বাংলা

ছেংতু ৩১তম বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গেমস প্রসঙ্গ

CMG2023-08-02 09:10:45

গত আটাশে জুলাই থেকে চীনের সিছুয়ান প্রদেশের রাজধানী ছেংতুতে শুরু হয়েছে ৩১তম বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গ্রীষ্মকালীন গেমস; চলবে ৮ অগাস্ট পর্যন্ত। মহামারি শেষ হবার পর চীনে অনুষ্ঠিত প্রথম আন্তর্জাতিক গেমস এটি এবং পশ্চিম চীনের ছেংতু শহরে অনুষ্ঠিত প্রথম বড় আকারের আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা।

চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ২৮ জুলাই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন, ছেংতু বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গেমস চীনা বৈশিষ্ট্যের, সমকালীন, ও তারুণ্যখচিত একটি ক্রীড়া অনুষ্ঠান হবে। এতে বিশ্বের নানান দেশের যুবক-যুবতীরা পরস্পরকে জানতে পারবে।

বিশ্ব বিশ্ববিদ্যালয় গেমস গ্রীষ্মকালে ও শীতকালে অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর গ্রীষ্মে এই গেমস অনুষ্ঠিত হচ্ছে; আগামী বছর অনুষ্ঠিত হবে শীতে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে যাদের বয়স ১৭ থেকে ২৮ বছর, তাঁরা এই গেমসে অংশগ্রহণ করতে পারে। এবার বিশ্বের ১১৩টি দেশ ও অঞ্চলের ৬৫০০ জন ক্রীড়াবিদ গেমসে অংশগ্রহণ করছে, যা একটি রেকর্ড। একে ‘ছোট অলিম্পিক গেমস’ বলেও ডাকা হয়। কারণ, আকারের দিক থেকে দেখলে, এটি অলিম্পিক গেমসের পর দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং এতে অংশগ্রহণকারী অনেক ক্রীড়াবিদ আগামী বছরের অলিম্পিক গেমসেও অংশ নেবেন। এবারের গেমস তাদের দক্ষতা যাচাইয়ের গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম।

মহামারির কারণে এবার গেমস দু’বার পিছিয়েছে। তবে, ছেংতু এ সময় কাজে লাগিয়ে আরও উচ্চ পর্যায় ও মানের স্টেডিয়াম নির্মাণ ও রূপান্তর করেছে। এবারের গেমসের স্টেডিয়ামের মান অলিম্পিক গেমসের পর্যায়ের সমান। পাশাপাশি সহজ, নিরাপদ ও চমত্কার একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য ছেংতু নানা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

এবার গেমস ভিলেজ ছেংতু বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে স্থাপন করা হয়েছে। গেমসের পর ক্রীড়াবিদদের ডরমিটরি শিক্ষার্থীদের ডরমিটরি হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

পান্ডার কারণে ছেংতু বিশ্ববিখ্যাত একটি শহর। আসলে ছেংতু একটি সাংস্কৃতিক ও আধুনিক শহর। ২০২২ সালে ছেংতু শহরের জিডিপি ২ ট্রিলিয়ন ইউয়ানের বেশি ছিল এবং ছেংতু বিমানবন্দরের যাত্রী থ্রুপুটও চীনে সবচেয়ে বেশী। টানা ১৪ বছর ধরে ছেংতু চীনের সবচেয়ে সুখী শহর এবং ৪ বছর ধরে বিদেশীদের চোখে সবেচয়ে আকর্ষণীয় শহর হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট সি সবাইকে ছেংতু শহরে ঘুড়ে বেড়ানোর আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আমার মতে ছেংতু দেখে আধুনিক চীনের কিছু রূপ দেখতে পারেন বিদেশীরা।

ক্রীড়ার ওপর চীন সরকার বেশ গুরুত্ব দেয়। চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র কুড়িতম জাতীয় কংগ্রেসে, ২০৩৫ সালের মধ্যে চীনকে শক্তিশালী ‘ক্রীড়া দেশ’ হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য ঠিক করা হয়। সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে চীন সামনে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনেক বিশ্ববিখ্যাত ক্রীড়াবিদ বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় গেমস থেকে বিশ্বের মঞ্চে উঠে এসেছেন অতীতে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না। যৌবন মানে জীবনীশক্তি, যৌবন মানে আশা। প্রথম দিন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় গেমস যেন যৌবন, ঐক্য ও মৈত্রীর লীলাক্ষেত্র। যখন বিশ্বের মানুষ হাতে হাত রেখে প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন, মৈত্রী লালন করেন, একসাথে এগিয়ে যান, তখন ছেংতুতে শুধু স্বপ্ন নয় বরং সুন্দর একটি ভবিষ্যতের নির্মাণকাজ চলছে। এটিই ক্রীড়ার মোহিনীশক্তি।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn