বাংলা

৬৪ বছর বয়সী প্রবীণ লিউ ছাই ইয়ুনের বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণ

CMGPublished: 2024-05-16 16:03:58
Share
Share this with Close
Messenger Pinterest LinkedIn

বয়সের সাথে সাথে ভদ্র এবং প্রশান্ত মেজাজ তৈরি করা যায় এবং স্বপ্ন এবং আবেগ অর্জন করা যায়। আজকের এ অনুষ্ঠানে আমরা ৬৪ বছর বয়সী প্রবীণ লিউ ছাই ইয়ুনের বিমান চালনার স্বপ্ন-পূরণের গল্প বলবো।

লিউ ছাই ইয়ুন চীনের হু নান প্রদেশের লিউ ইয়াং শহরের মানুষ। তার বয়স ৬৪ বছর। এতো বয়সী হলেও তিনি নিজের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য বিমান চালনা শিখেছেন। অবশেষে তিনি স্পোর্টস-পাইলটের লাইসেন্স পেয়ে সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেছেন।

হুনান প্রদেশের বিন চৌ শহরের বেইহু বিমানবন্দরে লিউ ছাই ইয়ুন তার ‘প্রথম ফ্লাইট’ পরিচালনা করেন। সেদিন, রানওয়ের উপরে আকাশে মেঘ ছিল এবং এই ধরনের আবহাওয়ায় ফ্লাইট পরিচালনায় অতিরিক্ত চ্যালেঞ্জ থাকে।

কোচ-পাইলট চাও চিন বলেন, আজ নিম্ন আকাশে মেঘ রয়েছে। তবে এতে দৃশ্যমানতার কোন সমস্যা নেই। আতঙ্কিত হবেন না, ড্যাশবোর্ডটি দেখুন এবং দিগন্তে চোখ রাখুন।”

লিউ ছাই ইয়ুন যে স্পোর্টস এয়ারক্রাফটে উড়বেন তার সর্বোচ্চ ফ্লাইট-উচ্চতা ৪৫০০ মিটারের বেশি নয়। উড্ডয়নের আগে লিউ ছাই ইয়ুন ফ্লাইট প্রশিক্ষকের নির্দেশে একটি প্রি-টেক-অফ নিরাপত্তা পরীক্ষা করেন। ল্যান্ডিং গিয়ার, ককপিট থ্রোটল লিভার, অপারেটিং লিভার ইত্যাদির ৮০টিরও বেশি অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক পরীক্ষণের পরে, তারা টাওয়ারের কাছে যাত্রার অনুমতি চান।

স্পোর্টস এয়ারক্রাফ্টের সর্বোত্তম নিয়ন্ত্রণের অনুভূতি আসে মানুষ এবং মেশিনের মধ্যে ক্রমাগত চলমান অনুশীলন থেকে। ৪০ মিনিট ধরে টেক-অফ এবং ল্যান্ডিং পরিক্ষণের পরে লিউ ছাই ইয়ুন নতুন মডেলের থ্রটল এবং জয়স্টিকগুলোর মধ্যে আঁটসাঁট ফিট সম্পর্কে পরিচিত হয়েছেন। একটানা এক ঘণ্টা ধরে উড়ানোর পর লিউ ছাই ইয়ুন লিভার চালানো, ফিউজেলের ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ, ঘোরাঘুরি এবং সমান্তরাল উড্ডয়নসহ সবই নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হন।

আশাপাশের অনেক মানুষ এটাকে অবিশ্বাস্য মনে করে যে, ৬০ বছরের বেশি বয়সী কেউ একজন পাইলটের লাইসেন্সের জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। একটি স্পোর্টস এয়ারক্রাফটের পাইলটের লাইসেন্স পাওয়ার জন্য লিউ ছাই ইয়ুন তার পরিবারকে না জানিয়ে গোপনে উড়তে শিখেছিলেন। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য উড়তে শেখার সিদ্ধান্ত নিতে তাঁর দেড় বছর লেগেছিল। এই প্রক্রিয়া চলাকালে তিনি যে উত্থান-পতনের অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন, তাতে তিনি প্রায় হাল ছেড়ে দিচ্ছিলেন।

বহু বছর ধরে পর্যটন শিল্পে কাজ করছেন বলে লিউ ছাই ইয়ুন বিমান চালানোর ক্ষেত্রে অনেক বন্ধুর সাথে পরিচিত হয়েছেন। শৈশব থেকেই তিনি উড্ডয়নের বিষয়ে অনেক কিছু শিখেছেন। তিনি আবার নীল আকাশে ওড়ার স্বপ্ন দেখেন। ২০২২ সালের মে মাসে তিনি টেস্ট ফ্লাইটে ভালো অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।

প্রবিধান অনুযায়ী, যে সকল শিক্ষার্থী পাইলট লাইসেন্স পায় তাদের অবশ্যই মোট ৩১ ঘন্টার বেশি উড্ডয়ন অনুশীলন করতে হয়। প্রশিক্ষণের চতুর্থ ঘন্টায় লিউ ছাই ইয়ুন হাল ছেড়ে দেওয়ার চিন্তা করেছিলেন। সেই সময়ে বেই হু বিমানবন্দরের বাইরে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘ সময়ে ইঞ্জিন চালু করার পরে কেবিনের উচ্চ তাপমাত্রা এবং দীর্ঘমেয়াদী প্রশিক্ষণের শারীরিক পরিশ্রমের কারণে তিনি মনোসংযোগ ধরে রাখতে পারতেন না। তবে ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অবশেষে লিউ ছাই ইয়ুন এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সিদ্ধান্তে অটল থাকতে সক্ষম হয়েছেন।

২০২৩ সালের ২৬ ডিসেম্বরে লিউ ছাই ইয়ুন অবশেষে কাঙ্ক্ষিত পাইলট লাইসেন্স পান। তাঁর মতে, প্রত্যেকের জীবনে সীমাহীন সম্ভাবনা রয়েছে। আন্তরিকভাবে চেষ্টা করলে এবং অধ্যবসায়ী হলে যে কারো আকাশে ‘ওড়ার’ স্বপ্ন সত্যি হতে পারে।

Share this story on

Messenger Pinterest LinkedIn