‘বিজনেস টাইম’পর্ব- ১২
ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে চীনে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী দেশ ফ্রান্স। ৯০০ বেশি ব্যবসার মধ্য দিয়ে ২০২২ এ এশিয়ার মধ্যে ফ্রান্সেই ছিল চীনের সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ। দেশটিতে চীনের এফডিআই রয়েছে ৪ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারের।
।। প্রতিবেদন: শাহানশাহ রাসেল
।। সম্পাদনা: ফয়সল আবদুল্লাহ
বিশ্ববাজারে বাড়ছে চীনা লজিস্টিক পরিষেবা
বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স বাজার চীন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এই বাজার আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে দেশটির কুরিয়ার পরিষেবার চাহিদা। আর এ চাহিদার কথা মাথায় রেখেই এবং বিশ্ববাজারে উপস্থিতি নিশ্চিত করতে চীনের কুরিয়ার কোম্পানিগুলো তাদের ই-কমার্স লজিস্টিক পরিষেবা আরও উন্নত করছে। পাশাপাশি একটি শক্তিশালী ডেলিভারি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে কাজ করছে।
চীনা টেক জায়ান্ট আলিবাবা গ্রুপ হোল্ডিং লিমিটেডের লজিস্টিক শাখা সাইনাও গ্রুপ। স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানি, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম এবং যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের বেশকিছু দেশে ই-কমার্স লজিস্টিক পরিষেবা প্রদানে বেশ আস্থা অর্জন করেছে এই সাইনাও গ্রুপ। সম্প্রতি কোম্পানিটি ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে পণ্য ডেলিভারির গ্যারান্টি দিয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ইউরোপীয় গ্রাহকদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখেই তাদের এমন উদ্যোগ। এর ফলে আরও দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য ডেলিভারি সেবা নিশ্চিত করা যাবে।
গত সেপ্টেম্বরে স্পেন, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস এবং বেলজিয়ামের চারটি ইউরোপীয় বাজারে ডেলিভারি সেবা শুরু করে সাইনাও গ্রুপ। সম্প্রতি জার্মানি, ফ্রান্স এবং পর্তুগালে কার্যক্রম বিস্তৃত করছে তারা।
বিশ্বব্যাপী লজিস্টিক শিল্পে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করতে প্রযুক্তি এবং অবকাঠামোতে বিনিয়োগ করছে সাইনাও।
দেশটির কাস্টমস প্রশাসনের তথ্যানুসারে, প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী চলতি বছরের প্রথম তিনমাসে চীনের ক্রস বর্ডার ই-কমার্স আমদানি এবং রপ্তানি হয়েছে ৫৭৭ দশমিক ৬ বিলিয়ন ইউয়ান, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি।
এদিকে চীনা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম জেডির লজিস্টিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জেডি লজিস্টিকস। গেল মার্চ মাসে এ কোম্পানিটিও তাদের আন্তর্জাতিক ডেলিভারি পরিষেবা আরও বিস্তৃত করার ঘোষণা দিয়েছে।
।। প্রতিবেদন: শুভ আনোয়ার
চীনের পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি এগিয়ে নিতে পারে বিশ্বকে
মূলত তিনটি শিল্পখাত চীনের পরিবেশবান্ধব সবুজ প্রযুক্তির নেতৃত্ব দিচ্ছে। এগুলো হলো নতুন জ্বালানির গাড়ি, সৌর প্যানেল ও লিথিয়াম ব্যাটারি। সর্বোচ্চ মান বজায় রেখে সবেচেয়ে কম খরচেই এগুলো উৎপাদন করছে চীন। এতেই উপকৃত হচ্ছে বিশ্বের অন্যান্য দেশ। চীনের কারণে এখন তারাও কম খরচে নিজেদেরকে আরও পরিবেশবান্ধব করার সুযোগ পাচ্ছে।
চায়না ডেইলিকে সম্প্রতি দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমনটা বলেছেন বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাস্টিন ইফু লিন।
লিন বলেন, মন্দা থেকে বেরিয়ে এসে কোনো দেশ যখন তার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে টিকে থাকতে চায়, তখন তার উচ্চমানের পণ্যের পাশাপাশি একটি ন্যায়সঙ্গত বাজারদরও ঠিক করতে হয়। চীনের এ সুবিধাটিই রয়েছে এবং এগুলো নিয়েই চীন বিশ্বব্যাপী উচ্চমানের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা কার্যক্রম চালাতে সক্ষম।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো কিছু দেশ চীনের এই নতুন তিন পরিবেশবান্ধব শিল্পে তথাকথিত ‘ওভারক্যাপাসিটি’র যে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করছে, সেটা জবাব হিসেবেই মূলত এমনটা বলছিলেন লিন।
সিংহুয়া ইউনিভার্সিটির গবেষক লি তাওখুই চায়না ডেইলিকে বলেছেন, পশ্চিমাদের ওভারক্যাপাসিটির অভিযোগটাই অতিরঞ্জিত এবং বিশ্বায়নের মূলভাবনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
তিনি যে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন তা হলো—নতুন দিনের বিশ্বায়নের জন্য চীন তাদের নতুন জ্বালানির পণ্য, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও কাঁচামালগুলোকে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে চায়। কিন্তু এ কাজে পশ্চিমের অনেক দেশ অংশ নিতে চায় না।
আবার গ্লোবাল কনসালটেন্সি রিস্টাড এনার্জির সিনিয়র বিশ্লেষক মা ইনছিওং বলেছেন, অনুন্নত দেশগুলোর কাছে খরচটাই বড় বাধা। চীনের কাঁচামালের কারণেই কিন্তু তারা পণ্যের উৎপাদন খরচ কমাতে পারছে এবং দ্রুত পরিবেশবান্ধব উৎপাদনে যেতে পারছে।