বাংলা

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই)-এর আগামী দশ বছর ও প্রসঙ্গকথা

CMGPublished: 2023-10-23 15:06:40
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

৩৬৯টি প্রকল্প, ৮৯টি বহুপক্ষীয় সহযোগিতামূলক দলিল এবং ৯৭২০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের প্রকল্পের সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে সদসমাপ্ত তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) সহযোগিতা শীর্ষফোরামে। এই ব্যাপক সাফল্যের প্রশংসা করেছেন অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিগণ এবং আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্বরা।

বিশ্বে পরিবর্তন, বাণিজ্যিক বাধা এবং নতুন স্নায়ুযুদ্ধের ধারণায় একতরফাবাদ মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। এ প্রেক্ষাপটে বিআরআই সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর জন্য আরও সংলাপ, বৈঠক এবং সহযোগিতার সুযোগ প্রদান করেছে। গত দশ বছরে বিআরআই-এর আওতায় অনেক সাফল্য অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের কথা উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা যায়। চীনের সাথে বিআরআই সহযোগিতামূলক স্মারকে স্বাক্ষরকারী দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম দেশ বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দু’দেশের সহযোগিতায় উপকৃত হয়েছে দেশটি। চীনা প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় বাংলাদেশে অনেক রাস্তাঘাট, সেতু ও বিদ্যুতকেন্দ্র নির্মিত হয়েছে। দূষিত পানি পরিশোধন কারখানা, নদনদীর পানি পরিচ্ছন্নকরণ প্রকল্পসহ নানান প্রকল্পে অংশ নিয়েছে চীনা প্রতিষ্ঠানগুলো। যার ফলে দেশটিতে ৫.৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি বিভাগের উইং প্রধান অতিরিক্ত সচিব মো আনোয়ার হোসেন সম্প্রতি ‘দ্য বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ ইন বাংলাদেশ’ প্রদর্শনীতে বলেন, এই বিআরআই প্রকল্পের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো শক্তিশালী হচ্ছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশও অবকাঠামোর দিক থেকে অনেক এগিয়ে গেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশের যে শুধু অর্থনৈতিক উন্নতি হয়েছে এমনটি নয়, একইসঙ্গে বাংলাদেশ এবং চায়নার মধ্যে এক ধরনের কালচারাল সম্পর্ক স্থাপন হয়েছে।

অন্যান্য দেশেও বিআরআই-এর আওতায় অনেক কাজ হয়েছে। চীন-ইউরোপ রেলপথ বর্তমানে এশিয়া-ইউরোপ স্থলপরিবহণের নতুন গুরুত্বপূর্ণ পথে পরিণত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া বর্তমানে দ্রুতগতির ট্রেনের যুগে প্রবেশ করেছে। লাওসের জনগণের রেলপথের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। মালদ্বীপে ওভার সি ব্রিজ নির্মিত হয়েছে। রেশমপথের সামুদ্রিক পরিবহণের আন্তঃসংযোগের মান অনেক উন্নত হয়েছে।

একটি দীর্ঘকালীন, আন্তঃদেশীয় এবং সামগ্রিক বৈশ্বিক উদ্যোগ হিসেবে, প্রথম ১০ বছরে বিআরআই ব্যাপক সাফল্য পেয়েছে। কিন্তু, এটি শুধু একটি সূচনা মাত্র। এবারের তৃতীয় বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতা শীর্ষফোরামে ‌‌১৪০টিও বেশি দেশ ও ৩০টির বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন। তাঁরা আসেন কেবল বিআরআই-এর দশম বার্ষিকী উদযাপন করতে নয়, বরং আগামী দশ বছরের নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করতে। গত ১৮ অক্টোবর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং আগামীতে বিআরআই-এর আওতায় ৮টি কার্যক্রমের ঘোষণা দেন, যা বিআরআইয়ের গুণগত মানসম্পন্ন যৌথনির্মাণের জন্য প্রাণবন্ত চালিকাশক্তি যুগিয়েছে এবং তাতে চীনের দৃঢ় প্রতিজ্ঞা প্রতিফলিত হয়েছে।

আগামী দশ বছরে বিআরআই বেশ কয়েকটি দিকে আরও উজ্জ্বল হবে। প্রথমত, সুষ্ঠু আন্তঃসংযোগের ভিত্তিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অবাধ ও সুবিধাজনক মান আরও উন্নত হবে; দ্বিতীয়ত: ডিজিটাল রেশমপথ গড়ে তোলার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে উত্পাদনের কার্যকারিতা উন্নত হবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নতুন জায়গা সৃষ্টি হবে; তৃতীয়ত: ‘ছোট তবে সুন্দর’ প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নকাজ দ্রুততর হবে, যা স্থানীয়দের জীবিকা উন্নত ও সুবজ উন্নয়নসহ নানান খাতে ভূমিকা রাখবে।

গত দশ বছরে, বেল্ট অ্যান্ড রোড সদিচ্ছা থেকে বাস্তবে রূপ নেয়। আগামী সোনার দশ বছরে, বিআরআইয়ের গুণগত মানসম্পন্ন যৌথনির্মাণ বিভিন্ন দেশের আধুনিকায়নের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। আলজেরিয়ার চীনের মৈত্রী সমিতির চেয়ারম্যান স্মেলেই দেবেছে বলেছেন, বিআরআই অভিন্ন অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য চীনের উত্থাপিত একটি সহযোগিতামূলক পদ্ধতি। আগামী দশ বছরে প্রতিটি অংশগ্রহণকারী এতে লাভবান হবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn