বাংলা

জাতীয় পরিবেশ দিবসের ভাবনা

CMGPublished: 2023-08-16 09:58:23
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

অগাষ্ট ১২: সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ দূষণ সমস্যা গুরুতর হওয়ার প্রেক্ষাপটে, ইকোলজিকেল বা পরিবেশগত সভ্যতা প্রতিষ্ঠার বিষয়টি একটি সাধারণ বৈশ্বিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। সম্প্রতি বেইজিংয়ে আয়োজিত ১৪তম জাতীয় গণকংগ্রেসের স্ট্যাডিং কমিটির তৃতীয় সভায় ১৫ আগষ্টকে ‘জাতীয় পরিবেশ দিবস’ হিসাবে নির্ধারণ করা হয়। আজকের অনুষ্ঠানে আমি এ বিষয় নিয়ে কথা বলবো।

জাতীয় পরিবেশ দিবস পালনের লক্ষ্য হল পরিবেশগত সভ্যতার ধারণাকে সমর্থন করা, পরিবেশগত সভ্যতার নির্মাণকে শক্তিশালী করা, সবুজ উন্নয়নকে উন্নত করা এবং সমগ্র সমাজের জন্য পরিবেশগত সভ্যতা নির্মাণে অংশগ্রহণের জন্য একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করা। প্রচার ও শিক্ষা, নীতিগত উন্নয়ন এবং ব্যবহারিক ক্রিয়াকলাপের মতো বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে, পরিবেশগত সভ্যতা সম্পর্কে সচেতনতা প্রতিষ্ঠা করতে, পরিবেশ সুরক্ষা ও নির্মাণে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে, এবং পরিবেশগত সভ্যতার নির্মাণকাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে চীন।

পরিবেশ সুরক্ষা হলো সার্বিক সমাজতান্ত্রিক আধুনিক দেশ গড়ার পূর্বশর্ত। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র ১৮তম জাতীয় প্রতিনিধি সম্মেলনের পর চীন প্রাকৃতিক পরিবেশ সুরক্ষা ও সংশোধনের কাজে ঐতিহাসিক সাফল্য লাভ করেছে। দেশের প্রাকৃতিক পরিবেশ অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। এতে সুন্দর চীন গড়ার দৃঢ় সবুজ ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে।

২০১৬ সাল থেকে চীনের কেন্দ্রীয় সরকার প্রতিবছর গড়ে ১০ বিলিয়ন ইউয়ান বিনিয়োগ করে এবং সারা দেশে ৫১টি পাহাড়, নদী, বন, মাঠ, হ্রদ, তৃণভূমি এবং মরুভূমিসংশ্লিষ্ট সুরক্ষা ও পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। অনুমান অনুসারে, ২০২১ থেকে ২০৩০ সাল পর্যন্ত মোট বিনিয়োগ ২৫০ বিলিয়ান ইউয়ান ছাড়িয়ে যাবে; ১ কোটি হেক্টর জমি প্রাণ ফিরে পাবে। গত দশ বছরে দেশব্যাপী মোট ৬.৮ কোটি হেক্টর বনায়ন সম্পন্ন হয়েছে এবং রোপিত বনের দিক দিয়ে বিশ্বের প্রথম স্থানে রয়েছে চীন। চীন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত ও বৃহত্তম বনসম্পদ বৃদ্ধির দেশে পরিণত হয়েছে। গত দশ বছরে চীন ২০.৩৩ মিলিয়ন হেক্টর মরুভূমি নিয়ন্ত্রণের কাজ সম্পন্ন করেছে। মরুভূমির আয়তন দশ বছর আগের তুলনায় ৫ মিলিয়ন হেক্টর কমেছে এবং বালুকাময় এলাকায় গড় গাছপালার আয়তন ২.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২১ সালের অক্টোবরে

চীন আনুষ্ঠানিকভাবে সানচিয়াংইউয়ান ও জায়ান্ট পান্ডাসহ পাঁচটি জাতীয় পার্কের নির্মাণ শেষ করেছে। বর্তমানে আরও পাঁচটি জাতীয় পার্ক নির্মিত হচ্ছে। এ ছাড়া, হলুদ নদী মোহনাসহ ১২টি জাতীয় পার্ক নির্বাচনকাজ চলছে।

জাতীয় পরিবেশ দিবস প্রাকৃতিক সভ্যতার নির্মাণ ও সবুজ উন্নয়নের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এ দিবসে বিভিন্ন ধরণের প্রচার ও শিক্ষা কার্যকলাপের মাধ্যমে চীনা মানুষের পরিবেশ সুরক্ষার সচেতনতা বৃদ্ধি করা এবং আরও বেশি মানুষকে এ কাজে জড়াতে উত্সাহিত করা হয়। এ ছাড়া, নীতি ও আইনের আওতায় প্রাকৃতিক সভ্যতার নির্মাণ ও সবুজ উন্নয়নের অনুশীলন ত্বরান্বিত করা এর লক্ষ্য।

এদিকে, জাতীয় পরিবেশ দিবস আন্তর্জাতিক যোগাযোগ ও সহযোগিতা ত্বরান্বিতের ক্ষেত্রে সহায়ক। প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা হলো একটি বৈশ্বিক ইস্যু। বিভিন্ন দেশের যৌথভাবে ব্যবস্থা নিতে হবে। এর মাধ্যমে চীন অন্যান্য দেশের সঙ্গে যোগাযোগ ও সহযোগিতা জোরদার করবে। যৌথভাবে বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশ উন্নয়ন ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করা উচিত।

সবুজ পাহাড় ও পানি হলো স্বর্ণ ও রূপালী পাহাড়। এক অর্থে এটি চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের পরিবেশগত সভ্যতা চিন্তার সমার্থক হয়ে উঠেছে। জাতীয় পরিবেশ দিবসের নির্ধারণ চীনের পরিবেশগত পরিবেশ সুরক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি সরকারের দায়িত্বপালন ও সমাজের সকল মহলের অংশগ্রহণের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn