শক্তিশালী কৃষিই কোনো দেশকে শক্তিশালী করতে পারে
জানুয়ারি ১২: ‘একটি শক্তিশালী দেশকে প্রথমে তার কৃষিকে শক্তিশালী করতে হবে, এবং একটি শক্তিশালী কৃষিদেশই কেবল শক্তিশালী হতে পারে। একটি শক্তিশালী কৃষিদেশ ছাড়া, কোনো আধুনিক দেশ হবে না; আর কৃষি ও গ্রামীণ আধুনিকায়ন ছাড়া, সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়ন পূর্ণাঙ্গ হবে না।’
২০২২ সালের ২৩ ও ২৪ ডিসেম্বর বেইজিংয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামীণ কর্মসম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সম্পাদক সি চিন পিং সভায় যোগদান করেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। সাধারণ সম্পাদকের গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ, চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেসের চেতনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে একটি সমাজতান্ত্রিক আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে। একটি শক্তিশালী কৃষিদেশ গড়ার প্রধান তত্ত্ব ও নীতি হচ্ছে কৃষি ও গ্রামীণ এলাকার আধুনিকায়ন ও গ্রামীণ পুনরুজ্জীবন।
সিপিসি’র ১৮তম জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে, সি চিন পিংকে কেন্দ্র করে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি ‘তিনটি গ্রামীণ’ সমস্যা সমাধানের উপর জোর দিয়েছে, পুরো পার্টির কাজের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসাবে। দেশে ইতোমধ্যেই পরম দারিদ্র্যের সমস্যা সমাধান হয়েছে। সারাদেশে ৮৩২টি দারিদ্র-পীড়িত কাউন্টিকে দারিদ্র্য থেকে বের করে আনা হয়েছে, প্রায় ১০০ মিলিয়ন গ্রামীণ দরিদ্র মানুষকে দারিদ্র্য থেকে বের করা হয়েছে, ৯.৬ মিলিয়নেরও বেশি দরিদ্র মানুষ স্থানান্তরিত হয়েছেন, এবং শস্য আউটপুট টানা আট বছর ধরে ১.৩ ট্রিলিয়ন কেজি-তে স্থিতিশীল রয়েছে। কৃষি খাতে ও গ্রামীণ এলাকায় ঐতিহাসিক অর্জন এবং ঐতিহাসিক পরিবর্তনগুলো চীনের সমাজতান্ত্রিক আধুনিকায়নের জন্য একটি সুদৃঢ় ভিত্তি তৈরি করেছে।
সিপিসি’র কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেস সর্বাত্মক উপায়ে একটি আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশ গড়ার জন্য একটি বিশাল নীলনকশা তৈরি করেছে, কৃষি ও গ্রামীণ কাজের জন্য সামগ্রিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনকে ব্যাপকভাবে প্রচার করার প্রস্তাব করেছে। একটি শক্তিশালী কৃষিপ্রধান দেশ একটি শক্তিশালী আধুনিক সমাজতান্ত্রিক দেশের ভিত্তি। উন্নত জীবনের জন্য জনগণের চাহিদা পূরণ, উচ্চ-মানের উন্নয়ন অর্জন এবং জাতীয় নিরাপত্তার ভিত্তি সুসংহত করা কৃষি উন্নয়নের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
সরবরাহের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করাও জরুরি। প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেছেন যে, খাদ্য ও গুরুত্বপূর্ণ কৃষিপণ্যের একটি স্থিতিশীল এবং নিরাপদ সরবরাহচেইন নিশ্চিত করতে হবে। প্রাথমিক পণ্য সরবরাহ নিশ্চিত করা একটি প্রধান কৌশলগত বিষয় এবং চীনা জনগণের কর্মসংস্থান অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে। সবসময় চীনাদের নিজেদের হাতে থাকতে হবে খাদ্যের নিয়ন্ত্রণ।
গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার ওপরও প্রেসিডেন্ট সি বারবার জোর দিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, ‘নতুন যুগে একটি শক্তিশালী কৃষিভিত্তিক দেশ গড়ার জন্য ব্যাপকভাবে গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনকে এগিয়ে নেওয়া একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। মানব ইনপুট, বস্তুগত সম্পদ বরাদ্দ এবং আর্থিক সংস্থান অবশ্যই গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের কাজে লাগাতে হবে’। গ্রামাঞ্চলকে পুনরুজ্জীবিত করতে হবে। শিল্প, প্রতিভা, সংস্কৃতি, বাস্তুসংস্থান এবং সংগঠন পুনরুজ্জীবনের কাজ ব্যাপকভাবে এগিয়ে নেওয়া প্রয়োজন। শিল্প পুনরুজ্জীবন গ্রামীণ পুনরুজ্জীবনের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। শিল্পসহায়তানীতি বাস্তবায়ন করা প্রয়োজন।
প্রযুক্তি ও সংস্কারের ওপরও সি চিন পিং গুরুত্ব দিয়ে আসছেন। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন, একটি শক্তিশালী কৃষিপ্রধান দেশ নির্মাণকে ত্বরান্বিত করার জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সংস্কারের উপর নির্ভর করা প্রয়োজন। প্রযুক্তি কৃষির আধুনিকায়নের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক। বিশ্বের কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ওপর নজর রাখা এবং উচ্চ-স্তরের কৃষিবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে স্বনির্ভরতা অর্জন করা জরুরি।
একটি বাসযোগ্য, ব্যবসা-বান্ধব এবং সুন্দর গ্রামাঞ্চল গড়ে তোলাও জরুরি। প্রেসিডেন্ট সি জোর দিয়ে বলেছেন, ‘গ্রামীণ আধুনিকায়ন একটি শক্তিশালী কৃষিদেশ গড়ার পূর্বশর্ত। একটি বাসযোগ্য, ব্যবসা-বান্ধব ও সুন্দর গ্রামাঞ্চল গড়ে তোলাই একটি শক্তিশালী কৃষিদেশের সঠিক অর্থ’। কৃষির আধুনিকায়ন ও গ্রামীণ আধুনিকায়ন সমন্বিতভাবে অর্জন করতে হবে।