বাংলা

জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনে চীনা প্রেসিডেন্ট ও প্রসঙ্গকথা

CMG2024-11-18 10:59:08

নভেম্বর ১৮: ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভার আমন্ত্রণে চীনা প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং গত ১৭ নভেম্বর রিও ডি জেনিরো পৌঁছান। ব্রাজিলে তিনি ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অবস্থান করবেন এবং ১৮ ও ১৯ নভেম্বর রিও ডি জেনিরোতে অনুষ্ঠেয় জি-টোয়েন্টি ১৯তম শীর্ষসম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। শীর্ষসম্মেলনে সি চিন পিং বিভিন্ন সদস্যদেশের নেতাদের সঙ্গে উন্নয়ন ও সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করবেন।

এবারের জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য: একটি ন্যায্য বিশ্ব এবং টেকসই পৃথিবী নির্মাণ। এটি সারা বিশ্বের মানুষের আশার সাথে সংগতিপূর্ণ। বর্তমানে বিশ্ব ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এ প্রেক্ষাপটে, বিশ্বের উন্নয়নে চীন স্টেবিলাইজারের ভূমিকা পালন করছে। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগের মাধ্যমে চীন বিশ্বের সরবরাহ শৃঙ্খল জোরদার করেছে। এটি বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বিশ্বের অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ইতিবাচক অবদান রেখেছে। বহু বছর ধরে সি চিন পিং জি-টোয়েন্টি শীর্ষসম্মেলনে চীনা পরিকল্পনা ও তা বাস্তবায়নের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে আসছেন। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।

২০১৬ সালে চীনের হাংচৌতে আয়োজিত জি-টোয়েন্টির শীর্ষসম্মেলনে সি চিন পিং প্রথম বারের মতো চীনের উদ্যোগে বিশ্ব অর্থনৈতিক সমস্যা মোকাবিলার ধারণা তুলে ধরেন। ২০১৯ সালে জাপানের ওসাকায় আয়োজিত শীর্ষসম্মেলনে তিনি বিশ্বের শান্তিপূর্ণ উন্নয়ন এবং আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচার সুরক্ষার জন্য চীনা পরিকল্পনা তুলে ধরেন। ২০২২ সালে ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপে আয়োজিত শীর্ষসম্মেলনে তিনি বিভিন্ন দেশকে একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও স্থিতিস্থাপক বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানান।

সম্প্রতি বাংলাদেশের ইনডিপেনডেন্ট টেলিভিশনের উপ-সম্পাদক বলেন, চীন হলো বিশ্বের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণকারী। চীনের বৈদেশিক উন্মুক্তকরণের মান আরও উন্নত হচ্ছে। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগ হলো চীনের আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ত্বরান্বিতের একটি আদর্শ উদাহরণ। এ উদ্যোগ বাংলাদেশকে বাস্তব কল্যাণ এনে দিয়েছে। এ উদ্যোগের আওতায় বাংলাদেশের পরিবহনব্যবস্থার উন্নত হয়েছে এবং অর্থনীতি উন্নয়নের নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

চীন আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, সর্বজনীন ও টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানায়। সি চিন পিং বিশ্ব উন্নয়ন পরিকল্পনা তুলে ধরার তিন বছরে শতাধিক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থা এর প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেছে। এর আওতায় ১১০০টিরও বেশি সহযোগিতা-প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এটি জাতিসংঘের ‘এজেন্ডা ২০৩০’ বাস্তবায়নের জন্য ‘চীনা বুদ্ধি’ তুলে ধরে এবং বিশ্বের দক্ষিণ দেশগুলোর জন্য কল্যাণ বয়ে আনে।

গত ২৫ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে আয়োজিত চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ও বাংলাদেশের অস্থায়ী সরকারের প্রধান ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূস এক বৈঠকে মিলিত হন। ইউনূস বলেন, চীন মানব ইতিহাসে একের পর এক অলৌকিক ঘটনা সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে দারিদ্র্যবিমোচনে অভূতপূর্ব সাফল্য অর্জিত হয়েছে চীনে। এটি গভীরভাবে প্রশংসনীয়। বাংলাদেশ চীনা অভিজ্ঞতা থেকে শিখতে চায় এবং অব্যাহতভাবে চীনের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সহযোগিতা বাড়াতে আগ্রহী।

সি চিন পিং ২০১৬ সালে জি-টোয়েন্টির শিল্প ও ব্যবসা শীর্ষসম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য: প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন সকল দেশ ও জনগণের উপকারে আসুক। জি-টোয়েন্টির সদস্যগুলোর মধ্যে উন্নত অর্থনৈতিক সত্তা ও নতুন বাজারের অর্থনৈতিক সত্তা আছে। বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল দেশ ও বিশ্বের দক্ষিণ দেশ হিসেবে চীন জি-টোয়েন্টি’র মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ইস্যুতে দক্ষিণের দেশগুলোর কথা বলার অধিকার ও প্রতিনিধিত্ব উন্নয়নের চেষ্টা করে আসছে।”

Close
Messenger Pinterest LinkedIn