বাংলা

মহামারি প্রতিরোধে চীনের নতুন ব্যবস্থা

CMGPublished: 2022-05-16 20:03:47
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

কেবল পনেরো মিনিট হেঁটেই নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্টে করা যাবে চীনে। গত ১৩ মে চীনের রাষ্ট্রীয় পরিষদের যৌথ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা কার্যালয়ের এক প্রেস ব্রিফিংয়ে ১৫ মিনিট হাঁটার দূরুত্বের নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্টের সার্কেল গড়ে তোলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। বর্তমানে হাং চৌ ও শেন জেনসহ নানা শহরে এর বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং কিছু অগ্রগতিও অর্জিত হয়েছে।

চীন এ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে কারণ এতে মহামারি প্রতিরোধ নেট গঠন সহজ হবে। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের গবেষক কুও ইয়ান হোং জানিয়েছেন: “এ ব্যবস্থায় জনগণ কাছ থেকে নিউক্লিক অ্যাসিড টেস্ট করার সুবিধা উপভোগ করার পাশাপাশি যত দ্রুত সম্ভব আক্রান্ত রোগী সনাক্ত করা সম্ভব হবে, যা দ্রুত মহামারি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। ওমিক্রন ভাইরাস দ্রুত ছড়াতে পারে। তাই ধীরে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অনেকে আক্রান্ত হতে পারে। আর চীন সরকার এর সব খরচ বহন করছে”।

যত দ্রুত রোগী সনাক্ত হয়, তত দ্রুত মোকাবিলা করা যায়, তা হলো মহামারি প্রতিরোধের সোনালী নীতি। পেকিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লিউ মিন বলেন, দ্রুত রোগী সনাক্ত হলে মহামারি ছড়ানো ঠেকানো যায় এবং প্রবীণ ও যারা আগে থেকেই নানা জটিল রোগে আক্রান্ত এবং যাদের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো নয়, তাদের জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ।

চীন মহামারি প্রতিরোধে ১৫ মিনিট হাঁটার দূরুত্বে টেস্ট সার্কেল গঠনসহ ব্যাপক শক্তি নিয়োগ করছে। তাতে বোঝা যায়, মানুষের প্রাণ ও নিরাপত্তা রক্ষার বিষয়কে চীন সবসময় অগ্রাধিকার দেয়। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক সংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেছেন, মহামারির বৈচিত্র্য ও ভবিষ্যতের পূর্বাভাস অনুযায়ী ‘গতিশীল শূন্য নীতি’ স্থায়ী হতে পারবে না। তাঁর এ কথা চীনের মহামারি প্রতিরোধ নীতির এক ধরণের সমালোচনা বলে পশ্চিমা গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়। কিন্তু একই ইভেন্টে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দুজন বিশেষজ্ঞ সার্বিকভাবে চীনের নীতি নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তাদের মধ্যে একজন বলেছেন, চীন বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ। মহামারি প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া গ্রহণযোগ্য। তবে তার কথাগুলো উপেক্ষা করেছে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ছেন সি বলেন, চীনের গতিশীল শূন্য নীতি স্থায়ী হবে না বলে যে মন্তব্য করেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক, তাতে তিনি কত সময়ের কথা বলেছেন? এ বিষয়ে স্পষ্ট করে বলতে হবে। ছেন সি মনে করেন, চীনের গতিশীল শূন্য নীতির কারণে মহামারি প্রতিরোধের জন্য সময় তৈরি করেছে। এ সময়কালে ভ্যাকসিন দেওয়া, অবস্থা অনুযায়ী চিকিত্সা দেওয়া ও আইসোলেশনে নেওয়া এবং জনসাধারণের মানসিকতা পরিবর্তনসহ নানা কাজ চালানো হয়েছে।

সর্বশেষ এক গবেষণা থেকে জানা গেছে, চীন এ নীতি পালন না করলে ছয়মাসে ১৫ লাখ ৫০ হাজার মানুষের প্রাণহানি হতে পারে। চীন বৃহত জনসংখ্যার দেশ। বুড়োদের সংখ্যা অনেক বেশি। বিভিন্ন অঞ্চলে উন্নয়ন ভারসাম্যহীন এবং চিকিত্সা সম্পদও পর্যাপ্ত নয়। মহামারি প্রতিরোধ ব্যবস্থা শিথিল হলে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়া এবং অনেকের প্রাণহানি ঘটতে পারে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বর্তমান বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে চীন বর্তমানে গতিশীল শূন্য নীতিতে অবিচল থাকছে এবং কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। এককথায়, নিজের বাস্তবতা থেকে গতিশূল শূন্য নীতি পালন এবং পরিস্থিতির সাথে নানান ব্যবস্থা সুবিন্যস্ত করে চীন। এসব কর্মকান্ডের মূল লক্ষ্য হচ্ছে মানুষের নিরাপত্তা ও প্রাণ রক্ষা এবং অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীল উন্নয়ন সাধন করা।

রুবি/এনাম

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn