বাংলা

নাউরুতে চীনা প্রতিষ্ঠানের নির্মিত পিভি

CMG2024-05-13 11:02:03

বন্ধুরা, কর্মসূচী অনুযায়ী চীনা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে নাউরুর প্রথম ফোটোভোলটাইক পাওয়ার জেনারেশন ও শক্তি সঞ্চয় সিস্টেম প্রকল্প এ বছরের দ্বিতীয়ার্ধে নির্মাণ শেষ হবে এবং আনুষ্ঠানিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের পর এটি পুরো দ্বীপ দেশের বিদ্যুতের চাহিদা মেটাবে।

উল্লেখ্য, প্রায় একশ’ নাউরু কর্মী প্রকল্প নির্মাণে অংশগ্রহণ করেছেন। ২৯ বছর বয়সী জন স্কট বলেন, বর্তমান নাউরু প্রধানত ডিজেল জ্বালানি ব্যবহার করে বিদ্যুত্ উত্পাদন করে। খরচ বেশি ও দূষণ ভারী। তবে এখানে সূর্যালোকের সময় দীর্ঘ, যা সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য খুবই উপযোগী। বিশ্বাস করা যায়, এ প্রকল্প কেবল স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহই উন্নত করবে না, বরং পরিবেশ সুরক্ষার ক্ষেত্রেও কল্যাণকর হবে।

এদিকে নাউরু’র দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে একটি আধুনিক বন্দর তৈরি হচ্ছে। ক্রেন অপারেশনের গর্জনের মধ্যে হার্ড টুপি ও ওভারওল পরা শ্রমিকরা ব্যস্ততার মধ্যে কাজ করছেন।

এটি হলো চীনা প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে আইওও বন্দর আপগ্রেডিং ও রূপান্তর প্রকল্প। ২০১৯ সালে প্রকল্পটি নির্মাণ শুরু হয়। বর্তমান অধিকাংশ নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রকল্পটি নাউরুর জন্য উন্নত প্রযুক্তি এনে দেয় ও ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশকে বিশ্বের সঙ্গে আরও দক্ষতার সাথে সংযুক্ত করেছে।

আইওও বন্দর প্রকল্পের ডেপুটি ম্যানিজার চু ওয়েই বলন, আগের বন্দরটি ছিল খুবই ছোট। কন্টেইনার জাহাজ সরাসরি ডক করতে পারতো না। প্রতি দুই মাসে একটি মাত্র কন্টেইনার জাহাজ আসত। বর্তমানে জাহাজ নতুন বন্দরে সরাসরি ডক করতে পারে। এমনকি মাসে একবার বা এমনকি ২০ দিনেও একটি কন্টেইনার জাহাজ আসতে পারে। তিনি নাউরুতে পাঁচ বছর ধরে কাজ করেছেন। তিনি প্রকল্পের ব্লুপ্রিন্ট থেকে বাস্তবতা ধাপে ধাপে প্রত্যক্ষ করেছেন।

২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর আইওও বন্দর টার্মিনাল প্রকল্পটি সফলভাবে খোলা এবং পরিচালনা করা হয়। এদিন নাউরুর নাগরিকরা উত্তেজিতভাবে ছবি তুলতে ঘাটে ভিড় করে।

গত ৭ ফেব্রুয়ারি প্রকল্পের কাছে আসা সব প্রধান সড়ক ঢেলে দেওয়া হয়েছে। সড়কটি চালু হওয়ার পর পরিবহনের ব্যবস্থা আরেক ধাপে উন্নীত হয়েছে এবং কাছাকাছি এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়ন জোরদার করা হয়। এ সম্পর্কে চু ওয়েই বলেন, চীনা প্রতিষ্ঠান অবশ্যই প্রকল্পটির নির্মাণ দ্রুততর করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নাউরুর জনগণের উপকার করার চেষ্টা করছে।

নাউরু’র পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিওনেল অ্যাঙ্গারমিন বলেন, গত কয়েক দশকে চীন অভূতপূর্ব উন্নয়ন করেছে। চীন অনেক দেশের সঙ্গে সহযোগিতামূলক অংশীদারি সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। এটি বিশ্বায়ন উন্নয়নের সহায়ক। চীনের আন্তর্জাতিক প্রভাব বিস্তৃত হচ্ছে।

গত ২৯ জানুয়ারি নাউরুতে চীনা দূতাবাস পুনরায় খুলেছে। ১৯ বছর পর চীনা জাতীয় পতাকা পুনরায় নাউরুতে উড়তে দেখা গেছে।

চীনা প্রতিষ্ঠানের কর্মী দেং ইউ এ জাতীয় পতাকা নিয়ে নাউরুতে গিয়েছিলেন। এই ঘটনাটি স্মরণ করার সাথে সাথে দেং ইউ খুব উত্তেজিত বোধ করেন। গত জানুয়ারির মাঝামাঝি তিনি চীন থেকে নাউরুতে যাওয়ার সময় পতাকাটি তার ব্যক্তিগত ব্যাকপ্যাকে রেখেছিলেন এবং ঘুমানোর সময় সাথে রেখেছিলেন। তিন দিন দুই রাতে ১২ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি পথ, তিনি চীনা জাতীয় পতাকা নাউরুতে নিয়ে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, যখন আমি এ পতাকা দেখি, তখন আমার মনে হয় আমি মাতৃভূমির কাছাকাছি।

দেং ইউ বলেন, ১৩ হাজার মানুষের এই প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ দেশে চীনা উপাদান স্থানীয় মানুষের জীবনের সর্বত্র দেখা যায়। চীনা রেস্তরাঁয় দেখা যায় যে, স্থানীয় লোকেরা ভালভাবে চপস্টিকস ব্যবহার করতে পারেন।

নাউরুতে চীনা দূতাবাসের কাউন্সেলর ওয়াং স্যু কুয়াং সত্যিই অনুভব করেন যে, নাউরুর জনগণ দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রত্যাশায় পূর্ণ। তিনি বলেন, প্রশান্ত মহাসাগর চীন ও নাউরুকে সংযুক্ত করেছে। দু’দেশের মধ্যে অনেক মিল আছে। দু’দেশ উভয়ে উন্নয়নশীল দেশ। দু’দেশের অভিন্ন উন্নয়নের দায়িত্ব আছে। পাশাপাশি দুই দেশ একে অপরের সুবিধার পরিপূরক। দু’দেশের খনিজ, মৎস্য, নতুন জ্বালানিসম্পদ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা খাতের সহযোগিতার সুপ্তশক্তি বেশি।

বন্ধুত্ব যখনই তা শুরু হবে তখনই তার উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ে উঠবে। সহযোগিতা যতই বড় বা ছোট হোক না কেন, যতক্ষণ তা আন্তরিক হবে, ততক্ষণ তা ফলপ্রসূ হবে।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn