দেহঘড়ি পর্ব-০৫২
উইপল্যাশ নেক ইনজুরির জন্য আকুপাংচার
কোনও ব্যক্তি যখন গাড়ি দুর্ঘটনার মতো কোনও দুর্ঘটনায় পড়ে, তখন প্রচণ্ড শক্তি ও গতির সঙ্গে তার দেহের সংঘর্ষ হয়। তেমন ক্ষেত্রে মাথা ও ঘাড় দ্রুত গতিতে প্রথমে সামনের দিকে তারপর পিছনের দিকে যায়। এমনকি আপাতদৃষ্টিতে যেটাকে সামান্য পড়ে যাওয়া বলে মনে হয়, সেটাও দীর্ঘস্থায়ী পরিণতি ডেকে আনতে পারে। নরম টিস্যুতে আঘাত, যাকে ‘উইপল্যাশ’ বলা হয়, সেটি আসলে অনেকগুলো সমস্যা যেমন কশেরুকা বা মেরুদণ্ডের ডিস্কের ক্ষতি, লিগামেন্ট ছিঁড়ে যাওয়া, রগ ও পেশীতে টান ইত্যাদির একটি বেদনার মিশ্রণ। স্নায়ুতে ক্ষতির অন্য উপসর্গগুলো প্রকাশিত হয় শারীরিক অসাড়তা, মাথাব্যথা, কানে ঝনঝন আওয়াজ হওয়া এবং মানসিক সমস্যার মধ্য দিয়ে।
একটি ‘ছোট’ আকস্মিক আঘাতের ট্রমা থেকেও রক্ত ও ‘ছি’ চলাচলে স্থবিরতা তৈরি হতে পারে। এক্স-রে বা এমআরআইয়ে এটি দেখা নাও যেতে পারে, তবে একজন রোগী এর প্রভাব ঠিকই অনুভব করতে পারেন। এর প্রভাবগুলোর মধ্যে থাকে ক্লান্তি, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, দীর্ঘমেয়াদী বিষণ্নতা ইত্যাদি।
আকুপাংচার হলো সব ধরনের আঘাতের চিকিৎসার একটি প্রাকৃতিক ও অত্যন্ত কার্যকর উপায়। আকুপাংচার টিস্যুর ফোলাভাব ও প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, ‘ছি’ ও রক্তের স্থবিরতা দূর করে এবং শক্তি পুনরুত্পাদন করে, যার কারণে শরীর সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।
আকুপাংচার তীব্র ও দীর্ঘস্থায়ী উভয় আঘাত উপশমে সাহায্য করে। দুর্ঘটনার পর যত তাড়াতাড়ি আকুপাংচার চিকিৎসা শুরু করা যায়, সুস্থতাও তত তাড়াতাড়ি আসে। যারা পুরানো আঘাতের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব মোকাবিলা করছেন তারাও এ চিকিৎসা থেকে উপকৃত হতে পারেন। আকুপাংচার কেবল ব্যথা কমায় না, সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায় এবং নিরাময়ের ক্ষমতা বাড়ায়।
আকুপাংচার চিকিৎসকরা আকুপাংচারের পাশাপাশি নির্দিষ্ট ভেষজ গ্রহণ, খাবার পরিবর্তন এবং ব্যায়ামের পরামর্শও দেন। এগুলো একজন রোগীকে সুস্থ হতে এবং ভবিষ্যত সমস্যাগুলো প্রতিরোধে সহায়তা করে।