বাংলা

সি চিন পিংয়ের আসন্ন পেরু সফর প্রসঙ্গ

CMG2024-11-13 15:32:13

নভেম্বর ১৩: চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, আগামী ১৩ থেকে ১৭ নভেম্বর পর্যন্ত, পেরুর রাজধানী লিমায়, এপেকের ৩১তম শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করবেন। তিনি পেরুতে রাষ্ট্রীয় সফরও করবেন।

এটি আট বছর পর প্রেসিডেন্ট সি’র পুনরায় পেরু সফর এবং লিমায় দ্বিতীয়বারের মতো এপেক অর্থনৈতিক নেতাদের সভায় অংশগ্রহণ। প্রেসিডেন্ট সি’র পেরু সফরের গুরুত্বপূর্ণ হাইলাইটগুলো কী কী? তিনটা গুরুত্বপূর্ণ শব্দ এ প্রসঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে:

প্রথম গুরুত্বপূর্ণ শব্দ: বন্ধুত্ব

‘পেরু প্রশান্ত মহাসাগরের অপর প্রান্তে চীনের প্রতিবেশী’—২০১৬ সালের নভেম্বরে, প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং, পেরুর কংগ্রেসে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেওয়ার সময় চীন-পেরু সম্পর্ককে এভাবে বর্ণনা করেন। এটি স্পষ্টভাবে দু’দেশে ও দু’দেশের জনগণের মধ্যে গভীর বন্ধুত্বকে চিত্রিত করেছে।

চীন ও পেরুর মধ্যে বন্ধুত্বের একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে। ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোর মধ্যে সবার আগে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনকারী এবং সবার আগে চীনের সাথে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হচ্ছে পেরু। চীনের সাথে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরকারী ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম দেশও পেরু। চলতি বছর, পেরুর কংগ্রেস প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করে। প্রস্তাব, প্রতিবছর পয়লা ফেব্রুয়ারি ‘চীন-পেরু বন্ধুত্ব দিবস’ হিসেবে পালনের কথা বলা হয়েছে।

২০২৩ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এবং পেরুর প্রেসিডেন্ট বোরুয়ার্তে দুইবার বৈঠক করেছেন। এবারের সফরকালে দুই প্রেসিডেন্ট আবারও বৈঠক করবেন এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে সহযোগিতাসহ বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় করবেন। এবারের সফর চীন ও পেরুর পারস্পরিক রাজনৈতিক আস্থা জোরদার এবং দু’দেশের সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে এগিয়ে নেওয়ায় ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ শব্দ : সহযোগিতা

‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’ উত্থাপনের পর, আন্তর্জাতিক সমাজে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। ল্যাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবীয় অঞ্চলের অনেক দেশ এতে অংশ নেওয়ার দৃঢ়প্রতিজ্ঞাও প্রকাশ করে। ২০১৯ সালে, চীন ও পেরু ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর আওতায় সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতাস্মারক স্বাক্ষর করে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর আওতায় দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা ফলপ্রসূ হয় এবং অর্থনীতি, বাণিজ্য, অর্থ ও মানবিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ক্রমশ ঘনিষ্ঠ থেকে ঘনিষ্ঠতর হয়ে ওঠে।

চলতি বছরের জুনে পেরুর প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠককালে চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং বলেন, চীন টানা ১০ বছর ধরে পেরুর বৃহত্তম রফতানি-বাজার। পেরুতে চীনা শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর বিনিয়োগে বাস্তবায়িত প্রকল্পগুলো দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও জীবিকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে ও করছে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় রিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ উদীয়মান বাজার-দেশ ও ‘গ্লোবাল দক্ষিণ’-এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে, চীন ও পেরু অব্যাহতভাবে ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ’-এর যৌথ নির্মাণকাজকে এগিয়ে নিয়েছে, যা কেবল উন্নয়নকেই উত্সাহিত করবে না, বরং সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর পুনরুজ্জীবনও ত্বরান্বিত করবে।

তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ শব্দ: মূল উদ্দেশ্য

২০২৩ সালের নভেম্বরে, যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে ৩০তম এপেক অর্থনৈতিক শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠককালে প্রেসিডেন্ট সি’র কাছে পেরুর প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আপনাকে উষ্ণ আমন্ত্রণ জানাতে চাই এই আশায় যে, আপনি ২০২৪ সালের এপেক অর্থনৈতিক শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশ নেবেন এবং পেরুতে পুনরায় রাষ্ট্রীয় সফর করবেন।’

২০১৩ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং এপেক অর্থনৈতিক শীর্ষনেতৃবৃন্দের অনানুষ্ঠানিক বৈঠকে অংশগ্রহণ বা সভাপতিত্ব করে আসছেন। এবারের লিমায় প্রেসিডেন্ট সি চিন পিংয়ের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পুরোপুরিভাবে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় সহযোগিতাকে এগিয়ে নিতে চীনের ধারাবাহিক মূল উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হবে।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn