বাংলা

মহামারী মোকাবিলা নীতির সময় মতো পরিবর্তনের ফলে চীনে স্বাভাবিক হচ্ছে উত্পাদন ও জীবন

cmgPublished: 2022-12-13 17:26:25
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

ডিসেম্বর ১৩:চলতি মাসের শুরুর দিকে মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থায় পরিবর্তন আসে। ফলে এখন আর স্বাস্থ্য কোড স্ক্যান করার দরকার নেই। এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে যাতায়াতে নিউক্লিক অ্যাসিড পরীক্ষা করারও দরকার নেই। শপিং মলগুলো আবারও খুলেছে। রেস্তোরাঁয় টেকআউট নয়, বরং বসে খাওয়া যায়। এসব ব্যবস্থা চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের সংশ্লিষ্ট বিভাগের সম্প্রতি প্রকাশিত ১০টি অপ্টিমাইজেশন ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

গত তিন বছরের দিকে ফিরে তাকালে মনে পড়বে শহর লকডাউন এবং গ্লোবাল স্ট্যাটিক ম্যানেজমেন্টের মতো শব্দগুলোর কথা। সর্বোপরি, এটি এমন একটি দৃঢ় প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ কৌশল ছিল- যা ভাইরাসের ছড়িয়ে পড়া রোধ করতে সক্ষম হয়েছিল। রোগের আলফা, বিটা, গামা, ডেল্টা নামের করোনভাইরাসের নতুন রূপগুলো যখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, তখন চীন প্রায় ভাইরাস নিরোধক হয়ে উঠেছে।

গত তিন বছরে চীন একাধিক রাউন্ডে বৈশ্বিক মহামারীর প্রভাব থেকে মুক্তি পেয়েছে এবং ভাইরাসের সবচেয়ে সহিংস পর্যায়ে ১৪০ কোটি মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যকে কার্যকরভাবে রক্ষা করেছে। নতুন করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ গুরুতর রোগ এবং মৃত্যুর হার বিশ্বের সর্বনিম্ন পর্যায়ে রেখেছে।

কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিত্সার সব খরচ সরকার বহন করেছে, সকলের জন্য বিনামূল্যে টিকাদান নিশ্চিত করা হয় এবং কোভিড-১৯ রোগের চিকিৎসার ওষুধগুলো চিকিৎসা বীমায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আসলে জনগণের জীবন সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যের সর্বাধিক পরিমাণে সুরক্ষিত রাখাটাই হলো চীনের একমাত্র চাওয়া। এটাই হলো শতাব্দীর সবচেয়ে ভয়াবহ মহামারীর মুখে চীনের বাছাই করা পথ।

কমরেড শি চিনপিং কেন্দ্রিক সিপিসি’র কেন্দ্রীয় কমিটির শক্তিশালী নেতৃত্বে, চীন সর্বদা জনগণের জীবনের নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য এবং স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে। মহামারী প্রতিরোধের সাথে সাথে তা নিয়ে গবেষণা করা এবং সংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞতা সারসংকলন করা ও সুবিন্যস্ত করার নীতি মেনে চলেছে। মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ধারাবাহিকভাবে পূর্ণাঙ্গ করে তোলা হয়।

প্রতিরোধের নয়টি সংস্করণ প্রকাশ থেকে বিশটি অপ্টিমাইজেশন ব্যবস্থা এবং দশটি নতুন ব্যবস্থা প্রকাশ পর্যন্ত চীন মহামারী প্রতিরোধ কৌশলের নমনীয়তা ও স্থিতিশীলতা কার্যকর করার মাধ্যমে মহামারী পরিস্থিতির অনিশ্চিয়তা মোকাবিলা করেছে এবং মহামারী প্রতিরোধ ও অর্থনীতির উন্নয়নের সমন্বয়ে ইতিবাচক ফলাফলও অর্জন করেছে। চীনের অনুশীলন সম্পূর্ণরূপে প্রমাণ করেছে যে চীনের নির্ধারিত মহামারী প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণের নির্দেশিকা এবং নীতিগুলো সঠিক, বৈজ্ঞানিক এবং কার্যকর।

চীন বরাবরই বিজ্ঞানের ভিত্তিতে মহামারী প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করে থাকে। পরিস্থিতির পরিবর্তন অনুযায়ী মহামারী নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের কৌশল প্রণয়ন করে এবং অর্থনীতির উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মহামারী প্রতিরোধ করে। অমিক্রন ভাইরাসের দুর্বল হয়ে ওঠা,টিকাদানের জনপ্রিয়তা এবং মহামারী প্রতিরোধের অভিজ্ঞতার ফলে নতুন প্রকাশিত দশটি ব্যবস্থা আরো সুবিন্যস্ত হয়েছে।

বলা যায়, এ দশটি ব্যবস্থা মহামারী প্রতিরোধের সঙ্গে সঙ্গে আরো ভালোভাবে জনগণের স্বাভাবিক উত্পাদন, জীবন ও স্বাস্থ্যের চাহিদা পূরণ করতে সক্ষম। চীনের অনেক অঞ্চল এই দশটি ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে অর্থনীতি উন্নয়নের কর্মসূচীও প্রকাশ করেছে। চলতি মাস থেকে হাইনান, কুয়াংতোং, ফুচিয়েন, সিছুয়ান এবং অন্যান্য স্থান নতুন দফার ভোক্তা কুপন বিতরণ এবং শপিং ফেস্টিভ্যাল শুরু করেছে। শহরের দর্শনীয় স্থানগুলো পুনরায় চালু হয়েছে। মহামারীর সময়ের খরচ পুষিয়ে নেয়ার আশায় রয়েছে চীনের বিভিন্ন অঞ্চল।

দৈনন্দিন জীবনের গতিতে দ্রুত প্রত্যাবর্তনের মুখোমুখি হয়ে অনেকেই কমবেশি অস্বস্তিতে পড়েন। স্থিতিশীলতা মেনে চলা এবং স্থিতিশীলতা বজায় রাখার সঙ্গে সঙ্গে এগিয়ে যাওয়া,সময়মতো মহামারী প্রতিরোধের সঙ্গতিপূর্ণ নীতিমালা পূর্ণাঙ্গ করে তোলা হলো চীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা। সুশৃঙ্খলভাবে স্বাভাবিক উত্পাদন ও জীবন পুনুরুদ্ধার করার ভিত্তি হলো কার্যকর প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ। পুনরুদ্ধারের প্রবতণতা বজায় রাখতে চাইলে পরবর্তীতে নিয়মিত প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে হয়।

বর্তমানে চিকিত্সা কৌশল এবং প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কৌশল অব্যাহতভাবে সুবিন্যস্ত হচ্ছে। আমাদের নিয়মিত প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ শেষ হয় নি, বরং মহামারীর রূপান্তর নিয়ে গবেষণা করা, জনগণে প্রাধান্য দেয়া,ওষুধের গবেষণা দ্রুততর করা এবং চিকিত্সা দক্ষতা বাড়ানো উচিত্। তা ছাড়া, জনগণকে স্বাস্থ্য সচেতন করে তাদেরকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে মনোনিবেশ করিয়ে নিজের জন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তোলা উচিত্।

লিলি/এনাম

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn