চীনা অর্থনীতির নতুন নীতিমালা বৈশ্বিক পুঁজির নতুন প্রবাহে নেতৃত্ব দেবে
মার্চ ১৩: এ বছর চীনের দুই অধিবেশন সময়মতো আয়োজিত হয়েছে। বিশ্বের দৃষ্টি পুনরায় চীনের ওপর পড়েছে। চীনের রাজনৈতিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে দুই অধিবেশন কেবল যে চীনের ভবিষ্যতের উন্নয়নের সঙ্গে জড়িত , তা নয়; বরং এটি বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলবে।
এবারের দুই অধিবেশনে অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রধান প্রত্যাশিত লক্ষ্যগুলোতে বেশ গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে চলতি বছর ‘জিডিপি’র লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ শতাংশ। এই লক্ষ্য কেবল যে চীনের অর্থনীতির স্থিতিশীল ও সুষ্ঠু উন্নয়নের প্রবণতা প্রতিফলিত করেছে, তা নয়; বরং চীনা অর্থনীতির নতুন নীতিমালা বৈশ্বিক পুঁজির নতুন প্রবাহে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রতীকও বটে।
প্রথমত, এই লক্ষ্যের মধ্য দিয়ে চীনা অর্থনীতির দৃঢ়তা ও সুপ্তশক্তি তুলে ধরা হয়।
‘বৈশ্বিক অর্থনীতির ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল পটভূমিতে, স্থিতিশীল প্রবৃদ্ধির প্রবণতা বজায় রেখেছে চীন। এর মধ্য দিয়ে চীনের শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং বিশাল বাজারের সুবিধার বিষয়টি প্রতিফলিত হয়। এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হলে চীনের অর্থনীতির রূপান্তর এগিয়ে নিতে এবং উচ্চমানের উন্নয়নে শক্তিশালী সমর্থন যোগাবে। সেই সঙ্গে, বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরো বেশি সুযোগ এবং সহযোগিতার সম্ভাবনাও সৃষ্টি করবে এটি।’
দ্বিতীয়ত, চীনা অর্থনীতির নতুন নীতিমালার কার্যকর এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে দৃঢ় নিশ্চয়তা দিয়েছে।
‘মেধাস্বত্ব রক্ষা জোরদার করা, সুসম্পূর্ণ বৈজ্ঞানিক ফলাফল রূপান্তর ব্যবস্থা গড়ে তোলা, নবোদিত শিল্প উন্নয়ন করা, অর্থনীতির আরও উন্মুক্তকরণ এবং ব্যবসায়িক পরিবেশ সর্বোচ্চ মানে উন্নয়ন করাসহ বিভিন্ন কৌশল সবই চীনের অর্থনীতির উচ্চগুণগত মানের উন্নয়নকে এগিয়ে নেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এগুলোর বাস্তবায়ন বাজারের চালিকাশক্তি চাঙ্গা করতে এবং শিল্পচেইনের মান বাড়াতে সহায়ক হবে।’
বিশেষ করে নবোদিত শিল্পের উন্নয়ন চীনা অর্থনীতির নতুন নীতিমালার এক গুরুত্বপূর্ণ সমর্থন বিন্দুতে পরিণত হবে।
‘ডিজিটাল অর্থনীতি, কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা এবং নতুন জ্বালানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের দ্রুত উন্নয়ন, কেবল যে ঐতিহ্যবাহী শিল্পের রূপান্তরকে এগিয়ে নিয়েছে, তা নয়; বরং বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য তা সমৃদ্ধি বয়ে আনবে। এই উল্লেখিত ক্ষেত্রে চীনের বিন্যাস ও বিনিয়োগ বৈশ্বিক নবোদিত শিল্পের উন্নয়ন প্রবণতায় নেতৃত্ব দেবে, যা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে নতুন চালিকাশক্তি যোগাবে।’
সেই সঙ্গে, চীন সক্রিয়ভাবে উন্মুক্তকরণ অর্থনীতি উন্নয়নের কৌশল বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও বিশাল বাজার সৃষ্টি করবে।
‘চীন দৃঢ়ভাবে বৈদেশিক উন্মুক্তকরণকে এগিয়ে নিয়েছে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করেছে, বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও ন্যায্য, স্বচ্ছল এবং সুবিধাজনক পুঁজি-লগ্নির পরিবেশ সৃষ্টি করেছে চীন। এই কৌশলের বাস্তবায়ন চীনে আরও বেশি আন্তর্জাতিক অর্থের সুষ্ঠু প্রবাহ নিশ্চিত করতে এবং চীনা অর্থনীতির বৈশ্বিক প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিতে সহায়ক। সর্বোপরী, ব্যবসায়িক পরিবেশ সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নয়ন করা চীনে অর্থনৈতিক উন্নয়ন লক্ষ্যগুলো বাস্তবায়নের গুরুত্বপূর্ণ উপায়। চীনে অব্যাহতভাবে ব্যবসায়িক পরিবেশের উন্নয়ন করে দেশি-বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগকারীদের জন্য আরও সুবিধাজনক এবং দক্ষ সেবা প্রদান করেছে। এই প্রক্রিয়ায় চীনা অর্থনীতির আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক শক্তি আরও বাড়াবে এবং আরও বেশি বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীদের চীনা অর্থনীতির উন্নয়নে যোগ দিতে আকর্ষণ করবে।’
সংক্ষেপে, চীনা অর্থনীতির নতুন নীতিমালার বাস্তবায়ন এবং এবারের দুই অধিবেশনে অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রধান প্রত্যাশিত লক্ষ্য যৌথভাবে বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগের নতুন প্রবাহে নেতৃত্ব দেয়ার গুরুত্বপূর্ণ শক্তি হয়ে উঠেছে। একই সঙ্গে, বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগকারীরাও চীনে আরও বেশি বিনিয়োগ সুযোগ খুঁজে বের করবে, যা যৌথভাবে বৈশ্বিক পুঁজি বিনিয়োগের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করবে।