বাংলা

চলতি প্রসঙ্গ: বিশ্বে চীনা ব্র্যান্ডের সাফল্য ও চ্যালেঞ্জ

CMGPublished: 2024-05-14 16:27:49
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

গত দশই মে ছিল ‘চীনা ব্র্যান্ড দিবস’। এ দিবসে আবারও বিশ্বের মঞ্চে চীনের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রতি মানুষের দৃষ্টি নতুন করে আকৃষ্ট হয়। চলতি বছর চীনা ব্র্যান্ড দিবসের মূল প্রতিপাদ্য ছিল: ‘চীনা ব্র্যান্ড, বিশ্বের সাথে ভাগাভাগি করা; দেশীয় ট্রেন্ডি ব্র্যান্ড, উন্নত গুণগত মানের মাধ্যমে ভবিষ্যতকে গড়ে তোলা’। এটি কেবল যে দেশীয় ব্র্যান্ডগুলোর উজ্জ্বল সাফল্যের প্রশংসা, তা নয়; বরং ভবিষ্যতে এগুলোর আন্তর্জাতিকায়নের প্রত্যাশারও বহিঃপ্রকাশ। আমরা এখন একটু নজর দেবো চীনের বৈশ্বিক ব্র্যান্ডগুলোর দিকে।

হুয়াওয়েই। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় যোগাযোগ সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক এবং স্মার্টফোন ব্র্যান্ড হিসাবে, হয়াওয়েই বিশ্ব বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর অন্যতম প্রতিনিধি। বিদেশী বাজারে হুয়াওয়েই’র সাফল্য মূলত এর উদ্ভাবনী প্রযুক্তি এবং শক্তিশালী গবেষণা ক্ষমতার সঙ্গে জড়িত। ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে হুয়াওয়েই মোবাইল ফোনের বৈশ্বিক বিক্রির সংখ্যা ১ কোটি ৩১ লাখ, যা ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় ১০৫ শতাংশ বেশি। এর মধ্য দিয়ে হুয়াওয়েই ব্র্যান্ডের প্রতিযোগিতার শক্তি এবং বৈশ্বিক ভোক্তাদের ব্যাপক স্বীকৃতি ফুটে ওঠে।

সিয়াওমি। চীনে শীর্ষস্থানীয় মোবাইল ইন্টারনেট কোম্পানি হিসেবে সিয়াওমি-র স্মার্টফোন আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপকভাবে স্বীকৃত। বর্তমানে, সিয়াওমি বিশ্বের অনেক দেশ ও অঞ্চলের বাজারে সফলভাবে প্রবেশ করেছে এবং বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকে সিয়াওমি’র বৈশ্বিক বিক্রির সংখ্যা ছিল ৪ কোটি ৭ লাখ, যা বিশ্বে তৃতীয় স্থানে রয়েছে।

হায়ার: চীনের হোম অ্যাপ্লায়েন্স উত্পাদন শিল্পে একটি প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে, হায়ার শুধুমাত্র চীনা বাজারের একটি বড় অংশ দখল করেনি, সফলভাবে বিশ্ব বাজারেও প্রবেশ করেছে। ২০২৩ সালে হায়ার স্মার্ট হোমের সামগ্রিক আয় ছিল ২৬১(একষ্টি).৪২৮ বিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭.৩ শতাংশ বেশি। বিদেশের বাজারে হায়ারের আয়ের পরিমাণ ছিল ১৩৬ছত্রিশ.৪ বিলিয়ন ইউয়ান, যা ২০২২ সালের একই সময়ের তুলনায় ৭.৬ শতাংশ বেশি।

এ ছাড়া, বিশ্বের বাজারে চীনের উচ্চ-গতির রেল এবং ফটোভোলটাইক পণ্যগুলোর অসামান্য সাফল্যও উল্লেখযোগ্য। বিগত ২০ বছরে চীনের উচ্চ-গতির রেলের দ্রুত বিকাশ চীনের ‘বুদ্ধিমান উত্পাদন’ প্রত্যক্ষ করেছে। ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত, চীনের উচ্চ-গতির রেলের মোট দৈর্ঘ্য ছিল ৩৮আটত্রিশ হাজার কিলোমিটার, যা বিশ্বের অপারেটিং মাইলেজের ৭০ শতাংশ। চীনের ফটোভোলটাইক পণ্যের রপ্তানি বহু বছর ধরে বিশ্বে প্রথম স্থান অধিকার করে আছে, যা বৈশ্বিক পরিচ্ছন্ন জ্বালানির উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদানও রাখছে।

এটা স্পষ্ট যে, চীনা ব্র্যান্ডগুলো ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক ও প্রভাবশালী শক্তির প্রদর্শন দেখিয়েছে। যাই হোক, চীনা ব্র্যান্ডগুলো আন্তর্জাতিক বাজারে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। চীনা ব্র্যান্ডগুলোকে এখনও বিশ্বব্যাপী গ্রাহকদের চাহিদা আরও ভালোভাবে মেটাতে কাজ করতে হবে।

‘প্রথমত, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা ক্রমশ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে। তীব্র আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার জন্য চীনা ব্র্যান্ডগুলোকে ক্রমাগত তাদের গুণগত মান, পরিষেবা এবং উদ্ভাবনী ক্ষমতা উন্নত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, মেধাস্বত্ব রক্ষা সমস্যাও আন্তর্জাতিক বাজারে চীনা ব্র্যান্ডগুলোর সম্মুখীন এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। মেধাস্বত্ব রক্ষা সম্পর্কে সচেতনতা জোরদার করা এবং মেধাস্বত্ব রক্ষাসংক্রান্ত ক্ষমতা উন্নত করাই হল আন্তর্জাতিক বাজারে পা দেওয়া চীনা ব্র্যান্ডগুলোর একমাত্র উপায়। এবারের চীনা ব্র্যান্ড দিবস উপলক্ষ্যে আমরা আনন্দের সাথে দেখেছি যে, আরও বেশি সংখ্যক চীনা ব্র্যান্ড আন্তর্জাতিক উন্নয়নের দিকে মনোনিবেশ করতে শুরু করেছে, আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোর সাথে সহযোগিতা ও বিনিময়ের মাধ্যমে চীনা ব্র্যান্ডের প্রতিযোগিতামূলক শক্তি ক্রমশ বাড়িয়ে যাচ্ছে। এটি কেবল যে চীনা ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি সৃষ্টি করতে সহায়ক, তা নয়; বরং, চীনের অর্থনীতির টেকসই উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তিও যুগিয়েছে।

ভবিষ্যতে, আরও বেশি চীনা ব্র্যান্ড বিশ্ব মঞ্চে প্রবেশ করবে বলে আশা করি। চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বের ভোক্তাদের কাছে আরও বেশি শ্রেষ্ঠ পণ্য ও পরিষেবা সরবরাহ করতে সক্ষম হবে বলে অনেকে বিশ্বাসও করেন।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn