বাংলা

দেহঘড়ি পর্ব-৭৯

CMGPublished: 2022-07-22 20:21:28
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

এ বিষয়ে বঙ্গভ্যাক্স টিমের গবেষক অধ্যাপক মামুন আল মাহতাব বলেন, শিগগিরই ৬০ জনকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এই টিকার ট্রায়াল শুরু হবে।

এই টিকা ডেল্টাসহ বিশ্বে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের ১১টি ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে শতভাগ কার্যকর বলে দাবি করছে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান গ্লোব বায়োটেক লিমিটেড। - অভি/রহমান

## ভালো থাকার আছে উপায়

ঘরোয়া উপায়ে দূর করুন কোষ্ঠকাঠিন্য

কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। কখনও কোষ্ঠকাঠিন্যে আক্রান্ত হননি এমন মানুষ পাওয়া যাবে না। নানা কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। আজ আমরা জেনে নেব কোষ্ঠকাঠিন্য সারার কতগুলো ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে:

পানি: পানির আরেক নাম জীবন। দীর্ঘদিনের পানিশূন্যতায় কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। তাই সবসময় হাইড্রেট থাকতে হবে। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের প্রতিদিন কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করা উচিত। তাছাড়া কাঁচা ফলমূলেও পানি রয়েছে, যা শরীরকে হাইড্রেট রাখতে সাহায্য করে।

ফাইবার যুক্ত খাবার: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে চিকিৎসকরা ফাইবার যুক্ত খাবার বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও মল নরম হয়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দৈনিক প্রায় ২৫ থেকে ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়া উচিত। ফাইবার দুই ধরনের - দ্রবণীয় অপরটি অদ্রবণীয়। দ্রবণীয় ফাইবার মলকে নরম করতে সাহায্য করে। আর অদ্রবণীয় ফাইবার মলকে দ্রুত বের হতে সাহায্য করে। ওটমিল, শস্যদানা, ফল, মটরশুটি ও শাকসবজিতে ফাইবার থাকে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে এ ধরনের ফাইবার জাতীয় খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে।

প্রোবায়োটিক খাবার: প্রোবায়োটিক খাবার হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। যে খাবারগুলো অন্ত্রের হজমে সহায়তাকারী ব্যাকটেরিয়াগুলোকে বৃদ্ধিতে সাহায্য করে সেগুলোকে প্রোবায়োটিক খাবার বলা হয়। যেমন দই একটি প্রোবায়োটিক খাবার, যা হজমশক্তি বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। হজম শক্তি বাড়াতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রোবায়োটিক খাবার বেশি করে খাওয়া উচিৎ।

কফি: কফিতে থাকা ক্যাফেইন মলত্যাগের উদ্দীপনা তৈরী করে। ক্যাফেইন অন্ত্রের পেশিগুলোকে সংকুচিত করে, যার কারণে মলত্যাগের ইচ্ছা তৈরি হয়। তাই ক্যাফিন গ্রহণে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ভালো ফল পাওয়া যায়। কিন্তু ক্যাফেইন শরীরকে ডিহাইড্রেশন করতে পারে। তাই ক্যাফেইন খেলে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।

লেবুর রস: লেবুর রস শরীর থেকে টক্সিন দূর করতে ও হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। যে কোনও খাবার, বিশেষ করে চায়ের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে অন্ত্রের উদ্দীপনা বেড়ে যায়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

ভিটামিন: ভিটামিন পরিপাকতন্ত্রকে আরও ভালোভাবে কাজ করতে সাহায্য করে অর্থাৎ ভিটামিন অন্ত্রের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিপাকতন্ত্রকে ভালো রাখতে প্রয়োজনীয় ভিটামিন গুলির মধ্যে রয়েছে, ভিটামিন সি, ভিটামিন b1, ভিটামিন b5, ভিটামিন b12এবং ফলিক এসিড।

বেকিং সোডা: কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে বেকিং সোডা ভালো কাজ করে। বেকিং সোডা পাকস্থলীর এসিড উপশমে সাহায্য করে পাশাপাশি অন্ত্রের উদ্দীপনা বাড়িয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে। ১ চা চামচ বেকিং সোডা আধা গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যে নিরাময়ে ভালো ফল পাওয়া যাবে।

ইসুবগুলের ভুষি: আমাদের দেশে কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ইসুবগুলের ভুষি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভূষি আসরে খুব কার্যকর। ইসবগুলের ভূষি এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে সকাল বেলা খালি পেটে নিয়মিত পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হবে।

বেলের শরবত: নিয়মিত বেলের শরবত পান করলেও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। এক গ্লাস পানিতে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ গ্রাম পাকা বেলর শাস মিশিয়ে দিনে দুইবার করে পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।

ব্যায়াম: নিয়মিত ব্যায়াম না করা এবং অলস জীবনযাপন কোষ্ঠকাঠিন্যের অন্যতম কারণ। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম যেমন হাঁটাচলা, সাঁতার কাটা, দৌড়ঝাঁপ, সাইক্লিং ইত্যাদি করা দরকার। - রহমান

## আপনার ডাক্তার

দেহঘড়ির আজকের পর্বে আমরা কথা বলেছি মলদ্বার বা পায়ুপথের নানা সমস্যা নিয়ে। পায়ুপথে অনেক ধরনের সমস্যা হয়। আমরা সাধারণত পাইলস ও ফিস্টুলা সম্পর্কেই বেশি শুনি। তবে পায়ুপথে ফিসার, এবসেস, প্রোলাপস ও হেমাটোমাও হয়ে থাকে। পায়ুপথের সমস্যা নিয়ে বিব্রতবোধ করেন অনেকে। সে কারণে কেউ কেউ সময়মতো চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন না। এতে জটিলতা বাড়ে, সঙ্গে বাড়ে ভোগান্তিও। অথচ পায়ুপথের বেশিরভাগ সমস্যা প্রাথমিক অবস্থায় শনাক্ত করে চিকিৎসা নেওয়া শুরু করলে জটিলতা এড়ানো যায়। পায়ুপথের বিভিন্ন সমস্যা নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আরিফ হোসেন। জনাব সহকারী আরিফ হোসেন কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের সার্জারি বিভাগের একজন সহকারী অধ্যাপক।

## কী খাবো, কী খাবো না

গুণের শেষ নেই ড্রাগন ফলের

ড্রাগন ফল একটি ক্যাকটাস-জাতীয় ফল। এটি মানবদেহের জন্য খুব উপকারী। ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ ড্রাগন ফ্রুট হজমে সহায়তা করে। রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এই ফল। বাংলাদেশে বর্তমানে ড্রাগন ফ্রুটের চাহিদা বাড়ছে, তাই উৎপাদনও বাড়ছে। একটি ড্রাগন ফলে ৬০ কিলো ক্যালরি এবং প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৯ থাকে। এ ফলে বিটা ক্যারোটিন ও লাইকোপিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টও থাকে। বিটা ক্যারোটিন শরীরে ভিটামিন এ-তে রূপান্তরিত হয়ে ত্বক, চোখ ও ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি করে। চলুন জেনে নিই ড্রাগন ফলের কিছু স্বাস্থ্য উপকারিতা:

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়: অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ ফল ড্রাগন। ফ্ল্যাভোনয়েড, ফেনোলিক অ্যাসিড এবং বিটাসায়ানিনের মতো অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে রয়েছে এতে। এই প্রাকৃতিক পদার্থগুলি দেহের কোষগুলোকে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী ফ্রি র‌্যাডিক্যালের হাত থেকে রক্ষা করে।

রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করে: ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে ড্রাগন ফল দারুন ভূমিকা রাখে। কারণ এ ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে। বেথ ওয়ারেন নিউট্রিশনের প্রতিষ্ঠাতা ও পুষ্টিবিদ বেথ ওয়ারেন বলেন, ‘অক্সিডেটিভ স্ট্রেসজনিত ক্ষতি এড়াতে যে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট প্রয়োজন তা ফল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায়। অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টের একটি প্রাচুর্যপূর্ণ উৎস হলো ড্রাগন ফল।’

হৃদযন্ত্র ভালো রাখে: ড্রাগন ফলের বীজে হার্টের জন্য উপকারী ওমেগা ৩ ও ওমেগা ৯ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে। নিউ ইয়র্কের পুষ্টিবিদ ও দ্য স্মল চেঞ্জ ডায়েটের লেখক কেরি গানস বলেন, ‘ড্রাগন ফলের ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডে প্রদাহনাশক উপাদান রয়েছে। একারণে এই ফল খেলে হার্টের রোগের ঝুঁকি ও জয়েন্টের ব্যথা কমে যায়। ড্রাগন ফল খেলে বিষণ্নতাও কমতে পারে।’

ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়: ফাইবার সমৃদ্ধ হওয়ায় ড্রাগন ফল রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ফলে এই ফল নিয়মিত খেলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বজায় থাকে। আর এতে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমে।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূরে রাখে: একটি ড্রাগন ফলে প্রায় ৭ গ্রাম ফাইবার থাকে, যা দৈনিক প্রয়োজনের চারভাগের প্রায় একভাগ। এটা অন্ত্রের বর্জ্য দূর করতে সাহায্য করে। তাই যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা রয়েছে তারা এই ফল খেতে পারেন এ সমস্যা প্রতিরোধে।

হাড়ের স্বাস্থ্য ঠিক রাখে: অধিকাংশ ফলের চেয়ে ড্রাগন ফলে ম্যাগনেসিয়াম বেশি থাকে। এটা হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করে এবং অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ করে। অস্টিওপোরোসিসে হাড় এতই দুর্বল হয়ে যায় যে সহজেই ভেঙে পড়তে পারে। এক বাটি ড্রাগন ফলে দৈনিক প্রয়োজনীয় ম্যাগনেসিয়ামের প্রায় ১৮ শতাংশ পাওয়া যায়।

নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী: ভিটামিন বি, ফোলেট ও আয়রন থাকায় ড্রাগন ফল গর্ভবতী নারীদের জন্য একটি আদর্শ ফল। ভিটামিন বি ও ফোলেট গর্ভাবস্থায় শক্তি সরবরাহ করে এবং নবজাতকের জন্মগত ত্রুটি রোধ করতে সহায়তা করে। তাছাড়া এ ফলে থাকা ক্যালসিয়াম ভ্রূণের হাড়ের বিকাশের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে ম্যাগনেসিয়ামও থাকে, যা মহিলাদের রজোনিবৃত্তি-সংক্রান্ত জটিলতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। জার্নাল অব ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল রিসার্চে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, মাসিক চক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে এমন নারীদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে ড্রাগন ফল বিশেষ সহায়ক হতে পারে।

আয়রনের ঘাটতি দূর করে: বিশ্বের একটি অতি পরিচিত পুষ্টি ঘাটতি হলো আয়রনের ঘাটতি। নারীদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা যায়। মাংস, মাছ, বাদাম ও ডাল জাতীয় খাবার থেকে অধিকাংশ আয়রন গ্রহণ করে শরীর। মাত্র কয়েকটি উচ্চ পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। এসব ফলের একটি হলো ড্রাগন ফল। ১০০ গ্রাম ড্রাগন ফলে ১.৯ মিলিগ্রাম আয়রন রয়েছে, যা দৈনিক সুপারিশকৃত মাত্রার ১০ শতাংশেরও বেশি।

রক্তশূন্যতা কমায়: হিমোগ্লোবিন উৎপাদনের মাধ্যমে ড্রাগন ফলে থাকা আয়রন দেহের রক্তস্বল্পতা কমাতে সাহায্য করে। নিউ ইয়র্ক সিটির আইকান স্কুল অব মেডিসিনের ডার্মাটোলজি বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট ক্লিনিক্যাল প্রফেসর গ্যারি গোল্ডেনবার্গের মতে, এই ফল আয়রন ঘাটতি জনিত রক্তস্বল্পতার অন্যান্য উপসর্গও প্রশমিত করতে পারে, যেমন অত্যধিক ক্লান্তি, ত্বকের বিবর্ণতা, মনোনিবেশে সমস্যা, মাথাব্যথা ও হাত-পায়ে ঠান্ডা অনুভূতি।

দৃষ্টিশক্তি রক্ষা করে: চোখের ক্ষেত্রে খুব উপকারি ড্রাগন ফ্রুট। এতে থাকা বিটা-ক্যারোটিন চোখের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ছানি পড়া এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশন প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।

চুলপড়া প্রতিরোধ করে: আয়রন ঘাটতির কারণে চুলপড়া সমস্যাও হতে পারে। নিয়মিত ড্রাগন ফল খেলে চুলপড়া কমতে পারে।- রহমান

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।

首页上一页12 2

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn