বাংলা

বিশ্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে “ব্রিক্স” শক্তি যোগাবে

CMGPublished: 2023-08-11 19:17:20
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

২০২৩ সালের ব্রিক্স শীর্ষ সম্মেলন ২২ থেকে ২৪ আগস্ট দক্ষিণ আফ্রিকার জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠিত হবে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, উদীয়মান অর্থনীতি, বিশেষ করে ব্রিকস দেশগুলি, দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে এবং বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তিতে পরিণত হয়েছে। "ব্রিক্স" উন্নয়নের পথ হল পশ্চিমা চিন্তাধারাকে অতিক্রম করার একটি পথ। ব্রিকস সহযোগিতা বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলির উন্নয়ন-স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি ফোরাম হয়ে উঠছে। বাংলাদেশসহ ২৩টি দেশের নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগদানের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। এবারের ব্রিকস শীর্ষ সম্মেলন অবশ্যই বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারে শক্তিশালী "ব্রিকস" শক্তি যোগাবে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্রিকস অর্থনৈতিক সমষ্টির অনুপাত ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। যদি ক্রয় ক্ষমতার সমতা-অ্যাডজাস্টেড জিডিপির ভিত্তিতে গণনা করা হয়, ১৯৯২ সালে জি-৭ বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ৪৫.৮৮% অবদান রেখেছিল, যেখানে ব্রিক্স-এর অবদান ছিল মাত্র ১৬.৪৫%। ৩০ বছর পরে, ব্রিক্সের অবদান বেড়ে ৩১.৬৭% হয়েছে, জি-৮-এর অবদানের হার ৩০.৩১% এ নেমে গেছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্রিক্স-এর অংশ ৫৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পৌঁছে যাবে, যা জি-৭ গ্রুপের ৫২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের চেয়ে বেশি হবে। ২০২৮ সালের মধ্যে এই অনুপাত এক তৃতীয়াংশে পৌঁছে যাবে।

বর্তমানে, বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মন্থর, এবং বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য সহযোগিতা ক্রমবর্ধমান একতরফাবাদ, সংরক্ষণবাদ ও উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে, ব্রিকস সহযোগিতা কীভাবে বিশ্ব অর্থনীতির উন্নয়নে বৃহত্তর ভূমিকা রাখতে পারে? ৭ আগস্ট অনুষ্ঠিত ১৩তম ব্রিকস অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যমন্ত্রীদের বৈঠকে এ বিষয়ে ব্যাপক ঐকমত্য হয়েছে। ব্রিকস দেশগুলি বিশ্বের উন্নয়নশীল এবং উত্তরণ অর্থনীতিগুলির গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন দিক ও আগ্রহের চাহিদাগুলির প্রতিনিধিত্ব করে। তাই, ব্রিকস দেশগুলির শীর্ষ অগ্রাধিকার হল পারস্পরিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বিনিময়কে শক্তিশালী করা এবং বিশ্বব্যাপী সরবরাহ-চেইন ও মূল্য-চেইনের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য একসাথে কাজ করা। বিশেষ করে, প্রাসঙ্গিক দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলোকে বৈশ্বিক মূল্য চেইনে যোগদান ও একীভূত হওয়ার জন্য উত্সাহিত করা। এ ছাড়া, ডিজিটাল অর্থনীতি, নিম্ন-কার্বন সবুজ উন্নয়ন এবং নতুন শক্তির ক্ষেত্রে, একে অপরের পরিপূরক সুবিধাগুলিকে ব্যবহার করা, সম্পর্কিত নতুন ফর্ম্যাট ও শিল্পের বিকাশকে উন্নীত করা এবং ব্রিকস দেশগুলোর উন্নয়নের জন্য নতুন সমর্থন গঠন করাও ব্রিকসের লক্ষ্য।

রুশ রাজনৈতিক বিশ্লেষক তৈমুর ফোমেনকো বিশ্বাস করেন যে, ব্রিকস সহযোগিতা বৈশ্বিক দক্ষিণ দেশগুলোর উন্নয়ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট একটি ফোরাম হয়ে উঠছে। আদর্শগত জোট বা সামরিক জোটের সাথে এর কোনো মিল নেই, তবে এই দেশগুলিকে পশ্চিমা মডেলের সীমাবদ্ধতা থেকে বাইপাস করে নিজেদের বিকাশের সুযোগ অর্জনের জন্য একটি বহুমুখী পরিবেশ তৈরি করার প্রচেষ্টা আছে।

জোটনিরপেক্ষতার ঐতিহ্যের ওপর ভিত্তি করে, ব্রিকস কোনো দেশের আধিপত্যের শিবিরে পরিণত হবে না, তবে অভিন্ন দাবিগুলির জন্য সহযোগিতা জোরদার করা সকল উদীয়মান অর্থনীতি ও উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হবে ব্রিকস। তাই অনেক দেশ ব্রিকস সহযোগিতায় যোগদানের জন্য আবেদন করেছে।

৮ আগস্ট, দক্ষিণ আফ্রিকার আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতামন্ত্রী নালেদি প্যান্ডোল বলেন, ২৩টি দেশের নেতারা আনুষ্ঠানিকভাবে ব্রিকসে যোগদানের জন্য তাদের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। ব্রিকস দেশগুলি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার সংস্কার, বৈশ্বিক বাণিজ্য শাসনের উন্নতি, বৈশ্বিক জলবায়ু শাসনের উন্নতি, এবং নতুন ব্যবসায়িক মডেলগুলির জন্য নিয়ম প্রণয়নে তাদের কণ্ঠস্বরকে ক্রমবর্ধমানভাবে একত্রিত করবে এবং বিশ্ব অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের জন্য আরও শক্তিশালী ‘ব্রিক্স’ শক্তি যোগাবে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn