চীনের সংস্কৃতি, চীনের ঐতিহ্য- ০০২
দশ বছর বয়সের সময় তাকে পরিবারের থেকে দূরের এক শহরে আত্মীয় বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কারণ সেসময় উত্তর চীনে যুদ্ধ দেখা দিয়েছিল। তাকে দক্ষিণে সুচৌ শহরের নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দেয়া হয়। তারুণ্যে তিনি সরকারি চাকরি পরীক্ষায় কৃতকার্য হয়ে ছোট একটি পদে চাকরি জীবন শুরু করেন।
তিনি দরবারের জটিলতায় পড়ে যান এবং তার অনেক শত্রু সৃষ্টি হয়। ফলস্বরূপ সম্রাটের বিরাগভাজন হয়ে নির্বাসনে যেতে হয় তাকে। পরে অবশ্য নতুন সম্রাটের আমলে আবার দরবারে ফিরে আসতে পারেন।
৮২৫ খ্রিস্টাব্দে তিনি সুচৌ শহরের গভর্নর নিযুক্ত হন। এর কিছুকাল পরে তিনি অবসরে যান। তিনি বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারী ছিলেন। শেষ জীবনে মঠে জীবন কাটান। পাই ই চু দুই হাজার আটশো’র বেশি কবিতা লিখেছেন। তার কবিতা চীন ও জাপানে সমান জনপ্রিয়তা পায়।
পাইয়ের কবিতা সরল এবং সহজে বোধগম্য হওয়ায় জনসাধারণের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকেও অনেক কবিতা লিখেছেন। সমসাময়িক সামাজিক অবিচার, দুর্নীতি ইত্যাদির বিরুদ্ধে তার পরিহাসমূলক কবিতাগুলো সমাজের অসংগতিকে তীব্রভাবে আঘাত করেছে।
আবার প্রেম ও প্রকৃতি বিষয়ক কবিতাগুলো স্নিগ্ধ সারল্য পাঠকের মন জয় করেছে।
৮৮৬ সালে পাই চু ই মৃত্যুবরণ করেন। হ্যনান প্রদেশের সিয়াংশান মন্দিরের প্রাঙ্গণে তার সমাধি রয়েছে।
পাই ই চুর একটি বিখ্যাত কবিতা এখানে শ্রোতাদের শোনাচ্ছি।
দক্ষিণ তীরের স্বপ্ন
সুন্দর দক্ষিণ তীর
দৃশ্য তার মনোমুগ্ধকর
সূর্যোদয়ের সময় ফুলগুলো আগুনের চেয়ে রক্তিম হয়ে ওঠে
বসন্তে সাগরের সবুজ ঢেউ যেন নীলাকান্তমণির চেয়েও সুনীল
আমি তার প্রশংসা না করে থাকতে পারি না।
থাং রাজবংশের সময়কার কবি পাই চু ই তার পরবর্তিকালের কবিদের রচনায় প্রভাব বিস্তার করেছেন। তার কবিতার গীতিধর্মী দ্যোতনা অন্য কবিদেরও প্রকৃতির বর্ণনামূলক কবিতা লিখতে অনুপ্রাণিত করেছে।
--------------------------------------------------------------------------------------------------
চীনের সংস্কৃতি চীনের ঐতিহ্য
অডিও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ
প্রযোজনা ও উপস্থাপনা: মাহমুদ হাশিম।
সার্বিক তত্ত্বাবধানে: ইউ কুয়াং ইউয়ে আনন্দী।