লিমায় সি চিন পিং এবং জো বাইডেনের বৈঠক
নভেম্বর ১৭: পেরু সময় গতকাল (শনিবার) বিকালে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন লিমায় বৈঠক করেছেন।
সি চিন পিং বলেছেন, গত চার বছরে যদিও দু’দেশের সম্পর্ক অস্থিতিশীল ছিল, তবুও দু’দেশের সংলাপ ও সহযোগিতাও বজায় ছিল। চার বছরের অভিজ্ঞতা থেকে কয়েকটি বিষয়ের ওপর নজর রাখা উচিত।
প্রথমত, সঠিক কৌশলগত বোঝাপড়া বজায় রাখা উচিত। দ্বিতীয়ত, প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করা উচিত। তৃতীয়ত, সমানভাবে আচরণ করা উচিত। চতুর্থত, এক চীন নীতি এবং চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি যৌথ ইশতাহার হলো দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের রাজনৈতিক ভিত্তি- এই সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে। তাইওয়ান, মানবাধিকার, দেশের ব্যবস্থা, উন্নয়নের অধিকার হলো চীনের চারটি অনতিক্রম্য সীমারেখা, তাকে চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।
পঞ্চমত, বেশি করে সংলাপ ও সহযোগিতা চালানো উচিত। ষষ্ঠত, জন-আকাঙ্ক্ষায় সাড়া দেয়া উচিত; এবং বড় দেশের দায়িত্ববোধ প্রদর্শন করা উচিত। পাশাপাশি, বিশ্বের ঐক্যের জন্য সক্রিয় ভূমিকা রাখা উচিত।
সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন, চীন-মার্কিন সম্পর্কের স্থিতিশীল, সুষ্ঠু ও টেকসই উন্নয়নের জন্য চীনের প্রচেষ্টা পরিবর্তন হবে না। পারস্পরিক সমান, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের নীতির পরিবর্তন হবে না। নিজের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষার অবস্থানেরও পরিবর্তন হবে না। চীন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপ বজায় রাখা, সহযোগিতা সম্প্রসারণ করা এবং মতভেদ নিয়ন্ত্রণ করতে চায়।
সি চিন পিং বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান প্রণালীর শান্তি রক্ষা করতে চাইলে সঠিকভাবে তাইওয়ান ইস্যুর মোকাবিলা করতে হবে, স্পষ্টভাবে ‘স্বাধীন তাইওয়ান প্রয়াসীদের’ বিরোধিতা করতে হবে এবং চীনের শান্তিপূর্ণ ঐক্যকে সমর্থন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, চীনের সাইবার আক্রমণের অভিযোগের কোনো প্রমাণ নেই, যুক্তিও নেই। চীন নিজেই আন্তর্জাতিক সাইবার আক্রমণের শিকার, চীন যে কোনো ধরনের সাইবার আক্রমণের বিরোধিতা করে।
চীন দৃঢ়ভাবে দক্ষিণ চীন সাগরের সার্বভৌমত্ব ও সামুদ্রিক স্বার্থ রক্ষা করে। নানশা দ্বীপপুঞ্জের সমস্যায় যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত হওয়া ঠিক না।
সি বলেন, ইউক্রেন সমস্যায় চীনের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট, তা হলো শান্তি আলোচনা এবং শান্তি বাস্তবায়নের জন্য চেষ্টা করা।
এসবের জবাবে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র নতুন স্নায়ুযুদ্ধ চায় না, চীনের ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চায় না, চীনের বিরোধিতাও চায় না। যুক্তরাষ্ট্র স্বাধীন তাইওয়ানের বিষয়ে সমর্থন করে না, চীনের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াতে চায় না, যুক্তরাষ্ট্র অব্যাহতভাবে এক চীন নীতি মেনে চলবে। অন্তর্বর্তীকালীন সময়ে যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সংলাপ জোরদার করবে এবং মতভেদ নিয়ন্ত্রণ করবে।