বাংলা

চ্যাটজিপিটির ঢেউ: কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের জীবন থেকে কত দূরে?

CMGPublished: 2023-02-28 13:12:49
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

২০২৩ সালের শুরুতে, চ্যাটজিপিটি (ChatGPT) সবচেয়ে অশান্ত প্রযুক্তিগত ঢেউ সৃষ্টি করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান অপেনএআই (OpenAI) ২০২২ সালের নভেম্বরের শেষে এই জেনারেটিভ এআই ডায়ালগ মডেলটি প্রকাশ করেছে। ১ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৬০দিনের মধ্যে, চ্যাটজিপিটি-এর মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যায়। যা ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল গ্রাহক অ্যাপ্লিকেশনে পরিণত করেছে।

কিছু বিশ্লেষক মনে করেন চ্যাটজিপিটি-এর অর্থ হল প্রযুক্তি ক্ষেত্রের ‘সিঙ্গুলার পয়েন্ট’ মুহূর্ত আসছে। এটি সহযোগিতামুলক মিথস্ক্রিয়ায় পরিচালিত এআই বিপ্লবের একটি নতুন প্রজন্ম। এটি ‘নিম্ন স্তরের পরিবর্তন’ শুরু করেছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন প্রজন্ম ভৌত জগত ও তথ্য জগতে মানুষ এবং পরিবেশের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া, সহযোগিতা উপলব্ধি করতে পারে। পাশাপাশি তথ্য, জ্ঞান, গণনা, যুক্তির বন্ধ লুপ বাস্তবায়ন করতে পারে।

এই পুরো শিল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে চীনের প্রাসঙ্গিক শিল্পগুলি কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে?

প্রকৃতপক্ষে, সম্প্রতি অনেক চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি দ্রুত চ্যাটজিপিটি সম্পর্কিত এআই প্রযুক্তি গবেষণা দ্রুততর করছে। ৯ ফেব্রুয়ারি চীনের সার্চ ইঞ্জিন কোম্পানি বাইদু (Baidu)-এর চ্যাটজিপিটি প্রকল্প - "আর্নি বট" (ERNIE Bot) অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা সম্পূর্ণ করে মার্চ মাসে অনলাইনে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হবে। সুনফেই (HKUST Xunfei) ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় জানায় যে আইফ্লাইটেক (iFLYTEK)-এর এআই লার্নিং মেশিন মে মাসের ৬ তারিখে প্রকাশিত হবে। আলিবাবা সম্প্রতি চ্যাটজিপিটি’র মতো পণ্যের গবেষণা ও উন্নয়নের অগ্রগতিও প্রকাশ করেছে। টেনসেন্ট আরও জানিয়েছে যে, তারা এআই-এর মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তির গবেষণা ও উন্নয়নে বিনিয়োগ অব্যাহত রাখবে। হুয়াওয়েই (Huawei) সম্প্রতি প্রকাশ করেছে যে, তাদের চ্যাটজিপিটি-এর মতই একটি পণ্যের গবেষণা চলছে।

উপরে উল্লিখিত কোম্পানি থেকে ভিন্ন, জিনতং এর দৃষ্টিভঙ্গি ব্যবহারিক শিল্পের কাছাকাছি। ১০ ফেব্রুয়ারি, জেডি ক্লাউডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট প্রকাশ করে যে, জেডি ক্লাউড একটি ‘শিল্প সংস্করণ’ চ্যাটজিপিটি চালু করবে, যার নাম ‘চ্যাটজেডি’(ChatJD)। চ্যাটজেডি’র লক্ষ্য হল আরো সুবিধাজনক, ব্যবহার এবং সাধারণ প্রয়োজনের চ্যাটজিপিটি’র একটি শিল্প সংস্করণ তৈরি করা।

চীনের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের হাই-টেক বিভাগের পরিচালক ছেন চিয়া ছাং বলেন, কৌশলগত উদীয়মান প্রযুক্তি হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ক্রমবর্ধমানভাবে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন, শিল্প আপগ্রেডিং এবং উত্পাদনশীলতার উন্নয়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে।

গবেষণা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা ও অগ্রগতির দৃষ্টিকোণ থেকে চীন সরকার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে অনেক গুরুত্ব দেয়। ২০১৭ সালে, চীনের জাতীয় পরিষদ ‘নতুন প্রজন্মের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা উন্নয়ন পরিকল্পনা’ প্রণয়ন করে। পরবর্তী ধাপে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় একটি কৌশলগত উদীয়মান শিল্প এবং একটি নতুন প্রবৃদ্ধির ইঞ্জিন হিসেবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে শক্তিশালী সমর্থন দেবে। শুধু তাই নয়, চীন নৈতিকতা এবং নতুন প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে কিছু অনুরূপ ব্যবস্থাও নিয়েছে, যেমন ‘কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নতুন প্রজন্মের গভর্নেন্স প্রিন্সিপালস’ এবং ‘কোড অফ এথিক্স’ প্রণয়ন করা। যা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উন্নয়নের সুবিধাকে আরো ভাল করে কাজে লাগানো এবং অসুবিধার দিকগুলি এড়ানোর বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছে।

একাধিক এআই প্রযুক্তির সংস্করণ হিসাবে, চ্যাটজিপিটিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব হিসাবে বিবেচনা করা হয়। উদ্ভাবনী প্রযুক্তির যাত্রা ‘ধারণা থেকে পণ্যের’ পথ কিন্তু মসৃণ নয়। এটি বাজারে পরীক্ষা এবং পুনরাবৃত্তি করা প্রয়োজন। চ্যাটজিপিটি সত্যিকার অর্থে পরিপক্ব হতে কত সময় লাগবে? এটা আমাদের জীবনে কী কী পরিবর্তন আনবে? তা দেখার জন্য আমরা অপেক্ষায় আছি।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn