বাংলা

এশিয়া-প্যাসিফিক উন্নয়নের পরবর্তী "সুবর্ণ ত্রিশ বছর"

CMGPublished: 2023-11-21 10:15:12
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

নভেম্বর ২০: সম্প্রতি চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিস্কো সফর করেন এবং সেখানে এপেকের অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেন।

এপেক প্রতিষ্ঠার পর বিগত ৩০ বছরে, সংস্থাটি এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলকে বিশ্বের অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির কেন্দ্র এবং বিশ্বের উন্নয়ন ও সহযোগিতার হাইল্যান্ডে পরিণত করেছে। এপেক ‘এশিয়া ও প্যাসিফিক মিরাকল’ সৃষ্টি করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর এবারের সফর এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের উন্নয়নে নতুন শক্তি যোগাবে কি?

এপেক শীর্ষ সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় সি চিন পিং সরাসরি এশিয়া-প্যা

সিফিক উন্নয়নের যুগের প্রশ্ন উত্থাপন করেন: এই শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে আমরা কী ধরনের এশিয়া-প্যাসিফিক দেখতে চাই? কিভাবে এশিয়া-প্যাসিফিক উন্নয়নের পরবর্তী "সুবর্ণ ত্রিশ বছর" সৃষ্টি করা যাবে?

নিজেই এই প্রশ্নের উত্তরে সি চিন পিং বলেন, নতুন যুগের সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে; আমাদেরকে সময়ের আহ্বানে দায়িত্বশীলভাবে সাড়া দিতে হবে; বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে হবে; ‘পুত্রজায়া চেতনা’ সম্পূর্ণরূপে বাস্তবায়ন করতে হবে; উন্মুক্ত, গতিশীল, শক্তিশালী ও শান্তিপূর্ণ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল গড়ে তুলতে হবে; অঞ্চলের জনগণ ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য সাধারণ সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে।

এ সময় সি চিন পিং চীনা প্রস্তাব উত্থাপন করেন: উদ্ভাবনের মাধ্যমে উন্নয়ন বাস্তবায়ণ করতে হবে; উন্মুক্তকরণে অবিচল থাকতে হবে; সবুজ উন্নয়নের পথে এগিয়া যেতে হবে; এবং ইনক্লুসিভ শেয়ারিং নীতি মেনে চলতে হবে।

এশিয়া-প্যাসিফিক সহযোগিতার মূল থিম হল উন্মুক্ততা ও সহনশীলতা। পরিসংখ্যান অনুসারে, বিগত ৩০ বছরে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে গড় শুল্কের স্তর ১৭ শতাংশ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, যা বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ৭০ শতাংশ অবদান রেখেছে।

উন্নয়নের পরিবেশ ও বাহ্যিক পরিস্থিতির পরিবর্তনের কারণে চীন রক্ষণশীল হয়ে ওঠেনি, বরং উচ্চ-মানের উন্মুক্তকরণ এবং আরও বেশি অবদানের মাধ্যমে উন্নয়ন সমস্যার সমাধান করছে।

সবুজ উন্নয়নের ক্ষেত্রে, আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক চুক্তির গভীরভাবে বাস্তবায়নের সাথে, চীন-আসিয়ান অবাধ বাণিজ্য চুক্তি ৩.০-এর আলোচনা, চীনের অবাধ বাণিজ্য পাইলট অঞ্চলগুলোর উচ্চ মানের বাণিজ্যিক সংযোগ, বিশেষ করে উচ্চ-মানের নিম্ন-কার্বন নির্গমন নিয়মের বাস্তবায়ন, সবুজ বাণিজ্য ও সবুজ বিনিয়োগ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে।

যখন ইনক্লুসিভ শেয়ারিং নীতির কথা উল্লেখ করেন, তখন সি চিন পিং বলেন, তিনি অনেকবার বলেছেন যে, সত্যিকারের উন্নয়ন মানে সবাই একসাথে বিকশিত হওয়া।

পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩০ বছরে, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে মাথাপিছু আয় চার গুণেরও বেশি বেড়েছে এবং এক বিলিয়ন মানুষ সফলভাবে দারিদ্র্যমুক্ত হয়েছে, যা মানবজাতির অগ্রগতি ও বিশ্বব্যাপী টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।

চীনের উন্নয়ন এশিয়া-প্যাসিফিক থেকে উপকৃত হয়েছে, এবং এশিয়া-প্যাসিফিক চীনের উন্নয়নের সুফল ভোগ করছে। এপেকের সদস্য হিসাবে, চীন অটলভাবে বহির্বিশ্বের সামনে নিজেকে উন্মুক্ত করে যাচ্ছে; এপেকের বিভিন্ন ইস্যুতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে; এবং এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। বিশেষ করে, চীনের প্রস্তাবিত ধারণা ও পরিকল্পনা, যেমন "বেল্ট অ্যান্ড রোড" উদ্যোগ, এশিয়া-প্যাসিফিক অভিন্ন কল্যাণের সমাজ, ইত্যাদি এশিয়ার সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। ২০২২ সালে, চীন ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ ৩.১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছায়, যা আগের বছরের চেয়ে ১৯.২ শতাংশ বেশি এবং চীনের মোট বৈদেশিক বাণিজ্যের ৩৬.৮ শতাংশ।

সি চিন পিং বলেন, অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য চীন এপেককে অব্যাহতভাবে সমর্থন দিয়ে যাবে এবং যৌথভাবে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে আরও উন্নত করবে।

এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে পরবর্তী "সুবর্ণ ত্রিশ বছর" সৃষ্টিতে চীনের শক্তি অপরিহার্য।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn