আজকের টপিক: চীনে নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি বিশ্বের ‘সবুজ যাতায়াতের’ একটি নতুন অধ্যায়ের নেতৃত্ব দেবে
এপ্রিল ৩: বৈশ্বিক গাড়ি শিল্প সংস্কারের যুগে চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি বা পরিচ্ছন্ন জ্বালানিচালিত গাড়ি বা বৈদ্যুতিক গাড়ি একটি যুগান্তকারী মাইলফলক স্পর্শ করেছে। টানা নয় বছর ধরে বৈদ্যুতিক গাড়ির বৈশ্বিক উত্পাদন ও বিক্রি- উভয় খাতেই চীন চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০২৩ সালে জাপানকে ছাড়িয়ে চীন বিশ্বের বৃহত্তম গাড়ি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়। এই ধারাবাহিক উজ্জ্বল সাফল্যের মাধ্যমে চীনের নতুন শক্তির গাড়ি শিল্পের শক্তিশালী ক্ষমতা প্রতিফলিত হয়েছে। পাশাপাশি, এই পরিচ্ছন্ন জ্বালানির গাড়ি শিল্পের উন্নয়ন এগিয়ে নিতে চীন সরকারের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ও নিরলস প্রচেষ্টাও ফুটে উঠেছে।
চীনের নতুন শক্তির যানবাহন শিল্পের উত্থান চীন সরকারের বহুমুখী সমর্থন ও দিকনির্দেশনায় এগিয়ে যাচ্ছে।
‘ধারাবাহিক নীতি নির্ধারণের মাধ্যমে নতুন জ্বালানি শক্তির গাড়ি বাজারের দ্রুত বিকাশের জন্য একটি শক্তিশালী নিশ্চয়তা দিয়েছে সরকার। গাড়ি ক্রয়ের ভর্তুকি এবং কর সুবিধাসহ নীতিগত ব্যবস্থাগুলো কার্যকরভাবে ভোক্তাদের নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি কেনার ব্যয় হ্রাস করেছে, যা বাজারের চাহিদা উত্সাহিত করেছে। পাশাপাশি, ব্যাপকভাবে চার্জিং অবকাঠামো নির্মাণকাজ এগিয়ে নিয়েছে সরকার এবং নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ি চার্জিংয়ের কঠিন সমস্যা সমাধান করা হয়েছে। এটি নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির জনপ্রিয়তার জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। নীতিগত পর্যায়ের সমর্থন ছাড়া, নতুন জ্বালানিচালিত গাড়ির প্রযুক্তিগত গবেষণা এবং শিল্পের নব্যতাপ্রবর্তন খাতে গুরুত্বর্পূণ ভূমিকাও পালন করেছে চীন সরকার। স্বতন্ত্র উদ্ভাবনী দক্ষতা জোরদার করতে শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে উত্সাহ দেয় চীন সরকার, ব্যাটারি প্রযুক্তি, ড্রাইভ সিস্টেম এবং বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন ড্রাইভিংসহ বিভিন্ন খাতে বৈদ্যুতিক গাড়ির অগ্রগতি অর্জন এগিয়ে গেছে। তা ছাড়া, ইতিবাচকভাবে শিল্প খাতের গবেষণা ও সহযোগিতামূলক প্ল্যাটফর্ম সৃষ্টিও করেছে সরকার, এটি বৈদ্যুতিক গাড়ির শিল্প চেইনের সংশ্লিষ্ট শিল্পপ্রতিষ্ঠানের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ জোরদার করেছে, নিঃসন্দেহে এই শিল্পের দ্রুত উন্নতি হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির উত্পাদন ও বিক্রি টানা নয় বছর ধরে বিশ্বে প্রথম স্থানে রয়েছে। ২০২৩ সালে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির বার্ষিক উত্পাদন ও বিক্রির পরিমাণ যথাক্রমে ৯৫ লাখ ৮৭ হাজার এবং ৯৪ লাখ ৯৫ হাজার; যা ২০২২ সালের তুলনায় ৩৫.৮ ও ৩৭.৯ শতাংশ বেশি। এমন কি, চীনের গাড়ির রপ্তানির মোট পরিমাণ জাপানকে ছাড়িয়ে বিশ্বে প্রথম রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছে। চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি ইতোমধ্যেই বিশ্বের অনেক দেশ ও অঞ্চলে রপ্তানি হয়েছে, যা চীনের রপ্তানির জন্য একটি নতুন চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।’
উল্লেখ্য যে, নতুন জ্বালানির গাড়ি উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি, পরিবেশ রক্ষা এবং অবিরাম উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করে চীন সরকার।
‘নতুন জ্বালানি শক্তির গাড়ি উন্নয়নের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী তেলজাতীয় গাড়ির ওপর নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে এবং গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করেছে চীন সরকার। যা বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবিলায় ইতিবাচক অবদান রেখেছে। পাশাপাশি, নতুন জ্বালানি শক্তির গাড়ির জনপ্রিয়তা সংশ্লিষ্ট শিল্পের উন্নয়নও এগিয়ে নিয়েছে। এতে আরও বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এবং অর্থনীতির অবিরাম উন্নয়ন জোরদার করেছে। সরকারের সমর্থন চীনের নবায়নযোগ্য জ্বালানি গাড়ি শিল্পে প্রবল চালিকাশক্তি ও নিশ্চয়তা দিয়েছে। পাশাপাশি, বৈশ্বিক সবুজ যাতায়াত ব্রতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও পালন করেছে। ভবিষ্যতে প্রযুক্তির অব্যাহত উন্নয়ন এবং বাজারের অব্যাহত বৃদ্ধির প্রেক্ষাপটে চীনের পরিচ্ছন্ন জ্বালানির গাড়ি অব্যাহতভাবে প্রবল উন্নয়নের প্রবণতা বজায় রাখবে, যা বৈশ্বিক সবুজ যাতায়াতের এক নতুন অধ্যায় শুরু করবে। তবুও আমাদের স্পষ্টভাবে উপলব্ধি করা উচিত যে, নতুন জ্বালানির গাড়ি শিল্পের উন্নয়ন বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ি শিল্পপ্রতিষ্ঠানের দক্ষতা বাড়ানো দরকার, যাতে বাইরের পরিবেশের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়।’
অতএব, বিশ্ব মঞ্চে চীনের বৈদ্যুতিক গাড়ির উজ্জ্বল অবস্থান রয়েছে। যা চীন সরকারের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা এবং নিরলস প্রচেষ্টার অংশ। আমরা আশা করি, ভবিষ্যতে চীন সরকার অব্যাহতভাবে এ খাতে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং বৈশ্বিক ‘সবুজ যাতায়াত’ চেতনায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।