বাংলা

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পথ ধরে ‘একীকরণ’ হল মূলধারা: সিএমজি’র সম্পাদকীয়

CMG2024-11-14 11:43:05

নভেম্বর ১৪: ‘এটি লাতিন আমেরিকা অঞ্চলে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের’ ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্প, এবং এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও ঘনিষ্ঠ হওয়ার প্রতীক’। ‘এটি লাতিন আমেরিকার সিঙ্গাপুর বন্দর’ হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে’। সাম্প্রতিক দিনগুলোতে, আন্তর্জাতিক মিডিয়া পেরুর বন্দরের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগ ও নির্মিত এই বন্দরটি শীঘ্রই আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হবে। সে সময়, দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এশিয়ায় রপ্তানিকৃত পণ্যের পরিবহন সময় প্রায় ৩০ শতাংশ কম হবে বলে আশা করা হচ্ছে, এবং প্রশান্ত মহাসাগীয় দুই তীরের আর্থ-বাণিজ্যিক উন্নয়নে নতুন চালিকাশক্তি যুগাবে।

এছাড়াও পেরুতে, এই সপ্তাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ তত্পরতা অনুষ্ঠিত হবে , যা এপেকের ৩১তম শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক । চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংকে এতে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। ‘ক্ষমতায়ন, অন্তর্ভুক্তি, প্রবৃদ্ধি’ - এই মূল প্রতিপাদ্য ঘিরে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ২১টি অর্থনৈতিক গোষ্ঠী, রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক মহলের ব্যক্তিরা সংশ্লিষ্ট আলোচ্য বিষয়ে আলোচনা করবেন। এর মধ্যে রয়েছে উন্মুক্ত , অবাধ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক বাণিজ্য জোরদার করা, টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে এগিয়ে নেওয়া, এবং বৈশ্বিক শক্তি রূপান্তরকাজ ত্বরান্বিত করা প্রভৃতি। এবারের শীর্ষনেতৃবৃন্দের বৈঠক থেকে উন্মুক্তকরণ ও সহযোগিতার আস্থা জোরদার করা এবং বৈশ্বিক উন্নয়নের প্রত্যাশা বাড়িয়ে দেওয়ার প্রত্যাশায় রয়েছে বিভিন্ন পক্ষ। পেরুর একজন পণ্ডিতগণ বলেন, সুরক্ষাবাদ বাড়ানোর প্রেক্ষাপটে , বাণিজ্য উন্মুক্ততার মূল্য অন্বেষণ এবং সদস্য অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর সংলাপ চালানোর জন্য সম্ভাবনা প্রদান করেছে এপেক।

দীর্ঘকাল ধরে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বৈশ্বিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার নোঙর। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের লোকসংখ্যা বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ, বিশ্বের মোট অর্থনৈতিক আয়তনের ৬০ শতাংশেরও বেশি এবং এর মোট বাণিজ্য আয়তনের প্রায় অর্ধেক, এটি বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঞ্জিন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের অনুমান অনুসারে, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার এই বছর ৪.২ শতাংশে পৌঁছবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা ২.৯ শতাংশের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার থেকে অনেক বেশি।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়ন কেন বিশ্বকে নেতৃত্ব দিতে পারে? এটি শুধুমাত্র এই অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও স্থিতিশীলতার কারণেই নয়, এপেকের অবদান থেকেও অবিচ্ছেদ্য। প্রতিষ্ঠার বিগত ৩৫ বছরে এপেক সবসময় উন্মুক্ততা, অন্তর্ভুক্তি, অভিন্ন উন্নয়নের মূল আকাঙ্খা মেনে চলে , মতভেদ সংরক্ষণের সময় অভিন্ন ভিত্তি খোঁজে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের উদারীকরণ ও সহজীকরণ, এবং অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতাকে উন্নীত করেছে, ও উন্নতি অব্যাহত রেখেছে। পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, এপেক প্রতিষ্ঠার প্রথম ৩০ বছরে এই অঞ্চলে গড় শুল্ক স্তর ১৭ থেকে ৫ শতাংশে নেমে এসেছে, মাথাপিছু আয় চারগুণেরও বেশি , বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে এর অবদান ৭০ শতাংশে পৌঁছেছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রধান অর্থনৈতিক গোষ্ঠীও এই উন্মুক্ত সহযোগিতামূলক পরিবেশ থেকে উপকৃত হয়েছে। এই কারণেই এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে কিছু দেশ ‘সংযোগ বিচ্ছিন্নকরণ এবং ভাঙা’ এবং শিবির সংঘর্ষে জড়িত হতে উৎসাহিত করে, কিন্তু খুব কম লোকই একমত।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনীতি হিসাবে, চীন সক্রিয়ভাবে এপেক সহযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছে ও করছে , এবং এই অঞ্চলে শক্তির উত্স এবং সহযোগিতার চালক হয়ে উঠেছে। বর্তমানে, চীন এপেকের ১৩টি অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে চীনের অবদান ৬৪.২ শতাংশ, সেই সঙ্গে, চীনের সাহায্যে এই অঞ্চলের ৩৭.৬ শতাংশের পণ্য বৃদ্ধি হয়, এবং ৪৪.৬ শতাংশের পরিষেবা বাণিজ্যের বৃদ্ধি হয়। এপেক শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে চীনের ধরাবাহিক প্রস্তাব ও পক্ষবাদ এতদঞ্চলের উন্নয়নের ধারার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ, যা ব্যাপক স্বীকৃতি ও সমর্থন পেয়েছে।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn