এই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ভ্রমণ কতটা জনপ্রিয় হচ্ছে?
অগাস্ট ২২: এই গ্রীষ্মে ভ্রমণ কতটা জনপ্রিয় হচ্ছে? ছুটির সময় সন্তানকে নিয়ে মাতৃভূমির সুন্দর নদী এবং পাহাড় পরিদর্শন করা অনেক মানুষের কাছে ‘সেরা পছন্দের বিষয়’ হয়ে উঠেছে।
সাধারণভাবে বলা যায়, প্রতি বছরের জুলাই ও অগাস্ট মাস হলো শিক্ষার্থীদের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বা সামার ভ্যাকেশন। এই ছুটিকে কাজে লাগিয়ে অভিভাবকরা সন্তানদের নিয়ে ভ্রমণ করতে পছন্দ করেন।
চীনের সিভিল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী জুলাই মাসে যাত্রী পরিবহনের পরিসংখ্যান ৬ কোটি ২৪ লাখ ২৮ হাজার এবং যা গত বছরের অনুরূপ সময়ের তুলনায় ৮৩.৭ শতাংশ বেশি।
এ বছরের দিকে তাকালে প্রতি ছুটির দিনে সাংস্কৃতিক পর্যটনের সমৃদ্ধি স্বাভাবিক হয়ে উঠতে দেখা যায়। এটি নতুন পর্যায়ে মানুষের ক্রমবর্ধমান আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক চাহিদার প্রতিফলন, এবং এ চাহিদা পূরণ করতে সাংস্কৃতিক পর্যটন শিল্পের উচ্চ মানের উন্নয়ন আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়।
পর্যটনের গন্তব্যস্থান এবং পদ্ধতিগুলো আরও বেশি এবং বৈচিত্র্যময় হয়ে ওঠে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং ধারণা উন্নত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে লোকেরা আর পর্যটনের উদ্দেশ্যকে দর্শনীয় স্থান ঘুরে বাড়ানোতে সীমাবদ্ধ রাখেন না, বরং জীবনযাত্রার মান উন্নত করা, সাংস্কৃতিক পর্যটন এবং বিনোদন উপভোগ করা জনগণের দৈনন্দিন জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে। তাই ঐতিহ্যবাহী পর্যটন রুট, ঐতিহ্যবাহী ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর নির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঐতিহ্যবাহী দর্শনীয় স্থানগুলো ভ্রমণ করে মানুষের বিভিন্ন চাহিদা মেটানোর কাজটি বেশ কঠিন হয়ে পড়েছে। অনেকে এখন ব্যক্তিগত গাড়িতে ভ্রমণ করা, আরও নৈমিত্তিক এবং আরামদায়ক ‘সামার ট্যুর’ এবং ‘গ্রামীণ ভ্রমণ’ গ্রীষ্মকালীন ভ্রমণ করে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে উঠেছে।
চীনের নানা শহর চলমান পিক ট্র্যাভেল সিজনে গ্রীষ্মকালীন ছুটি উপভোগ করতে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটক- উভয়ের জন্য বিভিন্ন ধরনের পর্যটন কর্মসূচি চালু করেছে।
পূর্ব চীনের চিয়াংসু প্রদেশের হুয়েআন শহরে লোকেরা গ্রীষ্মের আকাশে চোখ ধাঁধানো আলোর শোসহ কয়েক ডজন স্বাদের ক্রেফিশের ভোজ উপভোগ করতে পারেন।
দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের সিছুয়ান প্রদেশের সিছাং শহরে সংখ্যালঘু ই জাতিগোষ্ঠীর মশাল উৎসব হাজার হাজার পর্যটককে আকর্ষণ করে।
মশাল উৎসবটি ওরিয়েন্টাল কার্নিভাল নামেও পরিচিত, ইভেন্টটি ই সংখ্যালঘু জাতির সবচে গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহ্যবাহী উৎসব। এটি দক্ষিণ-পশ্চিম চীনের ই, নাসি এবং বাইসহ সংখ্যালঘু জাতির অভিন্ন ঐতিহ্যবাহী উৎসবও বটে।
সংস্কৃতি এবং পর্যটন শিল্পের একীকরণ ঘনিষ্ঠ করে তোলার ফলে নানা সাংস্কৃতিক ও বিনোদন পণ্যের প্রকল্প ভোগের নতুন বিষয়ে হয়ে উঠেছে। পর্যটন চাহিদা বৃদ্ধির ধারা পূরণ করতে বিভিন্ন স্থান সময়মত প্রচুর পরিমাণের উচ্চ-মানের সাংস্কৃতিক ও শৈল্পিক পরিবেশনা চালু করেছে, যা গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে সংস্কৃতি ও পর্যটন পণ্যের সরবরাহ সমৃদ্ধ করেছে।
স্থানীয় বৈশিষ্ট্যময় দর্শনীয় স্থান এবং জাদুঘর এই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে জনপ্রিয় গন্তব্যস্থানে পরিণত হয়।
বহির্গামী পর্যটনের ক্ষেত্রে জুলাই মাসে চায়না ট্যুরিজম একাডেমির উদ্যোগে প্রকাশিত ‘২০২৩ সালের প্রথমার্ধে চীনের মুল ভূখণ্ডের বাইরে ট্যুরিজম সম্পর্কিত বিগ ডেটা রিপোর্টে’ উল্লেখ করা হয় যে, আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যবসায়িক ভ্রমণ, আত্মীয়স্বজন এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দেখা করার ভ্রমণ এবং গ্র্যাজুয়েশন ট্রিপসহ বহির্গামী পর্যটনের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বহির্মুখী পর্যটন সুষ্ঠুভাবে পুনরুদ্ধারের একটি ভাল প্রবণতা শুরু হয়েছে।
এই গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ডোমেস্টিক ভ্রমণ বা বহির্গামী ভ্রমণ, যাই হোক না কেন, উভয় ক্ষেত্রে চীনা অর্থনীতির প্রাণবন্ত শক্তি ফুটে উঠেছে।
লিলি/তৌহিদ