উন্নয়নের পাশাপাশি চীন বিশ্বের সঙ্গে সুযোগ শেয়ার করছে
উন্মুক্তকরণ সমসাময়িক চীনের একটি স্বতন্ত্র প্রতীক। সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নীতি চালু হওয়ার পর থেকে, চীন সর্বদা বিশ্বের জন্য উন্মুক্ত করার মৌলিক জাতীয় নীতি মেনে চলছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে যে, চীন আরো উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণের নতুন কাঠামো তৈরি করছে। যখন চীন সর্বাত্মকভাবে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গঠন শুরু করে, এবং বিশ্ব অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের মন্দার পটভূমিতে, চীনের উচ্চ মানের উন্মুক্তকরণ বিশ্ব অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে, তখন বিশ্ব বাণিজ্যকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেরণা দেয়।
প্রথমত, চীন বিশ্বকে একটি বিরাট বাজারের সুযোগ দিতে পারে।
চীনের জনসংখ্যা ১৪০ কোটিরও বেশি এবং ৪০ কোটিরও বেশি মধ্যম আয়ের গোষ্ঠী চীনের বিশাল সুবিধা। নতুন উন্নয়ন কাঠামোয়, চীন দেশীয় চক্র শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে, আন্তর্জাতিক চক্রের জন্য আকর্ষণ এবং চালিকাশক্তি বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী ও শক্তিশালী প্রবর্তক হয়ে উঠেছে। বর্তমানে, চীন ১৪০টিরও বেশি দেশ ও অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়িক অংশীদার হয়ে উঠেছে। চীন টানা ৭ বছর ধরে বিশ্বের পণ্য বাণিজ্যের বৃহত্তম দেশ, বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ভোক্তা বাজার এবং বৃহত্তম অনলাইন খুচরা বাজার দেশ হিসেবে নিজের অবস্থান বজায় রেখেছে।
দ্বিতীয়ত, বিশ্বকে চীনের ব্যবস্থাগত এবং নীতিগত উন্মুক্তকরণের সুযোগ প্রদান করছে চীন।
চীন নিজের অবাধ বাণিজ্যিক পাইলট অঞ্চল উন্নতির কৌশল বাস্তবায়ন জোরদার করেছে, দেশের বিশ্বব্যাপী উচ্চ-মানের অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল নেটওয়ার্ক প্রসারিত করেছে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত, চীন ৭ রাউন্ডে সারা দেশে ২২টি অবাধ বাণিজ্যিক পাইলট অঞ্চল এবং ১টি অবাধ বাণিজ্য বন্দর প্রতিষ্ঠা করেছে, এর ফলে দেশের পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ ও মধ্য অঞ্চলগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে সংস্কার ও উন্মুক্তকরণের নতুন কাঠামো সৃষ্টি করেছে। উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ৩০২টি ব্যবস্থাগত উদ্ভাবনের ফলাফলকে দেশব্যাপী বিস্তার ও প্রচার করা হয়েছে, যেমন বাজার অ্যাক্সেস, কাস্টমস ক্লিয়ারেন্স সুবিধা এবং ন্যায্য প্রতিযোগিতা। চীন সবার আগে শাংহাই, কুয়াংতুং, থিয়ানচিন, ফুজিয়ান, বেইজিং এবং অন্যান্য যোগ্য অবাধ বাণিজ্য পাইলট অঞ্চল এবং হাইনান মুক্ত বাণিজ্য বন্দরে প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক উচ্চ-মানের অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য নিয়মগুলোর একীকরণের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছে, একটি জাতীয় ব্যবস্থাগত উন্মুক্তকরণ প্রদর্শন অঞ্চল তৈরি করছে, এবং ক্রমাগত ব্যবস্থাগত উন্মুক্তকরণ প্রসারিত করছে।
চীন একটি বাজার-ভিত্তিক, আইনী ও আন্তর্জাতিক ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করে চলেছে, বড় আকারে কর কমিয়েছে, মেধাস্বত্ব সুরক্ষা শক্তিশালী করেছে এবং উচ্চ মানের অবাধ পুঁজি বিনিয়োগ এবং সুবিধাকরণ নীতিব্যবস্থা বাস্তবায়ন করেছে। একটি বিস্তৃত ক্ষেত্রে এবং গভীর স্তরে উন্মুক্ত অর্থনীতির উন্নতির জন্য নীতিগত ব্যবস্থাগুলোকে সহজতর করেছে।
তৃতীয়ত, চীন আন্তর্জাতিক সহযোগিতা গভীর করার সুযোগ বিশ্বকে দিয়েছে।
চীন সর্বদা অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন মেনে চলে, বহুপাক্ষিক এবং দ্বিপাক্ষিক আঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছে, নতুন পরিস্থিতিতে বহুপাক্ষিকতার অনুশীলন ক্রমাগত সমৃদ্ধ করেছে। চীন সক্রিয়ভাবে বহুপাক্ষিক প্রক্রিয়া যেমন ডাব্লিওটিও, জি-২০ এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা সংস্থার ভূমিকা পালনে সমর্থন করে। চীন সক্রিযভাবে ব্রিকস, এসসিও এবং অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতায় গভীরভাবে অংশগ্রহণ করছে। সেই সঙ্গে চীনের স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ এবং আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন করতে পারে এমন আরও চীনা প্রস্তাব দিয়েছে।
বর্তমানে, চীন ১৫০টিরও বেশি দেশ এবং ৩০টিরও বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে "বেল্ট অ্যান্ড রোড" ইনিশিয়েটিভ সংশ্লিষ্ট দুই শতাধিকটিরও বেশি সহযোগিতার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, ৩ সহশ্রাধিক বেশি সহযোগিতা প্রকল্প গঠন করেছে, প্রায় এক ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ সৃষ্টি করেছে এবং যৌথভাবে নির্মিত দেশগুলোর উন্নয়নে শক্তিশালী গতি যোগ করেছে। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ ইনিশিয়েটিভের যৌথ নির্মাণ শুধুমাত্র সহ-নির্মাণকারী দেশগুলোর জন্যই বাস্তব সুবিধা নিয়ে আসেনি, বরং অর্থনৈতিক বিশ্বায়নের স্বাস্থ্যকর উন্নয়ন, বৈশ্বিক উন্নয়ন সমস্যা সমাধান এবং বিশ্ব শাসনব্যবস্থার উন্নতিতেও ইতিবাচক অবদান রেখেছে।
নতুন যাত্রায়, চীন উচ্চ-মানের উন্মুক্তকরণের চেষ্টা বন্ধ করবে না এবং লভ্যাংশ দ্রুত গতিতে মুক্তি পাবে। চীন বিশ্বকে নতুন উন্নয়নের সাথে নতুন সুযোগ প্রদান দেবে, একটি উন্মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতি গড়ে তুলতে এবং মানবজাতির সাধারণ সমস্যাগুলো সমাধান করতে আরও চীনা জ্ঞান, চীনা সমাধান এবং চীনা শক্তি সরবরাহ করবে।