গণতন্ত্রের শুধু একটি রূপ নেই বিভিন্ন রূপ আছে
পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি ও সামাজিক জীবনে দেখা যায় নানা ধরনের অগণতান্ত্রিক সমস্যা। যেমন, যুক্তরাষ্ট্র নিজের মত প্রকাশের স্বাধীনতার কথা বলে। আসলে এমন স্বাধীনতারও পূর্বশর্ত সেখানে রয়েছে। মার্কিন সরকার ও পুঁজির স্বার্থের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন বক্তব্য সেখানে সীমাবদ্ধ। যেমন ২০২২ সালের ডিসেম্বরে টুইটারের সিইও ইলন মাস্ক এবং রিপোর্টার ম্যাট তাইবি টুইটারে জানান যে, মার্কিন সরকার সব সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কঠোর সমালোচনা করেছে এবং কখনও কখনও সরাসরি মিডিয়ার কভারেজে হস্তক্ষেপ করে। সে বছরের সেপ্টেম্বরে, নর্ড স্ট্রিম প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের বিস্ফোরণ বিশ্বকে হতবাক করেছে। কে সেটা করেছে এবং কেন করেছে তা বিশ্ব জানতে চায়। ২০২৩ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী ও প্রবীণ অনুসন্ধানী প্রতিবেদক সেমুর মাইরন হার্শ মার্কিন সরকারকে ওই ‘বিস্ফোরণের পিছনের হাত’ বলে উল্লেখ করেন। তবে, এ খবরের বিষয়ে পাশ্চাত্য তথ্যমাধ্যম কিছুই বলেনি, যা খুবই আশ্চর্যজনক।
‘মার্কিন গর্বিত গণতন্ত্রও’ এখন অর্থের রাজনৈতিক হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী ৯১ শতাংশ মানুষ মার্কিন কংগ্রেস নির্বাচনে তাকেই নির্বাচন করে, যার অর্থের পরিমাণ বেশি। নির্বাচিত ‘জনগণের প্রতিনিধিরা’ সাধারণ মানুষ নয়, বরং- তার বিনিয়োগকারীদের পক্ষে কথা বলেন।
গণতন্ত্র হল আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ। তবে বিশ্বে নিখুঁত কোনো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নেই। সব দেশের জন্য উপযোগী- একক গণতান্ত্রিক ধারণা ও ব্যবস্থা নেই। যুক্তরাষ্ট্র বা চীন যাই হোক-না-কেন, নিজ দেশের বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতেই গণতন্ত্রের ব্যবস্থা করতে হবে। চীনে বলা হয়, শত ফুল ফুটতে দাও- যা ফুলের বৈচিত্র্য। গণতন্ত্রের বৈচিত্র্যের উপর নির্ভর করে মানবিক রাজনৈতিক সভ্যতার উন্নয়ন এগিয়ে যাবে। প্রতিটি দেশে গণতন্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ও তার উন্নয়নে রয়েছে সেসব জাতির ঐতিহাসিক বৈশিষ্ট্য।
যদি আমরা গণতন্ত্রের কথা আলোচনা করি, তাহলে অন্যদেরকে নির্দেশ দেওয়া ও অভিযোগ করার বদলে, বাস্তবতা ও বস্তুনিষ্ঠ সত্য বিষয় নিয়ে মতবিনিময় করতে হবে।