বাংলা

প্রসঙ্গ: প্রাকৃতিক দুর্যোগ না মনুষ্য-সৃষ্ট দুর্যোগ? হাওয়াই আগুন মার্কিন সরকারের প্রকৃত চেহারার মুখোশ খুলে দিল

CMGPublished: 2023-08-23 15:53:55
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

সম্প্রতি মার্কিন হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের মাউই’তে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। গত ২১ আগস্ট পর্যন্ত মাউই অগ্নিকাণ্ডে ১১৪জন নিহত এবং সহস্রাধিক মানুষ নিখোঁজ রয়েছে। হাওয়াই অঙ্গরাজ্যের গভর্নর জশ গ্রিন বলেন, ওই অগ্নিকাণ্ডে নিহতের সংখ্যা গত শত বছরে অগ্নিকাণ্ডের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। নিহতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে অনুমান করা হচ্ছে।

অগ্নিকাণ্ড ঘটার পর থেকে ‘নিখুঁত অ্যালার্ম’ সিস্টেম পুরোপুরি অকার্যকর হয়ে পড়ে। মার্কিন ফেডারেল সরকারের উদ্ধার ও সাহায্য ছিল খুব ধীর গতির। ওয়াশিংটনের রাজনীতিকরা এ বিষয়ে একেবারে উদাসীন ছিলেন। তাতে মাউই জনগণ রাগান্বিত এবং নিরাশ হয়। এ অগ্নিকাণ্ড মার্কিন সরকারের প্রকৃত চেহারার মুখোশ খুলে দিয়েছে।

‘নিখুঁত অ্যালার্ম সিস্টেম’ পুরোপুরি অকার্যকর

হাওয়াইতে আছে বিশ্বের বৃহত্তম আউটডোর দুর্যোগ সতর্কতা ব্যবস্থা। এ ব্যবস্থার ৪০০টি অ্যালার্ম আছে। এর মধ্যে মাউই দ্বীপে রয়েছে ৮০টি। তবে অগ্নিকাণ্ড প্রাদুর্ভাবের পর সেসব অ্যালার্ম নীরব হয়েছে। মাউই অগ্নিকাণ্ডে বেঁচে যাওয়া একজন অধিবাসী বলেন, তখন কোনো সতর্কতা ঘণ্টা বাজে নি। প্রত্যাহারের নোটিসও দেওয়া হয় নি। অনেকে প্রস্তুত ছিলেন না।

স্থানীয় সময় গত ১৬ আগস্ট মাউই কাউন্টির জরুরি ব্যবস্থা বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানায়, সতর্কতা আরোপ না করায় কোনো অনুশোচনা নেই। কারণ সতর্কতা আরোপ করলে মানুষকে উচ্চ স্থানে ‘অগ্নিকাণ্ডে ছুটে চলার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারতো”। সে কর্মকর্তার কথায় ব্যাপক সমালোচনা তৈরি হয়েছে জনমনে।

মার্কিন অনেক নেটিজেন সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন যে, কথিত সতর্কতা ব্যবস্থা কেবল একটি সাজসজ্জা, যা মার্কিন সরকার অপারেটর এবং ঠিকাদারদের যৌথ নির্মিত খারাপ প্রকল্প।

সরকারী উদ্ধার ও ত্রাণসাহায্য খুব ধীর গতির ছিল

অকার্যকর সতর্কতায় যদি অসন্তুষ্ট হন, তাহলে দুর্যোগের পর মার্কিন ফেডারেল সরকারের উদ্ধার ও ত্রাণসাহায্য ধীরে আসার বিষয়টি আরও দুঃখজনক।

দুর্যোগের বিষয়টি শোনার ৭২ ঘণ্টা পর নৌবাহিনী, চিকিত্সা জাহাজ, হেলিকপ্টার ও উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলো অগ্নিকাণ্ড কবলিত অঞ্চলে প্রবেশ করে।

যুক্তরাষ্ট্র সবসময় মানুষকে রক্ষায় বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সেনাবাহিনী গঠনের কথা বলে থাকে। তবে অগ্নিকাণ্ড ঘটার সময় মার্কিন বাহিনী কোথায় ছিলো? তারা কি ত্রাণসামগ্রী নিয়েছে, দুর্গতদের সাহায্য করার জন্য?

ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ৭ দিন পর গত ১৫ অগাস্ট মার্কিন ফেডারেল জরুরি প্রশাসন বা ফেমা ২৩ লাখ মার্কিন ডলার ত্রাণসাহায্য দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। তবে, এর আগের দিনে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিনকেন ইউক্রেনে ২০ কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের নতুন দফা সামরিক ত্রাণসাহায্য দেওয়ার ঘোষণা করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, মার্কিন সরকার ইউক্রেনে সহস্রাধিক কোটি মার্কিন ডলার ত্রাণ দেয়। আর, তারা তো কোনো ত্রাণসাহায্য পান নি।

মার্কিন রাজনীতিকদের চোখে মাউই অগ্নিকাণ্ডে নিহত মার্কিন নাগরিকদের চেয়ে ইউক্রেনকে সাহায্য করা আরও গুরুত্বপূর্ণ। এ বিষয়টি যে কোনো দৃষ্টিকোণ থেকে একেবারেই "অদ্ভুত"।

জাতিসংঘে নিযুক্ত সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত কিশোর মাহবুবানি অনেক আগেই বলেছিলেন যে, যুক্তরাষ্ট্র আজ মোটেও "গণতান্ত্রিক" নয়, বরং একটি "প্লুটোতান্ত্রিক দেশ। তথাকথিত প্লুটোতন্ত্র" এর অর্থ হল যে, মার্কিন সরকার আর দেশটির সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের জন্য নয়, তারা শুধুমাত্র কিছু ধনী লোককে সেবা দেয়।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn