বাংলাদেশে বর্ষায় অর্থনীতির ভিন্নমাত্রা
বর্ষায় বাংলাদেশের অর্থনীতি চাঙ্গা হওয়ার আরেক উপকরণ নানা মৌসুমী ফল। এ সময় পাওয়া যায় পেয়ারা, লটকন, আমড়া, জাম্বুরা, জামরুল, ডেউয়া, কামরাঙা, কাউ, গাব ইত্যাদি নানা স্বাদের ফল। অনেক মৌসুমী ফলচাষী এসব ফলের বাগান করে থাকেন অর্থ উপার্জনের জন্য। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা পিরোজপুর ও ঝালকাঠির পেয়ারা আবাদ হয় এই বর্ষায়।
মাছে ভাতে বাঙালি প্রবাদটির সত্যতা পাওয়া যায় বর্ষা ঋতুতে। এ মৌসুমে বাংলাদেশে প্রচুর মাছ পাওয়া যায়। খাল-বিল, নদ-নদীর পানিতে মেলে বাহারি স্বাদ ও নামের মাছ। আবার খামার কর যারা মাছ চাষ করে তাদের জন্য বর্ষা যেন আশির্বাদ।
বর্ষায় বাংলাদেশে বিভিন্ন জায়গায় বসে নৌকার হাট। ঝালকাঠি, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, সিরাজগঞ্জসহ নদী তীরবর্তী জেলাগুলোতে বসতে দেখা যায় নৌকার হাট। ছোট ,বড় ডিঙ্গি নৌকা বিক্রি হয় এসব হাটে। নদীতে পানি বাড়লে চাহিদা বাড়ে নৌকার, বাড়ে নৌকার বিকিকিনি।
তবে বছরের অন্য সময়ের বৃষ্টির তুলনায় বর্ষার বৃষ্টির আলাদা একটি বিশেষত্ব আছে। বর্ষার মেঘমালাগুলো অনেক দীর্ঘ ও বিস্তৃত হয়। আর বৃষ্টি পড়েও অনেক সময় নিয়ে। এই সময়ে বাতাসের গতিবেগ থাকে কম। তাই তা মেঘগুলোকে সরিয়ে অন্যত্র নিতে পারে না। মেঘের ওপরে মেঘ জমে অনেক জায়গায় পুরো আকাশ কালো হয়ে যায়। বৃষ্টি চলে অনেক সময় ধরে। অনেক সময় টানা কয়েক দিন চলে বৃষ্টি।
কখনো বর্ষার অতিবৃষ্টি আনে বন্যা। চলতি বছর জুনের শুরু থেকেই ভারতের আসাম ও মেঘালয়ের রেকর্ড বৃষ্টি চরম দুর্ভোগ নিয়ে এসেছে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায়। মৌসুমের তৃতীয় দফা বন্যায় পানিবন্দি হয়ে পড়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ৩৫ লাখ মানুষ। তবে এবারের ভয়াবহ বন্যার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকেই বড় কারণ হিসাবে বলা হচ্ছে।
সম্পাদনা: সাজিদ রাজু