আকাশ ছুঁতে চাই পর্ব ৯৮
১. প্রতিটি মানুষের সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে: মিলা মাহফুজা, লেখক ও সমাজকর্মী
২. লৌহমানবী লিউ লি
৩. চীন জুড়ে নারীদের সুরক্ষা জোরদার করার উদ্যোগ
৪. ডিজাইনার থেকে উদ্যোক্তা চিয়াং লিচুয়ান
৫. লি বিংচি ১৫০০ মিটার ফ্রিস্টাইল সাঁতারে এশিয়ান রেকর্ড গড়েছেন
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি ভালো আছেন। আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আমরা সবসময় কথা বলি নারীর সাফল্য, সংকট, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা নিয়ে।
আমাদের আজকের অতিথি মিলা মাহফুজা। তিনি কথা সাহিত্যিক এবং মানবাধিকার কর্মী। দীর্ঘদিন ধরে প্রবীণ নারী ও থার্ড জেন্ডারদের অধিকার নিয়ে কাজ করছেন। তার কাছ থেকে আমরা শুনবো বিভিন্ন অভিজ্ঞতার গল্প। আমাদের অনুষ্ঠানে তাকে স্বাগত জানাই।
প্রতিটি মানুষের সামাজিক দায়বদ্ধতা আছে: মিলা মাহফুজা, লেখক ও সমাজকর্মী
সাক্ষাৎকার:
মিলা মাহফুজা দীর্ঘদিন ধরে সাহিত্য চর্চা করছেন। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা তার লেখায় তুলে ধরেছেন। ছোটগল্প ও উপন্যাস লিখেছেন তিনি।
সত্তরের দশক থেকেই তিনি লেখালেখি করছেন। তিনি বিভিন্ন লিটল ম্যাগাজিনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধের গল্প নিয়ে তার লেখা ছোটগল্পের বই ‘সুবর্ণ রেহেলে রাখি’ বেশ পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার নারীদের বেদনা তার লেখায় উঠে এসেছে। তিনি লেখার পাশাপাশি সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গেও জড়িত। তিনি প্রবীণ নারীদের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে কাজ করছেন। তিনি মনে করেন, প্রবীণ জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্পমূল্যে সরকারি আবাস থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। বর্তমানে যৌথ পরিবার ব্যবস্থা অনেকটাই ভেঙে গেছে। অনেকের ছেলেমেয়ে হয়তো বিদেশে থাকে। বাবা মায়ের দেখাশোনা করাও অনেকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় প্রবীণদের জন্য যদি স্বল্প মূল্যে সরকারি আবাসনের ব্যবস্থা থাকে তাহলে তাদের শেষজীবন অনেক সুন্দর হবে।
মিলা মাহফুজা সমাজের তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের অধিকারের জন্য অনেক কাজ করেছেন। তিনি তাদের অধিকার সুরক্ষায় সরকারি, বেসরকারি সচেতনতা ও পদক্ষেপ আশা করেন।
মিলা মাহফুজা মনে করেন, ‘প্রতিটি মানুষের সামাজিক দায়বদ্ধতা রয়েছে।’ তিনি নিজেও সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেই লেখালেখি এবং সমাজসেবামূলক কাজ করে থাকেন।
লৌহমানবী লিউ লি
চীনের শ্রমিকরা তাদের আত্মত্যাগ ও কাজের মাধ্যমে দেশগঠনে অনেক বড় অবদান রেখেছেন। প্রথমযুগের তেল শ্রমিকদের মধ্যে রয়েছেন তাছিং অয়েল ফিল্ডের শ্রমিকরা। এই তেলক্ষেত্রের একজন কর্মী লিউ লি। তিনি সদ্য সমাপ্ত সিপিসি ২০ তম জাতীয় কংগেসে একজন প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন। চলুন শোনা যাক তার কথা।
লিউ লি সদ্যসমাপ্ত সিপিসি ২০ ন্যাশনাল কংগ্রেসে যোগ দিতে একজন প্রতিনিধি হিসেবে বেইজিং আসেন। তিনি এমন একজন কর্মী যিনি তাছিং তেলক্ষেত্রকে অনেক বেশি উন্নয়ন এনে দিয়েছেন।
লিউ তাছিং-এ একটি উদ্ভাবন ল্যাব চালান, যা এক হাজারেরও বেশি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে যা ১২০ মিলিয়ন ইউয়ান মূল্যের উপকারী ফলাফল অর্জনে সহায়তা করেছে।
তাছিং অয়েলফিল্ড ১৯৫৯ সালে আবিষ্কৃত হয়। এটি চীনের তেল শিল্পকে উন্নীত করে এবং চীনের শিল্প উন্নয়নে বিশাল অবদান রাখে। এটি এখনও বছরে ৪০ মিলিয়ন তেল উৎপাদন করে।
এই তেলক্ষেত্র শ্রমিকদের দেশপ্রেম, ভক্তি এবং অধ্যবসায়ের প্রতীক। এমনি একজন শ্রমিক ছিলেন ওয়াং চিংসি(১৯২৩-১৯৭০)। তিনি এত বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে তাছিং এর প্রাথমিক বছরগুলোতে এখানে অবদান রেখেছিলেন যে তাকে আয়রন ম্যান নামে ডাকা হতো।
লিউ বলেন, ‘আমাদের জিনে আয়রন ম্যানের চেতনা রয়েছে।’ লিউ এর বাবাও ছিলেন তাছিং এর প্রথম যুগের তেল শ্রমিকদের একজন। বাবার পথ ধরেই এগিয়ে যাচ্ছেন কন্যা।
লিউ লি বর্তমানে তাছিং অয়েলফিল্ডের পেট্রোলিয়াম উৎপাদন দলের প্রধান।
লিউ লি তার কর্মীদের কাছে লৌহ মানবী নামে পরিচিতি পেয়েছেন নিজের কর্মদক্ষতা ও নিরলস পরিশ্রমের জন্য। পাশাপশি অনেক জনপ্রিয়তাও পেয়েছেন এই নারী।
তাছিং বর্তমানে তেল ও গ্যাসের সমন্বিত ক্ষেত্রে উন্নীত হয়েছে এবং বিশ্বমান অর্জন করেছে যার অনেকটা কৃতিত্ব লিউ লি ও তার কর্মীদলের।
চীন জুড়ে নারীদের সুরক্ষা জোরদার করার উদ্যোগ
চীন জুড়ে নারীর সুরক্ষা আরও বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী নারীদের সুযোগ সুবিধা আরও বাড়ানো হচ্ছে। বিস্তারিত জানাচ্ছেন তানজিদ বসুনিয়া।
চীন জুড়ে নারীদের, বিশেষ করে দরিদ্র, বয়স্ক বা প্রতিবন্ধী নারীদের, সুরক্ষা জোরদার করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দেশটির একজন জ্যেষ্ঠ আইনপ্রণেতা গত সপ্তাহে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন।
নারীর অধিকার ও স্বার্থ সুরক্ষা সংক্রান্ত আইনের খসড়া সংশোধনটি চীনের শীর্ষ আইনসভা জাতীয় গণকংগ্রেসের স্থায়ী কমিটির আসন্ন অধিবেশনের সময় আরও পর্যালোচনা করা হবে।