বাংলা

দেহঘড়ি পর্ব-৬০

CMGPublished: 2022-03-11 18:42:09
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

বৃহস্পতিবার বিশ্ব কিডনি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, যারা বুস্টার ডোজ নেননি, তারা যেন অতি দ্রুত নিয়ে নেন।

মন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত প্রায় ২২ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকাদানে বিশ্বের ২০০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থানে আট নম্বরে।

বাংলাদেশে একদিনে টিকা নিলেন ৬ লাখ মানুষ

বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারাদেশে টিকা নিয়েছেন ছয় লাখেরও বেশি মানুষ। তাদের মধ্যে প্রথম ডোজ টিকা নিয়েছেন ৭৬ হাজার জন। আর দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন চার লাখ ৩৪ হাজার মানুষ। এছাড়া বুস্টার ডোজ নিয়েছেন ৯৪ হাজার জন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সামান্য মদপানেও মস্তিষ্কের বিকৃতি

সামান্য মদপান করলেই মস্তিষ্কের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় বলে উঠে এসেছে এক গবেষণায়। যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এই গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘নেচার কমিউনিকেশন্স’এ।

গবেষকরা দেখেছেন, যারা সপ্তাহে খুব সামান্য পরিমাণেও মদ্যপান করেন তাদেরও মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের বিকৃতি ঘটে; ব্যাহত হয় স্মৃতিশক্তিসহ মস্তিষ্কের নানা ধরনের সক্রিয়তা।

গবেষকরা বলছেন, কেউ যদি দিনে গড়ে দুই বা তিন ইউনিট অ্যালকোহল সেবন করেন, তাহলে তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশের ক্ষয়ক্ষতি হয় আরও দ্রুত হারে। তাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশ তিন থেকে সাড়ে তিন বছর বেশি বুড়িয়ে যায়। এছাড়া তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মগুলোর গতি হ্রাস পায় এবং তারা অস্বাভাবিক আচরণ করতে থাকেন। অভি/রহমান

## আপনার ডাক্তার

রেটিনোপ্যাথি অব প্রিম্যাচুরিটি বা আরওপি-জনিত শিশু অন্ধত্ব নিয়ে। নবজাতক শিশুর অন্ধত্বের অন্যতম কারণ আরওপি। আরওপি হলো চোখের রেটিনার এমন একটি অস্বাভাকিতা যাতে কোনো শিশু আক্রান্ত হতে পারে ৩৪ সপ্তাহের আগে জন্মালে। একটি শিশু আরওপিতে আক্রান্ত হলে তার চিকিৎসার জন্য জন্মের ৩০ দিনের মধ্যেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ সনাক্ত করতে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা শুরু করতে হবে। এ সময়ের মধ্যে রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা শুরু না করা গেলে অন্ধত্ব এড়ানো যায় না। বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ৩০ লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করে। এদের মধ্যে প্রায় ২০ শতাংশ বা ৬ লাখ শিশুর জন্ম হয় অপরিণত অবস্থায়। অপরিণত অবস্থায় জন্ম নেওয়া এসব শিশুদের মধ্যে আবার ২০ থেকে ২২ শতাংশ আরওপি বা অপরিণত শিশু অন্ধত্বের ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে আজ আমাদের সঙ্গে যুক্ত হন ডাক্তার ফেরদৌস আক্তার জলি। তিনি কর্মরত ইব্রাহিম মেডিকেল কলেজ ও বারডেম জেনারেল হাসপাতালের সহযোগী অধ্যাপক হিসাবে।

#ভুলের_ভুবনে_বাস

বেশি পানি পান কিডনির জন্য ভালো না সব সময়

কিডনি মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলোর একটি। তবে গুরুত্বের তুলনায় এটি কম মনযোগ পায় অন্যান্য অঙ্গগুলোর তুলনায়। কিডনি নিয়ে আমরা সাধারণত যেসব আলোচনা শুনি বা খবর পড়ি তার বেশিরভাগ এর গুরুত্ব বা প্রতিরোধ নিয়ে নয়; বরং কে কোন গ্যাজেট কেনার জন্য বিক্রি করছে, সেটা নিয়ে।

পাঁজরের খাঁচার একেবারে গোড়ায় বসে থাকা দুটি শিমের আকৃতির ও মুষ্টির আকারের কিডনি বহুমুখী কাজ কাজ। এটি সারাদিন দেহ থেকে বর্জ্য অপসারণ করে, লোহিত রক্তকণিকা উৎপাদনকে উদ্দীপিত করে এবং শরীরের লবণ ও অ্যাসিডের ভারসাম্য বজায় রাখে।

কিডনি পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানিয়ে চলতে পারে। যদি আপনি একটি কিডনি হারান বা দান করেন, তবে অন্যটি নিয়ে স্বাভাবিক ও সুস্থ জীবনযাপন করে যেতে পারেন। তবে আমরা বেশিরভাগ মানুষই এই জটিল অঙ্গটিকে খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি না। ফলে আমাদের কিডনি কীভাবে কাজ করে এবং তাদের কী রোগ হয় সে সম্পর্কে ভুল ধারণার জন্ম নেয়। আজ আমরা আলোচনা করবো কিডনি সম্পর্কে এমন কয়েকটি ভুল ধারণা সম্পর্কে।

প্রচুর পানি পান করলে কি দূষিত পদার্থ বের হয়ে যায়?

শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করুন -- এমন কথা আমরা বহুবার শুনেছি। কিন্তু এ বক্তব্যের সমর্থনে তেমন কোনও বৈজ্ঞানিক প্রমাণ পাওয়া যায় না। পেনসিলভানিয়া ইউনিভার্সিটির কিডনি বিশেষজ্ঞ স্ট্যানলি গোল্ডফার্বের (Stanley Goldfarb) মতে, প্রচুর পরিমাণে পানি খেলে প্রস্রাবের পরিমাণও বেড়ে যায়। তার মতে, “কিডনি একটি জটিল ফিল্টার। পানি পান করার পরিমাণের সঙ্গে এই ফিল্টারটি কতটা ভাল কাজ করে তার তেমন সম্পর্ক নেই।"

তবে এর কিছু ব্যতিক্রমও আছে। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের সেন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালের রবিন ল্যাংহাম (Robyn Langham) বলেন, “যদি আপনার কিডনিতে কখনও পাথর হয়ে থাকে, তাহলে ভবিষ্যতে ব্যথা প্রতিরোধে প্রচুর পানি পান করা গুরুত্বপূর্ণ। আপনি যদি চরম আবহাওয়ায় থাকেন, তবে আপনাকে বেশি পানি খেতে হবে যাতে আপনার পানিশূন্যতা না হয়। তবে স্বাভাবিক পরিস্থিতেতে বেশি পানি পান আপনার কিডনিকে আরও ভাল বা খারাপ কাজ করার ক্ষেত্রে কোনও সাহায্য করবে না।"

তাহলে এই জনপ্রিয় ভুল ধারণাটি কোথা থেকে শুরু হয়েছিল? ল্যাংহাম বলেন, "আমি মনে করি এই ভুল তথ্যটি বোতলজাত পানি শিল্পের বিক্রি বাড়ানোর প্রয়োজন থেকে উদ্ভুত হয়েছে।

উচ্চ-ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণে কি কিডনিতে পাথর হয়?

বেশিরভাগ কিডনি-পাথর ক্যালসিয়াম থেকে সৃষ্ট। তাই এটা আশ্চর্যের কিছু নয় যে, আমাদের মধ্যে অনেকেই মনে করেন দুধ বা ক্যালসিয়াম-সমৃদ্ধ খাবার এড়িয়ে চললে কিডনিতে পাথর হওয়ার যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতা থেকে দূরে থাকা যায়। তবে মনে রাখা দরকার, ক্যালসিয়ামের অভাব আমাদের যে সমস্যায় ফেলতে পারে, তার চেয়ে বেশি ফেলতে পারে অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম।

ডিউক ইউনিভার্সিটি স্কুল অফ মেডিসিনের ম্যাথিউ স্পার্কস (Matthew Sparks) বলেন, "খাদ্যের ক্যালসিয়াম আসলে কিডনিতে পাথর হওয়া থেকে রক্ষা করে। সবচেয়ে সাধারণ ধরনের কিডনি পাথর দুটি উপাদান দিয়ে গঠিত -- ক্যালসিয়াম ও অক্সালেট যা অনেক শাকসবজি ও ফলের মধ্যে পাওয়া যায়। অক্সালেট যখন প্রস্রাবে জমা হয়, তখন এটি রক্ত প্রবাহ থেকে ফিল্টার করা ক্যালসিয়ামের সাথে মিশে কিডনিতে পাথর তৈরি করতে পারে। আমাদের খাদ্যের ক্যালসিয়াম এটি ঘটতে বাধা দেয়। খাদ্যের ক্যালসিয়াম অক্সালেটের সাথে অন্ত্রের মধ্যেই আবদ্ধ হতে পারে এবং তারপর শরীর থেকে নিরাপদে মলের মধ্য দিয়ে বের করে দিতে পারে। ফলে অক্সালেট আর রক্তের প্রবাহে শোষিত হতে, কিডনিতে প্রবেশ করতে এবং পাথর তৈরি করতে পারে না।

কিডনি রোগ থাকলে কি প্রকাশ পাবেই

কিডনি রোগ প্রতারণামূলক হতে পারে। কিডনি রোগের শারীরিক লক্ষণগুলো খুব সূক্ষ্ম, যেমনটি হৃদরোগের ক্ষেত্রে নয়। ল্যাংহাম বলেন, আপনার কিডনিতে পাথর বা সংক্রমণ না থাকলে কিডনি খুব কমই আপনাকে জ্বালাবে। তাছাড়া, আপনি কতটা প্রস্রাব করেন, তা থেকেও আপনার কিডনির স্বাস্থ্য সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যায় না। কিডনি বিকল হওয়ার পরেও প্রস্রাব করার ক্ষমতা দীর্ঘ সময় ধরে ঠিক থাকতে পারে। তাই আপনার প্রস্রাব এখনও ঠিক মানে আপনার কিডনির কার্যকারিতাও ঠিক এমন নিশ্চয়তা নেই।

যদি কারও কিডনি বিকল হয়, তবে কিডনির কার্যকারিতার মাত্র ১০ থেকে ১৫ শতাংশে নেমে না আসা পর্যন্ত তারা এটি সম্পর্কে জানতেও পারেন না। স্পার্কসের মতে, এ বিষয়টি কিডনি রোগ নির্ণয়কে কঠিন করে তোলে। তবে আপনার কিডনির রোগ পরীক্ষা করার উপায় আছে। একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তপ্রবাহে দূষিত উপাদান ও বর্জ্য পদার্থের মাত্রা পরিমাপ করা যায়, যেটা থেকে চিকিৎসকরা বলতে পারেন, কিডনি কতটা দক্ষতার সাথে কাজ করছে।

একইভাবে, একটি প্রস্রাব পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্রাবের কিছু প্রোটিন সনাক্ত করা ও পরিমাপ করা যায়, যেটার উপস্থিতি থাকলে বোঝা যায় কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে না। ল্যাংহামের মতে, রক্তচাপও কিডনি রোগের ঝুঁকির একটি ভাল সূচক। কিডনির অনেক কাজের মধ্যে একটি হলো হরমোন নিঃসরণ করা, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তিনি বলেন, "কিডনি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সাথে সাথে আপনার উচ্চ রক্তচাপ তৈরি হয়, এবং আপনার উচ্চ রক্তচাপ হলে আপনার কিডনির ক্ষতি হতে পারে।”

কিডনির রোগ কি প্রতিরোধ করা যায়?

একটি প্রচলিত সাধারণ ভুল ধারণা হলো কিডনির রোগ প্রতিরোধ করা যায় না। ল্যাংহাম বলেন, এমন ভুল ধারণা অনেক চিকিৎসকের মধ্যেও আছে। বাস্তবতা হলো অনেক কিডনি রোগ প্রতিরোধ করা যায় বা অন্তত রোগের গতি ধীর করা যায়, যদি কিডনিকে ঝুঁকিতে ফেলতে পারে এমন কারণগুলো সম্পর্কে সচেতন হওয়া যায়। উদাহরণস্বরূপ, ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ বেশিরভাগ কিডনি রোগের সাথে সম্পর্কিত। যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তথ্য বলছে, ডায়াবেটিস আছে এমন ৩ জনের মধ্যে ১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ এবং উচ্চ রক্তচাপ আছে এমন ৫ জনের মধ্যে ১ জন দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগে আক্রান্ত৷ গোল্ডফার্ব বলেন, “তাই কেউ যদি এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তবে এটি কিডনি রোগের ঝুঁকি কমিয়ে দেবে।"

বার্ধক্য, ধূমপান ও স্থূলতা মানুষকেও ঝুঁকিতে ফেলে। স্পার্কস মনে করেন, কিডনি রোগ প্রতিরোধে ব্যায়াম, সঠিক মাত্রায় পানি গ্রহণ এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া আপনার যদি কিডনি রোগের পারিবারিক ইতিহাস থাকে, তবে নিয়মিত কিডনি পরীক্ষার করাতে হবে যাতে ক্ষতি প্রতিরোধ করা যায়। - রহমান

‘দেহঘড়ি’ অনুষ্ঠান সম্পর্কে আপনাদের মতামত ও পরামর্শ জানতে চাই আমরা। আমাদের ফেইসবুক পেইজ facebook.com/CMGbangla অথবা ওয়েবসাইট bengali.cri.cn’র মাধ্যমে জানাতে পারেন আপনাদের মতামত বা পরামর্শ।

首页上一页12 2

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn