প্রসঙ্গ: বাংলাদেশে আরেকটি রেললাইন চালু
গত ১১ নভেম্বরে যখন চীনের ডাবল ইলেভেন কেনাকাটা দিবসে কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত ছিলাম, তখন আমার বাংলাদেশি বন্ধু ফোনে আনন্দের সঙ্গে বললেন যে, বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে প্রিয় সমুদ্রসৈকত শহর কক্সবাজারে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। কারণ, তাকে আমি বলছিলাম যে, আমি কক্সবাজারে গিয়েছিলাম। এ শহর আমার প্রিয়। তবে, যাতায়াতে অনেক অসুবিধা হয়েছিল। এটি দারুণ সুখবর। গত ১০ অক্টোবর স্বপ্নের পদ্মা সেতুতে রেলপথ উদ্বোধনের মাত্র এক মাস পর আরেকটি সুখবর। যা বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতায় চীন ও বাংলাদেশের যৌথ নির্মাণের আরেকটি ফলপ্রসূ উদাহরণ।
রোড শব্দটি উল্লেখ করলে আমার বয়সী চীনাদের মাথায় বরাবারই আসবে এমন একটি কথা- সমৃদ্ধ হতে চাইলে প্রথমে পথ নির্মাণ করতে হয়। ছোটবেলায় চারিদিকে গেলে আমার চোখে পড়ত এ কথাটি। আর আমি সত্যি নিজের চোখে যোগাযোগ খাতে উন্নয়নের ব্যাপক বদলে যাওয়া অনেক ছবি দেখেছি। অনেক গ্রাম সুন্দর হয়েছে এবং গ্রামবাসী সমৃদ্ধ হয়ে ভালো জীবিকা অর্জন করছে। যা থেকে বোঝা যায় চীন বরাবরই অবকাঠামো নির্মাণের ওপর ব্যাপক গুরুত্ব দেয়। আর অবকাঠামো যোগাযোগ বরাবরই বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের অগ্রাধিকারের দিক।
বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগ চীনে জন্ম নিয়েছে। আর এ উদ্যোগ বর্তমানে বিশ্বজুড়ে কল্যাণ ছড়িয়ে দিয়েছে। গত দশ বছরে বিআরআই-এর আওতায় অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। চীনের সাথে বিআরআই সহযোগিতা স্মারকে স্বাক্ষরকারী দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু’দেশের সহযোগিতায় উপকৃত হয়েছে দেশটি। চীনা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় বাংলাদেশে অনেক রাস্তাঘাট, সেতু ও বিদ্যুতকেন্দ্র তৈরি হয়েছে। দূষিত পানি পরিশোধন কারখানা, নদনদীর পানি পরিচ্ছন্নকরণ প্রকল্পসহ নানা প্রকল্পে অংশ নিয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো। যার ফলে দেশটিতে ৫.৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি বিভাগের উইং প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো আনোয়ার হোসেন সম্প্রতি ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ’ প্রদর্শনীতে বলেন, এই বিআরআই প্রকল্পের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশও অবকাঠামোর দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে তা নয়, একইসঙ্গে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে এক ধরনের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে।