বাংলা

শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষসম্মেলনে যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পথ দেখিয়েছে

CMGPublished: 2023-07-10 10:00:54
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

৪ জুলাই শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান পরিষদের অনলাইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং তাতে যোগ দেন ও গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন।

বর্তমান বিশ্বে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। শত বছরের অভূতপূর্ব পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে মানবজাতি অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ঐক্যবদ্ধ নাকি বিচ্ছিন্ন হওয়া? শান্তি নাকি সংঘাত? সহযোগিতা নাকি বৈরিতা?— নতুন যুগে সেসব প্রশ্নের মুখে ‘শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার কোন দিকে যাওয়া উচিত’ সে প্রশ্নের জন্ম হয়েছে। এবারের সম্মেলনে এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন সি চিন পিং। তিনি বলেন, “বিভিন্ন দেশের জনগণের সুন্দর জীবনের সদিচ্ছা হলো আমাদের দর্শন। শান্তি, উন্নয়ন, সহযোগিতা ও অভিন্ন কল্যাণ হলো যুগের প্রবণতা, যা বাধাগ্রস্ত করা যায় না”।

শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। চীন, রাশিয়া, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, তাজাখস্তান এবং উজবেকিস্তান সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা দেশ। ২০১৭ সালে ভারত ও পাকিস্তানও এতে যোগ দেয়। এবার ইরানও সংস্থাটিতে যোগ দিয়েছে এবং বেলারুশ সংস্থাটির সঙ্গে স্মারকলিপি স্বাক্ষর করেছে। গত ২২ বছর উন্নয়নের ফলে বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা বিশ্বের বৃহত্তম এবং শক্তিশালী সংস্থা হয়ে উঠেছে এবং মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের কমিউনিটির প্রাণবন্ত অনুশীলনে পরিণত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠার পর থেকে গত ২২ বছরে শাংহাই চেতনার নির্দেশনায় বিশ্বের নানা অঞ্চলের দেশ, নিজের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য ও উন্নয়নের পদ্ধতিতে ঐক্যের মাধ্যমে নতুন একটি উন্নয়নের পথ খুঁজে পেয়েছে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থা। সেখানে জোটের বদলে অংশীদার, প্রতিদ্বন্দ্বিতার বদলে সংলাপ করা হয়। চীন প্রতিষ্ঠাতা দেশে হিসেবে সংস্থার উন্নয়নে নিজের অবদান রাখছে। শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার অভিন্ন কল্যাণের সমাজ গঠন, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উন্নয়ন, নিরাপত্তা, সভ্যতা ও বিশ্ব প্রশাসনের ধারণা দিয়েছ চীন।

বর্তমানে শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মুখীন উন্নয়নের সুযোগ ও চ্যালেঞ্জ প্রসঙ্গে সি চিন পিং পাঁচটি পরামর্শ দিয়েছেন, যা হলো সঠিক দিক অবলম্বন করা এবং ঐক্য ও পারস্পরিক সহযোগিতা জোরদার, আঞ্চলিক শান্তি রক্ষা করা এবং অভিন্ন নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। বাস্তব সহযোগিতার ওপর নজর রাখা এবং অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার দ্রুততর করা। বিনিময় ও পরস্পর থেকে শেখার ব্যবস্থা জোরদার করা এবং ব্যক্তিগত সংযোগ বাড়ানো। পাশাপাশি বহুপক্ষবাদের অনুশীলন করা এবং বিশ্ব প্রশাসন সুবিন্যস্ত করা।

এ পাঁচটি প্রস্তাব আগে থেকে তাঁর উত্থাপিত বিশ্ব উন্নয়ন উদ্যোগ, বিশ্ব নিরাপত্তা প্রস্তাব এবং বিশ্ব সভ্যতা উদ্যোগের সমন্বিত চেতনা। যাতে মানবজাতির অভিন্ন কল্যাণের কমিউনিটি গঠনে চীনের দায়িত্ববোধ প্রতিফলিত হয়েছে।

প্রেসিডেন্ট সি’র ভাষণের ভূয়সী প্রশংসা করে কিরগিজ জাতীয় কৌশলগত গবেষণা একাডেমীর কূটনৈতিক উপদেষ্টা হেরাদিল বাকগুলভো বলেন, "চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বরাবরই সব দেশের সঙ্গে পারস্পরিক কল্যাণ এবং শান্তিপূর্ণ সহযোগিতা চালানোর নীতিতে অবিচল রয়েছেন। বর্তমান বিশৃঙ্খল ও ভারসাম্যহীন বিশ্ব পরিস্থিতিতে অনেক দেশ এ নীতিকে স্বাগত জানায় এবং তা সুষ্ঠুভাবে গ্রহণ করে। প্রেসিডেন্ট সি’র উত্থাপিত প্রস্তাবের লক্ষ্য হলো, দেশ ও দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও স্থিতিশীল করে গড়ে তোলা।

ভালো পথে একা যাওয়া যাবে না এবং সবাই একসাথে চেষ্টা করে অনেক দূরে যাওয়া যায়। সি চিন পিং দাবি করেন যে, শাংহাই সহযোগিতা সংস্থার উচিত, মানবজাতির অভিন্ন মূল্যবোধ বা শান্তি, উন্নয়ন, সমতা, বৈধতা, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার চেতনা সম্প্রসারণ করা। পাশাপাশি অধিকার, সুযোগ ও নিয়মের সমতা বেগবান করার মাধ্যমে মানবজাতির আধুনিকায়ন করা উচিত বলেও মনে করেন সি চিন পিং।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn