মানুষ ও প্রকৃতি পর্ব ৪
গত বছরের মে মাস থেকে কুয়াংসি রিসার্চ ইন্সটিটিউটের উদ্ভিদবিদরা বীজগুলোকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেন। তারা পর্যবেক্ষণ করা পরিবেশে স্থাপন করার আগে অঙ্কুরিত হওয়ার সুবিধার্থে বীজের খোসাগুলোকে সাবধানে কেটে ফেলেন। অবশেষে, দুটি বীজ অঙ্কুরিত হয়েছে, এবং একটি গত মাসে প্রথমবার ফুলেছে।
পদ্মফুল চীনের সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। চীনের প্রাচীন সাহিত্য, চিত্রকলা, ভাস্কর্য, সঙ্গীত সব জায়গায় পদ্মফুলের বিশেষ প্রভাব রয়েছে। লোটাস বা পদ্মফুল চীনা লোকজ সংস্কৃতিতে বিশুদ্ধতা ও অখণ্ডতার প্রতীক। সং ও মিং রাজবংশের সময় পদ্মফুল চীনা সংস্কৃতির এক অনন্য প্রতীকে পরিণত হয়।
চীনে পদ্মফুলের বীজ এবং মৃণাল সবজি খাদ্য হিসেবেও খুব জনপ্রিয়। চীনের বহু শতাব্দী প্রাচীন পদ্মের বীজকে জীবিত করার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। মিং রাজবংশের( ১৩৬৮-১৬৪৪ সাল) ইতিহাসে অজানা বয়সের পেট্রিফাইড পদ্ম বীজ পুনরুজ্জীবিত করার প্রক্রিয়া নথিভুক্ত করা হয়েছে।
সাম্প্রতিককালে অবশ্য প্রাচীন পদ্মবীজকে পুনরুজ্জীবিত করা হয় ল্যাবরেটরিতে। ২০১৯ সালে বিজ্ঞানীরা ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে মাটির নীচে থাকা একটি বীজ থেকে ফুল ফুটাতে সক্ষম হন। বীজটি বেইজিংয়ের ওল্ড সামার প্যালেস বা ইউয়ানমিং ইয়ুয়ান থেকে পাওয়া যায়।
ইনস্টিটিউটের গবেষক ওয়েই মিয়াওছিন বলেছেন, পদ্মের বীজে একটি বহু-স্তর বিশিষ্ট কাঠামো রয়েছে যা জল এবং বাতাসকে বন্ধ করে দেয়। শুষ্ক, শীতল এবং সিল করা পরিবেশে রাখা হলে তাদের হাজার বছরেরও বেশি সময় ধরে সুপ্ত রাখা সম্ভব।
ওয়েই বলেন, এই প্রাচীন বীজগুলোকে পুনরুত্থিত করার ফলে আজকে মানুষ প্রাচীন ফুল কেমন ছিল সেটা নিজের চোখে দেখতে পাচ্ছে। এগুলো আধুনিক জাতের চেয়ে কম পাপড়িযুক্ত বলে জানান তিনি । ওয়েই বলেন, ‘এটা ঠিক টাইম ট্রাভেলের মতো। আমরা সেই একই ফুলের দিকে তাকিয়ে আছি যার সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছিলেন আমাদের পূর্বপ্রজন্মের মানুষরা।’
প্রতিবেদন: শান্তা মারিয়া
সম্পাদনা: ফয়সল আবদুল্লাহ
সুপ্রিয় শ্রোতা অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে পৌছে গেছি আমরা। আমাদের প্রিয় এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে প্রত্যেকের রয়েছে কিছু ভূমিকা। আসুন জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এগিয়ে আসি। এখন বর্ষাকাল চলছে। বৃক্ষরোপণের জন্য সবচেয়ে উপযোগী মৌসুম। আসুন এই বর্ষামৌসুমে আমরা আমাদের চারপাশকে সবুজ করে তুলি। ব্যালকনিতে, ছাদে, বাড়ির সামনে যে কোন স্থানে ছোট বড় যে কোন রকম বাগান গড়ে তুলি।
আমাদের মায়ের মতো পরিবেশকে রক্ষা করি। এই আহ্বান জানিয়ে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি আমি শান্তা মারিয়া। আগামি সপ্তাহে আবার কথা হবে। চাই চিয়েন।
সার্বিক সম্পাদনা : ইয়ু কুয়াং ইউয়ে আনন্দী
লেখা, গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা: শান্তা মারিয়া
অডিও পরিকল্পনা ও সম্পাদনা: হোসনে মোবারক সৌরভ