স্বপ্ন বাস্তবায়নে চীন সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে
গত শনিবার চায়না কমিউনিকেশন্স কনস্ট্রাকশনের অধীনে চায়না রোড এ্যান্ড ব্রিজ কোর্পারেশনের নির্মাণ করা চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দেশের প্রথম যোগাযোগ পথের (টানেল) একটি সুড়ঙ্গের (টিউব) নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। এই সুড়ঙ্গ চট্টগ্রামের আনোয়ারা প্রান্ত থেকে শুরু হয়ে নগরের পতেঙ্গা প্রান্তে গিয়ে শেষ হয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। বাংলাদেশের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সবসময় আশা করতেন চট্টগ্রামের মানুষের যোগাযোগের অবস্থা উন্নত করা যায়। এমন স্বপ্ন পূরণের পথ হল চীন ও বাংলাদেশের নিরলস চেষ্টা। যা চীন-বাংলাদেশ মৈত্রীর আরেকটি মাইলফলক।
দক্ষিণ এশিয়ায় পানির নিচ দিয়ে নির্মাণ করা এটাই প্রথম টানেল। এর মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩ কিলোমিটার। পরিকল্পিত গতি ঘন্টায় ৮০ কিলোমিটার। প্রায় ৩৮০ একর জায়গাজুড়ে নির্মাণাধীন এই টানেলের প্রবেশ পথে আছে বৃষ্টি থেকে সুরক্ষা পাবার শেল্টার। পতেঙ্গা থেকে আনোয়ারা, দুই পাড়ে চলাচলের জন্য আছে ২টি করে মোট ৪টি লেন। আছে চমৎকার ডিজাইনের টোলপ্লাজা ও সার্ভিস এরিয়া বাংলো।
প্রকল্পটি চীন আমদানি-রপ্তানি ব্যাংকের অর্থায়নে তৈরি হয়েছে। এতে চীনের মানদণ্ডে ডিজাইন করে, চীনের সরঞ্জামে নির্মাণ করে এবং চীনের প্রতিষ্ঠানের পরিচালনায় চলে। তা বিদেশে চীনের অবকাঠামো নির্মাণের একটি উজ্জ্বল নেমকার্ড হবে। প্রকল্পটি ‘বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমার’ অর্থনৈতিক করিডোর এবং ‘এক অঞ্চল, এক পথ’ নির্মাণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রকল্প নির্মাণের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে চট্টগ্রামের যোগাযোগ-ব্যবস্থা উন্নত করবে, আঞ্চলিক অর্থনীতির উন্নয়ন এগিয়ে নেবে, সেই সঙ্গে আশেপাশের দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ এবং বাংলাদেশের আন্তর্জাতিকায়ন জোরদার হবে।
শনিবার সকালে এই নির্মাণকাজের সমাপ্তি ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে এটাই প্রথম টানেল। এটি একটি বিস্ময়। এটি আমাদের জন্য বিরাট কাজ। তাই সরাসরি দেখার আগ্রহ ছিল। দেখে আসতে পারলে ভালো হতো। এখন মন পড়ে আছে চট্টগ্রামের টানেলে।’টানেলের কারণে চট্টগ্রামের গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে। এটি একটি বিরাট অর্জন। টানেলের কারণে কর্ণফুলী নদীর দুই প্রান্ত সমানভাবে উন্নত হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশেষ করে নদীর দক্ষিণ প্রান্তে পরিকল্পিতভাবে শিল্পায়ন ও নগরায়ন হওয়ার সুযোগ রয়েছে। টানেলের মাধ্যমে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ গড়ে উঠবে।