মানুষ ও প্রকৃতি ১৬
ছিংহাই-সিচাং মালভূমিতে মাত্র কয়েক মাস আবহাওয়া মনোরম থাকে। বেশিরভাগ সময়ে আবহাওয়া অত্যন্ত চরম আকার ধারণ করে। এই কঠিন পরিবেশে এই ধরনের উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ ও পরিবেশ সংরক্ষণ কাজের ফলে পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় সাফল্য আগের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে।
এই মালভূমিতে এখন পরিবেশ রক্ষায় কাজ চলছে। কাজের ভালো ফলাফলও পাওয়া গেছে। রক্ষা পাচ্ছে জীববৈচিত্র্য, পরিবেশ ও বাস্তুতন্ত্র।
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
সম্পাদনা: ফয়সল
চীনে বিদ্যুতের টাওয়ারেই বিপন্ন পাখির অভয়ারণ্য
চীনের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলোর আনাচে কানাচে অনেক আগেই পৌঁছে গেছে বিদ্যুৎ। এতে করে শুরুর দিকে ছায়াঘেরা নির্মল প্রকৃতিতে বাস করা কিছু বিপন্ন প্রজাতির পাখি পড়েছিল সমস্যায়। কেউ চলে গিয়েছিল এলাকা ছেড়ে, আবার কেউ, বিদ্যুতের খুঁটিতে বাসা তৈরি করা শুরু করেছিল। উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে পাখিরা যাতে আর সমস্যায় না পড়ে তা নিশ্চিত করতে অভিনব সমাধান নিয়ে এসেছেন চীনের বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী ও পাখি বিশেষজ্ঞরা। বিস্তারিত প্রতিবেদনে।
উত্তর-পশ্চিম চীনের ছিংহাই প্রদেশের শানচিয়াংইউয়ান হলো চীনের অন্যতম একটি প্রাকৃতিক সংরক্ষিত বনাঞ্চল। নির্মল ও বুনো পরিবেশের কারণে এটি প্রায় ৩০০ বিরল প্রজাতির পাখির আবাসস্থল। এর মধ্যে ২০টিরও বেশি হলো শিকারি পাখি। এ তালিকায় আছে গোল্ডেন ঈগল, বাজপাখি এবং আপল্যান্ড বুজার্ড।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দিতে এই শানচিয়াংইউয়ানের ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতে হয়েছিল বিদ্যুতের সঞ্চালন লাইন। যার জন্য দরকার হয়েছিল এখানে সুউচ্চ বেশ কিছু টাওয়ার নির্মাণের। আর শিকারি পাখিরাও উঁচু স্থান পেয়ে সেই টাওয়ারগুলোতে তৈরি করতে শুরু করে তাদের বাসা।
এতে প্রথম দিকে বেশ সমস্যাতেই পড়তে হয়েছিল চীনের স্টেট গ্রিডের অধীনে থাকা ইউশু পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানিকে। পাখিদের তাড়াতে তারা প্রথমে ব্যবহার করতে শুরু করেন বিশেষ ধরনের আল্ট্রাসনিক যন্ত্র বা বার্ড রিপেলার। কিন্তু তাতে অবশ্য কাজ হয়নি।
স্টেট গ্রিড ইউশু পাওয়ার সাপ্লাই কোম্পানির সাবেক রক্ষণাবেক্ষণ কর্মকর্তা সু ওয়েনছি জানান, , ‘রিপেলারগুলো প্রথম দুই বা তিন মাস কার্যকর ছিল। কয়েক মাস পরে পাখিরা এগুলোয় অভ্যস্ত হয়ে যায় এবং খাপ খাইয়ে নেয়। আবার এই এলাকায় শক্তিশালী অতিবেগুনী রশ্মির উপস্থিতির কারণে, রিপেলারগুলো ভঙ্গুর হয়ে পড়ে এবং পাখিরা সহজে সেগুলোকে ফেলে দিতে পারছে।’
এরপরই সমাধান হিসেবে সঞ্চালন লাইনের কর্মীরা নিয়ে আসে অভিনব এক সমাধান। পাখিদের জন্য খুঁটির আগায় তৈরি করে দেওয়া হয় নকল বাসা। সেই বাসায় তারা বসিয়ে দিলেন একখানা ছাউনি। কিন্তু এখানেও বিপত্তি। নকল বাসাগুলোকেও এড়িয়ে চলতে শুরু করে পাখিরা। তবে পরে পাখিদের আচার আচরণ জেনে নিয়ে বাসার কাঠামো বদলানো হয়।