আকাশ ছুঁতে চাই ৬৩
স্থানীয় বিশেষ ঐতিহ্যকে সঠিকভাবে ব্যবহার করে ই কমার্সের মাধ্যমে এলাকার চেহারা বদলে দিয়েছেন এক নারী। শুনবো তার বিষয়ে একটি প্রতিবেদন।
চীনের উত্তর পশ্চিম অংশে অবস্থিত কানসু প্রদেশের লংনান সিটি। এখানে পাহাড় ঘেরা একটি গ্রাম শিথান। এই গ্রামের বাসিন্দা লিয়াং ছিয়ানচুয়ান। তিনি চীনের জাতীয় আইনসভারও সদস্য। লংনান সিটি প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ। এই এলাকার বেশ কিছু খাদ্য সামগ্রী বেশ বিখ্যাত। কিন্তু দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এবং দুর্বল পরিবহন ব্যবস্থার কারণে হওয়ায় এসব পণ্যের ব্যবহার স্থানীয় পর্যায়েই সীমাবদ্ধ ছিল। এই এলাকার নারী লিয়াংয়ের মনে ভাবনা আসে এই পণ্যগুলোকে দেশের সর্বত্র বিপণন করার। তিনি ই কমার্স পদ্ধতিতে এইসব পণ্য বিপণনের সিদ্ধান্ত নেন।
ই কমার্স কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। স্থানীয় মৌমাছি পালনকারীদের কাছ থেকে তিনি মধু কেনেন। এগুলোর গুণগত মান নিশ্চিত করেন। বোতলজাত করেন। তারপর লাইভ স্ট্রিমিং করে জনপ্রিয় হয়েছেন এমন কয়েকজনকে নিযুক্ত করেন। স্থানীয় মধু বিক্রি শুরু হয় অনলাইনে। লিয়াং এই প্রক্রিয়ায় নেতৃত্ব দেন। দারিদ্র্য দূরীকরণে দৃঢ় ভূমিকা রাখেন। শুধু মধু নয়, ডিম, শুকনো ফল, ফুল ও ফলের বীজসহ আরও অনেক কৃষিপণ্য ও হস্তশিল্প পণ্য উৎপাদন ও বিপণন শুরু হয়।
শিথান গ্রাম ও লংনান সিটির অধিবাসীরা ই কমার্সের মাধ্যমে এভাবেই গড়ে নিচ্ছেন ভাগ্যকে। আর এ কাজে তাদের পথ দেখাচ্ছেন লিয়াং ছিয়ানচুয়ান।
প্রবীণ চাও কুইলান ও কাপড়ের বাঘ
প্রিয় শ্রোতা , আপনারা শুনছেন চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত অনুষ্ঠান আকাশ ছুঁতে চাই।
ঐতিহ্যকে ধরে রেখে পরবর্তি প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন ৮২ বছর বয়সী প্রবীণ নারী চাও কুইলান। শুনবো সেই গল্প।
শানতুং প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী কাপড়ের বাঘ পুতুল। বিশেষ করে এ বছর চীনে বাঘবর্ষ হওয়ায় নববর্ষে এই বিশেষ ধরনের বাঘ পুতুলের জনপ্রিয়তা আরও বাড়ে। এই এলাকার একটি রীতি হলো নবজাতককে বা শিশুদের বাঘপুতুল উপহার দেওয়া। এটি এক ধরনের আশীর্বাদ দেয়ার পদ্ধতি।
শানতুং প্রদেশের সিবেইছাং গ্রামের প্রবীণ নারী চাও কুইলান। বয়স ৮২ বছর। এই বয়সেও সুই সুতা দিয়ে রং বেরঙের বাঘ পুতুল তৈরি করেন তিনি।
ঐতিহ্যবাহী এই কারু শিল্প তিনি শিখেছিলেন তার মায়ের কাছ থেকে। ছোটবেলা থেকেই ঐতিহ্যবাহী কারুশিল্পের প্রতি তার আকর্ষণ প্রবল।
কাপড়ের বাঘপুতুল তৈরিতে দিনে দিনে তার দক্ষতা বেড়েছে। অনেক প্রতিযোগিতায় পুরস্কারও জিতে নিয়েছেন। পেয়েছেন কারুশিল্পীর সম্মাননা। ২০২০ সালে চীনে জাতীয় পর্যায়ে অদম্য সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের একজন উত্তরসূরী হিসেবে তাকে সম্মাননা দেয়া হয়। তিনি নিজস্ব কিছু উদ্ভাবনও যোগ করেছেন এর সঙ্গে।
এই কারুশিল্প থেকে তার আয়ও হয়েছে অনেক। এমনকি এই টাকা তার সংসারেও অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বয়ে এনেছে। স্বামী ও তিন সন্তান নিয়ে সুখের সংসার গড়েছেন তিনি।
তবে নিছক অর্থের জন্য তিনি এই কাজ করেননি। এই বৃদ্ধ বয়সেও যে তিনি বাঘ পুতুল তৈরি করেন সেটির পিছনে রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতির প্রতি অপরিসীম ভালোবাসা। তিনি পরবর্তি প্রজন্মের কাছে এই ঐতিহ্যকে পৌঁছে দিতে চান।
আকাশ ছুঁতে চাই অনুষঠানের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছি আমরা।