আজকের টপিক: চলতি বছরের ব্রিকস সম্মেলন প্রসঙ্গ
জুন ১৬: মার্কোস লিমা, ব্রাজিলের ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অফ পার্নামবুকো-এর আন্তর্জাতিক রাজনীতির অধ্যাপক এবং সেন্টার ফর এশিয়ান স্টাডিজের পরিচালক, সিনহুয়া বার্তা সংস্থার সাথে এক বিশেষ সাক্ষাত্কারে বলেছেন, ব্রিকস প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রকৃত বহুপাক্ষিকতার অনুশীলন করে ও তার সপক্ষে প্রচার চালিয়ে আসছে। ব্রিকস নেতাদের সম্মেলন তাই অত্যন্ত তাত্পর্যপূর্ণ।
লিমা বলেন, চীন এই বছর ব্রিকসের সভাপতিরাষ্ট্র। আশা করা যায়, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো ‘উচ্চমানের অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং যৌথভাবে বিশ্বব্যাপী উন্নয়নের একটি নতুন যুগ তৈরি করা’ শীর্ষক থিমের অধীনে ব্যবহারিক সহযোগিতার প্রচার চালিয়ে যাবে।
লিমা ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিক্ষকতা করছেন এবং ব্রিকসের ওপর অনেক বই সম্পাদনা করেছেন। তিনি আশা করেন, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো একটি উন্নয়ন এজেন্ডা নির্ধারণ করবে এবং অবকাঠামো, পরিবেশনীতি ও দারিদ্র্য দূরীকরণে বিনিয়োগ জোরদার করবে। তিনি বলেন, চীন নিরঙ্কুশ দারিদ্র্য দূর করেছে এবং কৃষক ও গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পে সহায়তা অব্যাহত রেখেছে। এ বিষয়ে, চীন অন্যান্য ব্রিকসভুক্ত দেশ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারে।
লিমা বলেন, ব্রিকস দেশগুলো সবসময়ই খাদ্য-নিরাপত্তাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে আসছে এবং খাদ্য-নিরাপত্তা ব্রিকস কাঠামোর অধীনে চলতি বছরের সম্মেলনের একটি প্রধান ফোকাস।
লিমা বলেন, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলো পরিবেশসংশ্লিষ্ট সমস্যা মোকাবিলায় ‘ব্রিকস সমাধান’ অন্বেষণ করছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, চীন দূষণ সমস্যা সমাধানের করার দুর্দান্ত প্রচেষ্টা চালিয়েছে এবং ‘২০৩০ সালের মধ্যে সর্বোচ্চ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গমন এবং ২০৬০ সালের মধ্যে কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের জন্য প্রচেষ্টা করার’ গৌরবপূর্ণ অঙ্গীকার করেছে। এ ছাড়াও, চীন পরিবেশগত সুরক্ষার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দেয় এবং নতুন শক্তির উত্স সন্ধানে রত, যা কার্বন নিঃসরণ কমাতে ও পরিবেশগত সভ্যতা নির্মাণে অবদান রাখতে সহায়তা করবে।
চীন ২০০৯ সাল থেকে ব্রাজিলের বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার। কোভিড মহামারী দেখা দেওয়ার পর, ব্রাজিল-চীন অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সহযোগিতা বেড়েছে। ব্রাজিলকে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করেছে চীন। লিমার দৃষ্টিতে, ব্রাজিল ও চীনের মধ্যে সহযোগিতার আরও সম্ভাবনা রয়েছে। ডিজিটাল প্রযুক্তি, নতুন কৃষি, পুনঃব্যবহারযোগ্য শক্তি, পরিবেশ সুরক্ষা, এবং নগর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে দিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানো যেতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
লিমা চার বার চীন সফর করেছেন এবং ‘চীনের অসাধারণ সংস্কৃতি’ সম্পর্কে তার গভীর উপলব্ধি আছে। তিনি সরল, বন্ধুত্বপূর্ণ ও কঠোর পরিশ্রমী চীনা জনগণের দ্বারা গভীরভাবে প্রভাবিত হন। এই সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘চীনের শহরগুলো যে-গতিতে গড়ে উঠছে, তা বিস্ময়কর। আমি নিরক্ষরতা হ্রাস, আয়ু বৃদ্ধি এবং কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে ওঠার গতি দেখেও মুগ্ধ।’
তিনি বলেন, চীনের একটি দীর্ঘ ও রঙিন ইতিহাস এবং সংস্কৃতি রয়েছে। মানবসভ্যতায় অনেক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে চীন। তিনি আশা করেন, চীন অন্যান্য দেশের সাথে সাংস্কৃতিক বিনিময় আরও বাড়াবে।