বাংলা

‘একসাথে আধুনিকীকরণ অগ্রগতি অর্জন করা’ চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা বিশ্বের জন্য উপহার

CMGPublished: 2024-09-03 16:50:12
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

৪ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বেইজিংয়ে চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা শীর্ষ ফোরাম অনুষ্ঠিত হবে। চীন এবং আফ্রিকার ৫০টিরও বেশ দেশের শীর্ষনেতা ও প্রতিনিধিরা বেইজিংয়ে মিলিত হবেন।

এই বছরের ফোরামের প্রতিপাদ্য হল, “আধুনিকীকরণের অগ্রগতি এবং চীন-আফ্রিকা অভিন্ন কল্যাণের উচ্চ-স্তরের কমিউনিটি গড়ে তোলার জন্য একসাথে কাজ করা।” এটি থেকে দেখা যায় যে প্রতিটি দেশে আধুনিকীকরণের পথ অন্বেষণ করা এই ফোরামের একটি মূল বিষয়বস্তু। চীন হল বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ, যেখানে আফ্রিকা মহাদেশের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলোর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। উভয়পক্ষই স্বাধীনতা, ন্যায্যতা এবং ন্যায়বিচার অর্জনের আকাঙ্ক্ষা করে এবং আধুনিকায়নের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের মানুষের জন্য একটি উন্নত জীবন অর্জনের আশা করে।

চীন, আফ্রিকান দেশগুলো উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধাগুলোর মুখোমুখি হয়েছিল তাই সে সম্পর্কে ভালোভাবে জানে। “আফ্রিকার চাহিদার যত্ন নেয়া এবং অসুবিধাগুলি সমাধান করা” চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা সম্পর্কে অনেক আফ্রিকানের সাধারণ অনুভূতি।

নতুন যুগের প্রেক্ষাপটে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ, বৈশ্বিক নিরাপত্তা উদ্যোগ এবং বৈশ্বিক সভ্যতা উদ্যোগের প্রস্তাব করেছেন, যা আফ্রিকান দেশগুলোর কাছ থেকে ব্যাপক সমর্থন পেয়েছে। যার মাধ্যমে চীন ও আফ্রিকার অভিন্ন কল্যাণের কমিউনিটির উন্নয়ন নতুন গতি পেয়েছে। শুরু থেকে, চীন-আফ্রিকা সহযোগিতা অর্থনীতি ও বাণিজ্য, দারিদ্র্য বিমোচন এবং উন্নয়নের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। ধীরে ধীরে তা দেশ পরিচালনা, জনগণের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময়, শান্তি ও নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য অর্জনসহ আরও বাস্তব সহযোগিতার ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

আজ, আফ্রিকা মহাদেশটি আধুনিকীকরণের পথ ও মডেল অন্বেষণের একটি জটিল সময়ের মধ্যে রয়েছে। অনেক আফ্রিকান নেতা এই শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের কয়েকদিন আগে চীনে এসেছেন এবং চীনের আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়াকে একাধিক দিক থেকে বোঝার জন্য স্থানীয় প্রদেশ ও শহরগুলো পরিদর্শন করেছেন।

জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট মানাঙ্গাগওয়ার চীন সফরের প্রথম স্টপ ছিল শেনচেন শহর। মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ন্যুসি প্রথম স্টপ হিসেবে সাংহাইকে বেছে নেন। মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট তোয়াদেরার ছুংছিং সফর করেছেন, কারণ “দুই পক্ষের একই ভৌগলিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে।” তিনি জানতে চেয়েছিলেন, চীনের অন্তর্দেশীয় শহরগুলো কীভাবে “বিশ্বের কাছে উন্মুক্ত” হতে পেরেছে।

মাদাগাস্কারের ২০ হাজার অ্যারিরি ব্যাঙ্কনোটে চীনা হাইব্রিড ধানের চিত্র রয়েছে। যার মাধ্যমে হাইব্রিড চালের প্রচার এবং কার্যকরভাবে দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতার হারকে উন্নত করার জন্য স্থানীয় এলাকায় কাজ করা চীনা বিশেষজ্ঞদের অসামান্য অবদানকে স্মরণ করার হয়েছে। কিছু আফ্রিকান স্কলার বলেছেন যে আফ্রিকার সাথে চীনের সহযোগিতার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য হল, এটি ‘আফ্রিকার চাহিদা দ্বারা চালিত’, যা আরও দেশগুলোকে ‘আফ্রিকান কণ্ঠস্বর শুনতে এবং সমান অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করতে ইচ্ছুক’ হতে পরিচালিত করেছে। চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার ফোরাম সবসময়ই স্বেচ্ছাসেবী ও সমতার ভিত্তিতে আফ্রিকার জনগণের জীবন-জীবিকার বাস্তবিক সমস্যা সমাধানের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

এটা বলা যেতে পারে যে অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের প্রক্রিয়ায় চীন ও আফ্রিকার মধ্যে বিনিময় একটি অভূতপূর্ব ঘটনা। চীন এবং আফ্রিকা উভয়ই ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের শিকার হয়েছিল কিন্তু পরবর্তীতে নিজের প্রচেষ্টায় দ্রুত উন্নয়ন অর্জন করতে পেরেছে। এই ধরনের বৃহৎ আকারের গভীর আদান-প্রদান এবং সহযোগিতা পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়া এবং ধীরে ধীরে বিশ্ব উন্নয়নের জন্য একটি নতুন ইঞ্জিন হয়ে উঠা একটি যুগান্তকারী ব্যাপার।

চীন-আফ্রিকা সহযোগিতার সাফল্য চীন এবং অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলোর কাছ থেকে শেখার জন্য একটি মডেল হয়ে উঠতে পারে। উন্নয়নশীল দেশগুলো তাদের উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় সম্মুখীন হওয়া চ্যালেঞ্জ ও অসুবিধাগুলো সম্পর্কে ভালভাবে জানে। চীন সমতার ভিত্তিতে জনগণের জীবিকা সমস্যা সমাধানের জন্য সমস্ত দেশের সাথে কাজ করতে ইচ্ছুক এবং যে কোনও ভূ-রাজনৈতিক কারসাজির বিরোধিতা করে। আমি বিশ্বাস করি এটা বাংলাদেশসহ সব উন্নয়নশীল দেশের আকাঙ্খাও। চীন তাদের উন্নয়ন সাধনায় সকল উন্নয়নশীল দেশের জন্য সহযাত্রী হতে আশা করে এবং আশা করে যে আমরা একসাথে বিশ্বের সামনে আরও সম্ভাবনা আনতে হাতে হাত রেখে এগিয়ে যেতে পারব।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn