বাংলা

একাদশ বেইজিং সিয়াংশান ফোরাম

CMGPublished: 2024-09-14 11:33:15
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সেপ্টেম্বর ১৬: সম্প্রতি সিয়াংশান নিরাপত্তা ফোরাম বেইজিংয়ে আয়োজিত হয়। ফোরামের মূল প্রতিপাদ্য ছিল: ‘যৌথভাবে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যত উপভোগ করা’ প্রসঙ্গে হয়। চলতি বছর ফোরামে অংশগ্রহণকারী দেশ ও অতিথির সংখ্যা ছিল রেকর্ডসংখ্যক। শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের ৫ শতাধিক প্রতিনিধি এবারের ফোরামে অংশগ্রহণ করেন। এর মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সেনাবাহিনীর সর্বাধিনায়ক পর্যায়ের প্রতিনিধি ছিলেন ৩০ জনেরও বেশি।

ফোরামে সহযোগিতার মাধ্যমে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতা সুরক্ষা করা, বহুমেরুর শৃঙ্খলা গড়ে তোলা, ভূ-নিরাপত্তায় বৈশ্বিক দক্ষিণের ভূমিকা, এবং নিরাপত্তা প্রশাসনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করা হয়। ২০০৬ সালে প্রথম সিয়াংশান ফোরাম আয়োজিত হয়েছিল। তখন মাত্র ডজন খানেক দেশের গবেষণা সংস্থা, চীনে নিযুক্ত মিলিটারি অ্যাটাশে, এবং চীনের সামরিক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেছিলেন। কিন্তু এবারের ফোরামে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ইউক্রেন ও ইসরায়েলসহ শতাধিক দেশ ও অঞ্চলের ৫ শতাধিক প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন। এদিকে, বেইজিং সিয়াংশান ফোরামকে আন্তর্জাতিক প্রতিরক্ষা থিঙ্ক ট্যাঙ্কগুলোর মধ্যে মূল ‘ট্র্যাক টু’ একাডেমিক বিনিময় থেকে উর্ধ্বতন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা ও পণ্ডিতদের মধ্যে ‘ট্র্যাক ওয়ান অ্যান্ড এ হাফ’ উচ্চ-স্তরের সংলাপে উন্নীত করা হয়েছে।

শুক্রবার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনা প্রতিরক্ষামন্ত্রী তং চুন অংশগ্রহণ করেন এবং ভাষণ দেন। তিনি বলেন, একটি অভিন্ন নিরাপত্তার সমাজে আমাদেরকে যৌথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে হবে, এবং ঐক্যের ভিত্তিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা উন্নত করতে হবে। অশান্তি ও বিরোধের মুখে, আমাদেরকে রাজনৈতিক সমাধানের ওপর আস্থা জোরদার করতে হবে। আমাদের উদ্দেশ্য ও ন্যায্য অবস্থানে উপসর্গ ও মূল কারণ—উভয়ের চিকিত্সার ধারণা প্রতিষ্ঠা এবং যৌথভাবে সুশৃঙ্খল বিশ্বের জন্য কাজ করে যেতে হবে।

সবাই বলে বিশ্বের শান্তির জন্য এই ফোরাম। তবে, পশ্চিমা দেশগুলোর উদ্যোগে আয়োজিত ফোরামগুলো দ্বন্দ্বমূলক হট স্পট তৈরির ওপর বেশি ফোকাস করে। চীনের উদ্যোগে ‘বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব’ আসলে শুধু আমাদের নিজেদের নিরাপত্তার জন্য নয়, এ ধারণা বৈশ্বিক নিরাপত্তার জন্য। আমরা অভিন্ন, বহুমুখী, সহযোগিতামূলক ও টেকসই নিরাপত্তার ধারণায় বিশ্বাস করি। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্ব ও ভূখন্ডের অখন্ডার প্রতি সম্মান দেখাতে হবে এবং অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে হবে। অন্য দেশের নিরাপত্তাহীনতার বিনিময়ে নিজের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ধারণারও বিরোধিতা করা হয়েছে প্রস্তাবে। সংলাপ ও শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে দেশের সাথে দেশের মতভেদ দূর করাও ওপর প্রস্তাবে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। একপক্ষবাদের বিরোধিতাও করা হয়েছে। যৌথভাবে আঞ্চলিক মতভেদ, সন্ত্রাসবাদ, জলবায়ুর পরিবর্তন, ইন্টারনেটের নিরাপত্তা ও জৈব নিরাপত্তাসহ বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলার প্রস্তাব করা হয়েছে এতে।

এবারের ফোরামে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরেন। ফোরামে আরব বিশ্বের কন্ঠ শোনা গেছে; আবার ইসরায়েলের প্রতিনিধিরাও নিজেদের মতামত প্রকাশ করেছেন। সিয়াংশান ফোরাম হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য একটি উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম। বর্তমান বিশ্ব শান্ত ও স্থিতিশীল নয়। একটি স্থায়ী শান্তি ও সাধারণ নিরাপত্তার বিশ্ব গড়ে তোলা হলো সারা বিশ্বের জনগণের অভিন্ন প্রত্যাশ্যা ও দায়িত্ব। সিয়াংশান ফোরাম ঠিকই শান্তি বাস্তবায়নের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হিসেবে কাজ করবে বলে আশা করা যায়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn