বাংলা

চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য বিশ্বকে কী দেবে?: সিএমজি

CMG2024-08-08 15:41:23

‘চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য জোরদার হচ্ছে’, ‘চীনা অর্থনীতিতে বৈদেশিক বাণিজ্যের অর্জন উল্লেখযোগ্য’...... চীনের সাম্প্রতিক বৈদেশিক বাণিজ্য সম্পর্কে অনেক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম এমন মন্তব্য করেছে। গতকাল (বুধবার) চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যের ফলাফল মুক্তি পায়: পণ্য বাণিজ্যের মোট আমদানি ও রপ্তানির মূল্য ২৪.৮৩ ট্রিলিয়ন ইউয়ান, যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬.২ শতাংশ বেড়েছে। বর্তমান ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি অনেক বেশি এবং বৈশ্বিক উত্পাদন ও সরবরাহ চেইন ব্যাহত হওয়ার প্রেক্ষাপটে এর ফল সহজ নয়। বৈদেশিক বাণিজ্য অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যারোমিটার। চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য স্থিতিশীল রয়েছে ও অব্যাহতভাবে উন্নত হচ্ছে। যা চীনা অর্থনীতির প্রাণশক্তি ও স্থিতিস্থাপকতা প্রতিফলিত হওয়ার পাশাপাশি বিশ্বের জন্য কল্যাণকর।

প্রথমটি হল, একটি বিশাল বাজার হিসেবে চীনে অসংখ্য সুযোগ রয়েছে। সম্প্রতি ইয়োনহাপ নিউস এজেন্সির প্রকাশিত একটি খবরে বলা হয়, সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির চালানোয় জুলাই মাসে চীনে দক্ষিণ কোরিয়ার রপ্তানি বেড়েছে, চীন আবারও দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হয়ে উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিউজ অ্যান্ড বিজনেস চ্যানেল (সিএনবিসি) মন্তব্য করেছে যে, জুলাই মাসে চীনের আমদানি ‘প্রত্যাশা ছাড়িয়ে গেছে’। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, চীন উচ্চমানের উন্নয়ন অর্জন করার সঙ্গে সঙ্গে বৈচিত্র্যময় ও উচ্চমানের ভোগ-প্রবণতা আরও শক্তিশালী হবে, যা আমদানির গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি হবে। একই সঙ্গে চীন আমদানি আরও সম্প্রসারণ করবে, কৃষি ও খাদ্য পণ্য বাজারে প্রবেশাধিকার বাড়াবে, যা সব দেশের জন্য চীনা বাজার ভাগাভাগি করার ক্ষেত্রে আরও বেশি সুবিধা দেবে।

দ্বিতীয়টি হল, চীন বিভিন্ন স্থানের অবস্থা অনুসারে নতুন মানের উত্পাদন শক্তি উন্নত করছে, যা বিশ্বের জন্য উন্নয়নের নতুন প্রাণশক্তি যোগাবে। এই গ্রীষ্মকালে ‘মেড ইন চায়না’ প্যারিস অলিম্পিক গেমস অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। যেমন, রঙ পরিবর্তন করা টেবিল টেনিস টেবিল, জুডো ও কুস্তি প্রকল্পে ব্যবহৃত উচ্চ প্রযুক্তির পরিবেশ বান্ধব স্পোর্টস ম্যাট। চীনা কোম্পানি বিপুল সংখ্যক উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, সম্পূর্ণ উত্পাদন ও সরবরাহ চেইন এবং শক্তিশালী উত্পাদন ক্ষমতা ব্যবহার করে বিশ্বের জন্য উচ্চমানের পণ্য ও পরিষেবা প্রদান করেছে।

তৃতীয়টি হল, দীর্ঘমেয়াদী দৃষ্টিকোণ থেকে, চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য বৈশ্বিক শিল্প ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করেছে। চীনা কমিউনিস্ট পার্টির অষ্টাদশ জাতীয় কংগ্রেসের পর থেকে চীনের বৈদেশিক বাণিজ্য গড়ে বার্ষিক ১.৬ ট্রিলিয়ন ইউয়ান বৃদ্ধি পায়, যা একটি মাঝারি আকারের দেশের মোট বার্ষিক আমদানি ও রপ্তানির পরিমাণের সমান। বিশ্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে যা খুব মূল্যবান ও প্রয়োজনীয়। গত জুলাই শেষ পর্যন্ত চীন-ইউরোপ এক্সপ্রেস ট্রেন ১০ হাজারেরও বেশিবার যাতায়াত করেছে। যা বৈশ্বিক উত্পাদন ও সরবরাহ চেইনের স্থিতিশীলতা নিশ্চিতকারী একটি ‘স্টিল ক্যামেল ফ্লিট’ হয়ে উঠেছে।

এখন চীন সার্বিক ও গভীরতর সংস্কার করছে, বাণিজ্যিক নীতি জোরদার করা, অর্থ, কর ও শিল্প নীতির সমন্বয় করা, শুল্ক ছাড়পত্র, কর ও বৈদেশিক মুদ্রার তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা উদ্ভাবন করা, নতুন ব্যবসায়িক ফর্ম ও মডেল উন্নয়নের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা ইত্যাদি পদক্ষেপ নিচ্ছে। এসব কাজ চীনের বৈদেশিক বাণিজ্যে শক্তিশালী চালিকাশক্তি যোগাবে।

অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থার ধারণা অনুযায়ী, চলতি বছর বিশ্ব বাণিজ্য ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে, তবে ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা, বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি, দেশগুলোর মধ্যে শিল্প নীতির প্রতিযোগিতা তীব্রতর করা। এসব বৈদেশিক বাণিজ্যের ওপর বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এই পরিস্থিতিতে চীন অব্যাহতভাবে উন্মুক্তকরণ প্রসারিত করবে, অর্থনীতি অব্যাহত পুনরুদ্ধারের ভিত্তিতে উচ্চমানের উন্নয়ন ও স্থিতিস্থাপক বৈদেশিক বাণিজ্যের মাধ্যমে বিশ্বকে আরও বেশি সুযোগ ও কল্যাণ দেবে।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn