বাংলা

পেরুতে সি চিন পিংয়ের সফর প্রসঙ্গ

CMG2024-11-15 15:01:44

নভেম্বর ১৫: স্থানীয় সময় ১৪ নভেম্বর দুপুরে, চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, বিশেষ বিমানযোগে পেরুর রাজধানী লিমায় পোঁছান। পেরুর প্রেসিডেন্টের আমন্ত্রণে তিনি এপেকের ৩১তম শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নিতে সেদেশে গেলেন।

স্থানীয় সময় ১৪ নভেম্বর দুপুর ২টা ১৩ মিনিটে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে বহনকারী বিশেষ বিমানটি, লিমা বিমানবাহিনী ঘাঁটিতে পৌঁছায়। বিশেষ বিমানটি পৌঁছালে, পেরুর মন্ত্রীপরিষদের চেয়ারম্যানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা গ্যাংওয়ের কাছে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। এ সময় জাতীয় পোশাকে পেরুর মেয়ে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে তাকে উষ্ণভাবে স্বাগত জানায়।

পেরু ছিল নয়াচীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান রাষ্ট্র। বিগত ৫৩ বছরে, চীন-পেরু সম্পর্ক স্থিরভাবে সামনে এগিয়েছে, বিশেষ করে ২০১৩ সালে ব্যাপক কৌশলগত অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠার পর থেকে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গভীরতর হয়েছে ও হচ্ছে। পেরু হল প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান দেশ, যে চীনের সাথে মুক্ত বাণিজ্যচুক্তির প্যাকেজ স্বাক্ষর করেছে। পেরু ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ উদ্যোগে যোগদানকারী প্রথম ল্যাটিন আমেরিকান দেশগুলোর অন্যতমও বটে। চীন টানা ১০ বছর ধরে পেরুর বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার এবং বৃহত্তম রপ্তানি বাজার।

পেরু পৌঁছে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বিমানবন্দরে একটি লিখিত ভাষণ দেন। তিনি তার ভাষণে, পেরুর সরকার ও জনগণকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানান। তিনি উল্লেখ করেন, চীন-পেরু সম্পর্কের উন্নয়ন দু’দেশের জনগণের জন্য বাস্তব সুবিধা বয়ে এনেছে। দু’পক্ষের যৌথ প্রচেষ্টায়, এবারের সফর চীন-পেরু সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে একটি নতুন স্তরে নিয়ে যাবে। আরও নতুন ফলাফল অর্জনের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে ব্যবহারিক সহযোগিতাকে আরও উন্নত করা হবে। এপেকের ৩১তম শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেওয়ার জন্য তিনি সাগ্রহে অপেক্ষা করছেন বলেও জানান সি চিন পিং।

প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং যখন বিমানবন্দর থেকে তার হোটেলে গাড়িতে যাচ্ছিলেন, তখন প্রবাসী চীনা, চীনা অর্থায়নে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিগণ, ছাত্র-ছাত্রীরা এবং স্থানীয় জনগণ তাকে স্বাগত জানাতে রাস্তায় সারিবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন। তাঁরা চীন ও পেরুর জাতীয় পতাকা নেড়ে তাকে স্বাগত জানান। এ সময় তাঁরা ‘প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের পেরু সফল হোক!’ ও ‘চীন-পেরু মৈত্রী দীর্ঘজীবী হোক’ লেখা ব্যানার বহন করেন। কেউ কেউ ড্রাম বাজিয়ে এবং ড্রাগন ও সিংহ নাচের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট সি-কে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।

চীনের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি সি চিন পিংয়ের দ্বিতীয় পেরু সফর। আট বছর পর তিনি আবার পেরু সফরে গেলেন। তার সফরের দিনে, তিনি পেরুর প্রেসিডেন্টের সাথে বৈঠকে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিষয়ে গভীরভাবে মতবিনিময় করেন। তিনি বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানেও যোগ দিচ্ছেন ও দেবেন।

বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো যে, এই সফরে চীন ও পেরুর শীর্ষনেতৃবৃন্দ একযোগে ভিডিও-লিঙ্কের মাধ্যমে ছানকেই বন্দরের নির্মাণকাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ আওতায় দু’দেশ যৌথভাবে এই বন্দর নির্মাণ করছে। নির্মাণকাজ শেষ হলে এটি হবে দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম স্মার্ট বন্দর। ছানকেই বন্দর প্রকল্পের প্রথম ধাপ শেষ হলে, পেরু থেকে চীনে নৌপথে যাতায়াতের সময় ২৩ দিনে কমে আসবে; ২০ শতাংশেরও বেশি লজিস্টিক খরচ বাঁচবে; এবং পেরুর জন্য বছরে ৪৫০ কোটি মার্কিন ডলার রাজস্ব সৃষ্টি হবে।

সফরের আগে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং ‘এল পেরুভিয়ান’ নামক স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলেন, দু’দেশের উচিত যৌথভাবে ছানকেই বন্দরটি ভালোভাবে নির্মাণ ও পরিচালনা করা, যাতে ‘ছানকেই থেকে শাংহাই পর্যন্ত’ সত্যিকার অর্থে সহযোগিতা এগিয়ে নিতে এটি একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে উঠতে পারে।

এবারের প্রেসিডেন্ট সি’র পেরু সফরের ওপর বেশ গুরুত্বারোপ করছে পেরু। চায়না মিডিয়া গ্রুপ

Close
Messenger Pinterest LinkedIn