বাংলা

চীন ও আরব অভিন্ন স্বার্থ কমিউনিটি গড়ে তোলার কাজ গতি সঞ্চার হবে: সি এমজি’র সম্পাদকীয়

CMG2024-05-31 11:32:06

মে ৩১: গতকাল (বৃহস্পতিবার) চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং চীন ও আরব ফোরামের দশম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেছেন যে, ‘২০২৬ সালে দ্বিতীয় চীন-আরব শীর্ষসম্মেলন আয়োজন করবে চীন, এটি চীন-আরব সম্পর্কে একটি মাইলফলক হবে বলে আমি বিশ্বাস করি’। এটিও এবারের সম্মেলনে এক সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল। চীনের প্রেসিডেন্ট সি আরও চীন-আরব সম্পর্কের পরবর্তী উন্নয়নের দিকনির্দেশনা এবং ‘পাঁচটা সহযোগিতামূলক পরিস্থিতি’ গড়ে তোলার পরিকল্পনা উত্থাপন করেছেন, যাতে চীন ও আরব অভিন্ন স্বার্থ কমিউনিটি গড়ে তোলার কাজ গতি সঞ্চারকে এগিয়ে নিয়ে যায়। এদিন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রেসিডেন্ট সামাজিক যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মে লিখিত এক প্রবন্ধে বলা হয়েছে যে, ‘ আরব দেশগুলো ও চীনের সম্পর্কে ঐতিহাসিক তাত্পর্য রয়েছে’।

এ বছর চীন ও আরব সহযোগিতামূলক ফোরাম প্রতিষ্ঠার ২০তম বার্ষিকী। বিগত ২০ বছরে চীন ও আরব সম্পর্ক আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির পরিবর্তনশীল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে বলে দক্ষিণ দক্ষিণ সহযোগিতার দৃষ্টান্তে পরিণত হয়েছে। বিশেষ করে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে প্রথম চীন-আরব শীর্ষসম্মেলনে ‘নতুন সময়পর্বে সম্মুখীন চীন ও আরব অভিন্ন স্বার্থ কমিউনিটি গড়ে তোলায় সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানো’ প্রস্তাব উত্থাপনের পর, চীন ও আরব সহযোগিতা অধিক থেকে অধিকতর ফলপ্রসূ হয়েছে। বর্তমান ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড’ যৌথ নির্মাণকাজ ২২টি আরব দেশে সম্পূর্ণভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দু’পক্ষের ২০০ কোটি জনগণ উপকৃত হন। চীন ও আরবের বাস্তব সহযোগিতায় ‘আটটি যৌথ কার্যক্রমে’ গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক ফলাফলও অর্জিত হয়েছে।

বর্তমান বিশ্ব এক অশান্ত ও সংস্কারপ্রাপ্ত সময়পর্বে দাঁড়িয়েছে। চীন ও আরব উভয়েই প্রতিপক্ষের জাতির পুনরুদ্ধারকাজ বাস্তবায়ন এবং দেশের প্রতিষ্ঠাকাজ দ্রুততর করার সম্মুখীন হচ্ছে, তাই সহযোগিতা জোরদার করার দৃঢ় আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে। গতবছর সৌদি আরব ও ইরানের ঐতিহাসিক বোঝাপড়া এবং বেইজিংয়ে হামাস ও ফাতাহের পরামর্শ থেকে আরব উপলব্ধি করেছে যে, মধ্য-প্রাচ্য অঞ্চলের শান্তি ও উন্নয়নে সহায়তা দিতে সদিচ্ছা চীন। এই পটভূমিতে প্রথম চীন ও আরব শীর্ষসম্মেলনের পর ফোরামে আয়োজিত প্রথম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হিসেবে এবারের সম্মেলনের এমন অতীতকে ভবিষ্যতের সাথে সংযুক্ত করার তাত্পর্য স্বতঃস্ফূর্ত।

বাইরের মিডিয়া খেয়ার করেছে যে, বাহরাইন, মিশর, তিউনিসিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের চার আরব রাষ্ট্রপ্রধান যৌথভাবে বৈঠকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন। ‘আরব সাপ্তাহিক মন্তব্য’-এর সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে যে, চার আরব রাষ্ট্রপ্রধানের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে চীন ও আরব সহযোগিতায় রাষ্ট্রপ্রধানদের নেতৃত্বের গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য প্রতিফলিত , এবং চীন-আরব সম্পর্ককে নতুন স্তরে ঠেলে দিতে দু’পক্ষের দৃঢ়প্রতিজ্ঞা ফুটে উঠেছে। চীন ও আরব ‘বেইজিং ঘোষণাপত্র’ এবং ‘চীন-আরব সহযোগিতা ফোরামের ২০২৪-২০২৬ সালের কার্যক্রমের নির্বাহী পরিকল্পনা’সহ দলিলপত্র স্বাক্ষর করেছে, এগুলো সবই এই দৃঢ়প্রতিজ্ঞার সুপ্রতিফলন।

একটি নতুন সূচনায় দাঁড়িয়ে, চীন ও আরব অভিন্ন স্বার্থ কমিউনিটি গড়ে তোলার কাজকে কি কি দিকে চেষ্টা করতে হবে? চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং জোর দিয়ে বলেন যে, চীন ও আরবকে ‘ বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার মানদণ্ড’ , ‘ উচ্চ গুণগত মানের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের যৌথ নির্মাণকাজের দৃষ্টান্ত’ , ‘বিভিন্ন সভ্যতার সহাবস্থানের দৃষ্টান্ত ’এবং ‘ বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনায় সঠিক পদ্ধতি অন্বেষণের দৃষ্টান্ত’ হওয়ায় কাজ করতে হবে। এই চারটি লক্ষ্যবস্তু চীন ও আরবের সহযোগিতা উন্নয়নের বাস্তব চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়েছে। চীন ও আরব অভিন্ন স্বার্থ কমিউনিটি গড়ে তোলার কাজে দিকনির্দেশনাও দিয়েছে এটি।

লক্ষ্যবস্তু থাকলে এর নির্দিষ্টকাজকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে? আরবের সঙ্গে ‘আটটি যৌথ কার্যক্রমের’ ভিত্তিতে যৌথভাবে ‘পাঁচটি সহযোগিতামূলক পরিস্থিতি’ গড়ে তোলার প্রস্তাব করেছে চীন। এতে অব্যাহতভাবে প্রযুক্তি, অর্থ, পণ্য এবং ব্যক্তিগত প্রবাহের ক্ষেত্র প্রসারিত হবে এবং ব্যাপকভাবে চীন ও আরব দু’পক্ষের জনগণের উপকৃত হবেন।

Close
Messenger Pinterest LinkedIn