প্রধান ছুই সুয়েছিং এক করুণ গল্প তুলে ধরেন। এই হাউজে থাকতো ১৬ বছরের একটি প্রতিবন্ধী ছেলে।সে জন্মগত অসুখে ভুগছিল। একবার সে খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। একটু সেরে ওঠার পর ছুই সুয়েছিংয়ের কাছে সে চিড়িয়াখানায় বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এর পরদিন ওই ছেলেটির অবস্থা আরও খারাপ হয় এবং সে মৃত্যুবরণ করে।
ছুই এর খুব কষ্ট লাগে যে ছেলেটি অপূর্ণ ইচ্ছা নিয়ে জীবন থেকে বিদায় নিলো। এরপর তিনি সিদ্ধান্ত নেন ছোট একটি চিড়িয়াখানা এমনভাবে স্থাপনের যেন এই শিশুরা নিজেদের ঘর থেকেও জীবজন্তুকে দেখতে পায়। তিনি আলপাকা, হরিণ, ময়ূর, ছাগল , টাট্টুঘোড়ার মতো কয়েকটি প্রাণী নিয়ে মিনি চিড়িয়াখানা শুরু করেন। এই প্রাণীদের যত্ন নেয়ার জন্য একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হয়। অনেক মানুষ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে সাহায্য করেন।