আকাশ ছুঁতে চাই ৪৩-China Radio International
চীনে নারী শিশুর উন্নয়নে রূপরেখা
কী আছে এবারের পর্বে
১. চীনে নারী শিশুর উন্নয়নে অগ্রাধিকার নীতি: প্রতিবেদন
২. সাক্ষাৎকার: কর্পোরেট জগতে নারী
৩. হানফু গ্র্যান্ডমা
৪. গান: আমি তোমাকে মিস করি
৫. শিশুদের নতুন জীবনের পথ দেখাচ্ছেন লিউ
চীন আন্তর্জাতিক বেতারের ঢাকা স্টেশন থেকে প্রচারিত আকাশ ছুঁতে চাই অনুষ্ঠানে আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া।
আগামী এক দশকে চীনের নারী ও শিশুদের উন্নয়ন নীতির রূপরেখা সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। এতে নারী ও শিশুদের মৌলিক অধিকার রক্ষার পাশাপাশি সামগ্রিক বিকাশকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এই রূপরেখা নারী ও শিশুদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার নীতি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এ ব্যাপারে বিস্তারিত প্রতিবেদন।
চীনে নারী ও শিশুর উন্নয়নে অগ্রাধিকার নীতি
আগামী দশ বছরে চীনের নারী ও শিশু সংক্রান্ত নীতি উন্নয়নের রূপরেখা উন্মোচন করেছে দেশটির স্টেট কাউন্সিল। সম্প্রতি এটি প্রকাশ করা হয়। এ রূপরেখায় উল্লেখ করা হয়, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশটির নারীদের উন্নয়নে সঠিকভাবে জেন্ডার সমতার নীতি প্রয়োগ করা হবে। এছাড়া সমান অধিকারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সেবার পূর্ণাঙ্গ, শিক্ষার অধিকার, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অধিকার ভোগ করবে তারা। নারী ও শিশুদের জন্য ৭৫টি প্রধান লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে এবং ৯৩টি সহায়ক পরিকল্পনা প্রস্তাবনা করা হয়েছে। যার মধ্যে স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং শিক্ষাসহ আটটি বিষয় স্থান পেয়েছে। শিশু উন্নয়নের রূপরেখা অনুযায়ী, শিশুদের অধিকার রক্ষা আইন বাস্তবায়ন করা হলে শহুরে এবং গ্রামাঞ্চলের শিশুদের মধ্যে যে ব্যবধান রয়েছে তা অনেকাংশেই কমে আসবে। সার্বিকভাবে শিশুদের বিকাশের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে নথিতে আরো উল্লেখ করা হয়, আগামী এক দশকের মধ্যে শিশুরা মৌলিক জনসেবার অনুর্ভক্ত হয়ে সমাজের সব সযোগ সুবিধা আরো বেশি ভোগ করবে।
সাক্ষাৎকার: কর্পোরেট জগতে নারী
কর্পোরেট জগতে বাংলাদেশের নারীদের প্রবেশ খুব বেশি দিনের ঘটনা নয়। কিন্তু এরমধ্যেই সাফল্যের সঙ্গে নারীরা এগিয়ে চলেছেন। তারা ভালো অবস্থান গড়ে নিচ্ছেন। কর্পোরেট জগতে নারীদের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে এখন আমরা কথা বলবো লীনা পারভীনের সঙ্গে। তিনি বাংলাদেশের একটি বড় প্রতিষ্ঠান আগোরা লিমিটেডের জনসম্পদ বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন। আমাদের অনুষ্ঠানে আপনাকে স্বাগত জানাই। বাংলাদেশে কর্পোরেট জগতে একজন সফল নারী লীনা পারভীন বলেন, এ পেশায় সফল হতে হলে দৃঢ় মনোবল থাকতে রাখতে হবে নারীকে। কারণ কর্পোরেট জগতে টিকে থাকতে হলে প্রচণ্ড ইচ্ছাশক্তি নিয়ে এগোতে হয়। এখানে পদে পদে বাধা রয়েছে। লীনা মনে করেন, বাংলাদেশে কর্পোরেট জগতের পরিবেশ এখনও নারীবান্ধব নয়। এখানে মনে করা হয় নারী সব পদের জন্য উপযুক্ত নয়। অনেক প্রতিষ্ঠানে নারীকে তার প্রাপ্য সুযোগ সুবিধাগুলো দেয়া হয় না। তবে লীনা পারভীন যে প্রতিষ্ঠানে রয়েছন সেখানে আই এল ও’র শ্রম আইন অনুসারে সব রকম সুবিধা দেয়া হয়ে থাকে। মাতৃত্বকালীন ছুটি এবং অন্যান্য সুবিধা দেয়ার বিষয়ে এই প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন সমস্যা করে না। লীনা বলেন, ‘বাংলাদেশের কর্পোরেট জগতে নারী আগের তুলনায় অনেক এগিয়েছে তবে যতটা এগোনোর সম্ভাবনা ছিল ততোটা কিন্তু হয়নি।’ এর কারণ হিসেবে তিনি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতাকে দায়ী মনে করেন। ব্যক্তিগত জীবনে লীনাকেও অনেক সংগ্রাম করতে হয়েছে। তিনি যমজ সন্তানের মা। সংসারে মায়ের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রের সকল দায়িত্ব তাকে পালন করতে হয়েছে। কঠোর পরিশ্রম সত্ত্বেও তিনি চাকরি ছাড়েননি। শত প্রতিকূলতা সহ্য করেও চাকরি ধরে রাখার এবং কর্পোরেট জগতে টিকে থাকার এই মনোবলই তার আজকের সাফল্যের কারণ বলে মনে করেন তিনি।
লীনা পারভীন সম্প্রতি নারীবাদী লেখালেখিতে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন। লেখার জন্য তিনি সময় বের করে নেন। কারণ লেখাটা তার প্রাণের তাগিদ থেকে আসে। নিজের অন্তর্জগতকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই তিনি লেখালেখির জন্য সময় ম্যানেজ করে নেন।
কর্পোরেট জগতে আরও বেশি সংখ্যায় নারীরা এগিয়ে আসবেন এমন আশা ব্যক্ত করেন তিনি।