বাংলা

উন্নয়ন দিয়ে স্থিতিশীলতা অর্জন করা, চীনের অর্থনীতি বুঝুন

CMGPublished: 2023-12-12 16:02:25
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

দেখতে দেখতে আরেকটি বছর শেষ হতে যাচ্ছে। এমন সময় হল অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যাচাই করার গুরুত্বপূর্ণ সময়পর্ব। পুরো বছরের দিকে ফিরে তাকালে দেখা যায়, ২০২৩ সাল খুব জটিল ও কঠিন ছিল। তবে, চীনের অর্থনীতি বাস্তব সাফল্য অর্জন করেছে। আজ চীনের অর্থনীতির অবস্থা নিয়ে আপনাদের সঙ্গে কথা বলবো।

২০২৩ সালে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে চীনের পরিবর্তন ঘটেছে।

পেশাদার সংস্থার প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছর চীনের উদ্ভাবনী সূচক তিনটি স্থানে উন্নীত হয়েছে। চীন হল এই তালিকার শীর্ষ দশে স্থান পাওয়া একমাত্র উন্নয়নশীল দেশ।

যখন ২০০৮ সালের পর বিশ্বের উন্মুক্তকরণ সূচক আবার নিম্ন পর্যায়ে পৌঁছায়, তবে চীনের উন্মুক্তকরণ সূচক ২০১২ সালের ০.৭১ থেকে বেড়ে দাঁড়ায় ০.৭৫তে, যা ৫.৭ শতাংশ বেড়েছে।

ইয়াম (Yum!) এবং অ্যাপল (Apple)-এর মতো শিল্প জায়ান্টগুলো এই বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে চীনা বাজারে তাদের কর্মক্ষমতা সূচকে নতুন রেকর্ড স্থাপন করেছে। জার্মান রাসায়নিক জায়ান্ট বিএএসএফ (BASF) বলেছে যে, চীন ছাড়া বিশ্বব্যাপী রাসায়নিক উত্পাদন হ্রাস পাচ্ছে।

এই রূপান্তর কিছু বাহ্যিক কথাবার্তার মুখোমুখি হচ্ছে, যা চীনের অর্থনীতির সম্বন্ধে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে।

স্বল্পমেয়াদী অস্থিরতার সূচকগুলো তাদের নেতিবাচক কথার ভিত্তি। বাস্তবতা হল যে, অনেক সূচক স্বল্প-মেয়াদী ওঠানামার পরে ধীরে ধীরে স্থিতিশীল হয়।

সম্প্রতি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ২০২৩ সালে বিশ্ব বাণিজ্য বৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে। তবে, নভেম্বর মাসের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চীনের আমদানি-রপ্তানি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১.২ শতাংশ বেড়েছে।

যখন অর্থনীতি সহযোগিতা সংস্থা ওইসিডি উল্লেখ করে যে, বিশ্বব্যাপী সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহ কমে যাচ্ছে অনেক উন্নত দেশে চীনের বিনিয়োগ বাড়ছে।

আসলে কিছু সূচকের স্বল্পসময়ের ওঠানামা স্বাভাবিক ব্যাপার। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, কি কি ক্ষেত্রে পরিবর্তন ঘটছে, যা থেকে চীনের অর্থনীতির প্রবণতা বোঝা যায়।

গেল বছর, জ্বালানি রূপান্তর এবং পূর্ণাঙ্গ অর্থনীতির রূপান্তরে এর ভূমিকা একটি উল্লেখযোগ্য সূচক। তাহলে জ্বালানি খাতের রূপান্তর ও উন্নয়ন কিভাবে সমন্বয় করা যায়? উন্নত দেশগুলো তার উত্তর দিতে পারে না। কারণ তাদের পদ্ধতি হল, প্রথমে উচ্চ ব্যয়ের ঐতিহ্যবাহী শিল্পকে পুরোপুরি উন্নত করার পর সবুজ শিল্প উন্নত করা। তবে, চীনের বাস্তব অনুশীলন একটি ভিন্ন দৃষ্টিকোণ দিয়েছে।

এই বছর, চীনের নবায়নযোগ্য ও নিরাপদ শক্তি ইনস্টল করার ক্ষমতা ঐতিহাসিকভাবে কয়লা শক্তিকে ছাড়িয়ে গেছে। এ বছরের প্রথমার্ধে, ফটোভোলটাইক বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্রমবর্ধমান ইনস্টলেশন ক্ষমতা প্রায় ৪৭০ মিলিয়ন কিলোওয়াটে পৌঁছায়, যা একে চীনের দ্বিতীয় বৃহত্তম শক্তির উৎস করে তুলেছে।

একটি দেশি-উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে, চীন উন্নয়ন অর্জনের জন্য আরও টেকসই পদ্ধতি বেছে নিচ্ছে।

২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত, চীনের শিল্প ইউনিটগুলোর অতিরিক্ত মূল্যের শক্তি খরচ ৩৬ শতাংশেরও বেশি কমে গেছে। এ সময়ের মধ্যে, চীনের উত্পাদন যুক্ত মূল্য বছরের পর বছর বিশ্বে প্রথম অবস্থানে রয়েছে। একইভাবে, ২০১২ সাল থেকে, চীনের বার্ষিক গড় ৩ শতাংশ শক্তি খরচ বৃদ্ধির হার ৬.৬ শতাংশ গড় বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সমর্থন করে। এটি সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করে যে, চীনের উন্নয়ন নতুন বৃদ্ধির চালক খুঁজে পেয়েছে।

বর্তমানে, নবায়নযোগ্য শক্তি, বৈদ্যুতিক যানবাহন, পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রকল্প এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ ১.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছেছে। চীন মোট বৈশ্বিক বিনিয়োগের প্রায় অর্ধেক পরিমাণ এবং শক্তি রূপান্তর খাতে সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী।

উচ্চ-মানের সরঞ্জাম উত্পাদন, নতুন শক্তি বা পরিবেশ সুরক্ষা যাই হোক না কেন, সারা বিশ্ব থেকে নতুন এবং পুরানো বন্ধুরা খুঁজে পেয়েছেন যে চীনে, তারা সর্বদা তাদের নিজস্ব সুবিধা বাড়ে এবং তা প্রসারিত করা যায়।

এ কারণেই, এক শতাব্দীতে বড় পরিবর্তনের সামনে, এটি "ভবিষ্যত খুঁজতে চীনে আসা" একটি ঐক্যমত হয়ে উঠেছে।

যদিও এই মুহূর্তে সব ধরণের অনিশ্চয়তা রয়েছে এবং যদিও কিছু সমস্যা এখনও সমাধান করা দরকার, যতদিন আমরা প্রতিদিন শ্রেষ্ঠত্বের চেষ্টা করব, ভবিষ্যত আমাদের পক্ষে থাকবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn